টাকা আত্মসাৎ: ছেলেসহ বাবুল চিশতির ১২, স্ত্রীর ৫ বছরের কারাদণ্ড
৩০ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৩১
ঢাকা: ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মানিলন্ডারিং আইনের মামলায় ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী ও তার ছেলে রাশেদুল হক চিশতীকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
সোমবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। একই মামলায় মাহবুবুল হক চিশতীর স্ত্রী রোজী চিশতি ও ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মাসুদুর রহমান খানকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী বেলাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
বাবুল চিশতি, তার স্ত্রী ও ছেলেকে ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকার দ্বিগুণ ৩১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৯ হাজার ২৪০ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অনাদায়ে বাবুল চিশতি ও রাশেদুল চিশতিকে দুই বছর ও রোজি চিশতিকে এক বছরের সশ্রম কারাভোগ করতে হবে।
রায়ে তাদের সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মাসুদুর রহমান খানকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাকে আরও এক বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তারও সব সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রায় ঘোষণার আগে বাবুল চিশতীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রাশেদুল হক জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন। তবে রোজি চিশতি ও মাসুদুর রহমান এদিন আদালতে হাজির হননি। জামিন বাতিল করে তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, ফারমার্স ব্যাংক লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ব্যাংকের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে মাহবুবুল হক চিশতী গুলশান শাখায় সঞ্চয়ী হিসাব খুলে বিপুল পরিমাণ অর্থ নগদে ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে জমা ও উত্তোলন করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে তার স্ত্রী, ছেলে, মেয়েদের ও তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন শাখার মোট ২৫টি হিসাবে বেশিরভাগ অর্থ নগদ ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে মোট ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেন।
হিসাবগুলোতে গ্রাহকদের হিসাব থেকে পাঠানো অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও লেয়ারিং এর মাধ্যমে গ্রহণ করে এবং নিজেদের নামে ক্রয়কৃত ব্যাংকের শেয়ারের মূল্য পরিশোধের মাধ্যমে সন্দেহজনক লেনদেন করে মানিল্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন।
২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল প্রায় ১৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গুলশান থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০১৯ সালের ৩০ অক্টোবর বাবুল চিশতীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
গত ৫ অক্টোবর দুদক এবং আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন। মামলায় আদালত ১৫ জনের সাক্ষ্য নেন।
সারাবাংলা/এআই/এমও