মিরপুরে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ, সংঘর্ষ-ভাঙচুর
৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১২:৫৬ | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১৪:১২
ঢাকা: গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে পোশাক শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে মিরপুরে রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন পোশাক শ্রমিকরা। পুলিশের গুলিতে মিরপুরে আরও দুই পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন— এমন ‘খবর’ ছড়িয়ে পড়লে তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এ সময় ভাঙচুর শুরু করেন তারা।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ১০টার পর থেকেই পোশাক শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসেন। দুপুর ১২টার দিকে মিরপুর ১০ থেকে ১১ নম্বর পর্যন্ত সড়কে কয়েক হাজার শ্রমিক অবস্থান করছিলেন। এপোলো ফ্যাশন, এপোলো বিডি, কনকর্ড, ডেকো এপারেলস, টিউলিপ, আজমত ফ্যাশনসহ নামের কয়েকটি গার্মেন্টসের শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সোয়াটা ১২টার দিকে হীড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ থেকে ভাঙচুর চালানো হয়। বিএনপির অবরোধ কর্মসূচির পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা সড়কে অবস্থান নিয়েছিলেন। শ্রমিকদের বিক্ষোভ থেকে তাদের চেয়ারগুলোও ভাঙচুর করা হয়। এ সময় কয়েকজন আওয়ামী লীগহ নেতা লাঞ্ছিতও হয়েছেন। বাসও ভাঙচুর করেছেন শ্রমিকরা।

বিক্ষুব্ধ পোশাক শ্রমিকরা বাসও ভাঙচুর করেন। ছবি: সারাবাংলা
পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন। পোশাক শ্রমিকদের অবস্থানের কারণে মিরপুর-১১ মেট্রোরেল স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গুজব থেকে বিরত থাকতে র্যাবের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১৫টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া দুটি মার্কেট, একটি ব্যাংকের শাখা ও দুটি পোশাক কারখানায় ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার জশীম মোল্লা বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিকদের সঙ্গে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ কাজ করছে।

ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ ও র্যাব। ছবি: সারাবাংলা
পোশাক শ্রমিকদের দাবি, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেছে। মালিক পক্ষ আওয়ামী লীগের লোকদের ভাড়া করে এনেছে। মিরপুরে পুলিশের গুলিতে দুই-তিনজন পোশাক শ্রমিক নিহত হয়েছেন বলেও খবর পেয়েছেন তারা।
এর আগে পাঁচ দফা দাবিতে গতকাল সোমবার (৩০ অক্টোবর) কর্মসূচি ছিল পোশাক শ্রমিকদের। রাজধানীর মিরপুরসহ সাভার ও গাজীপুরেও পোশাক শ্রমিকরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় গাজীপুরে এক শ্রমিক নিহত হন। এর প্রতিবাদে আজ তারা ফের রাজপথে নামেন।
শ্রমিকরা যে পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে সেগুলো হলো— বেসিক মজুরি ৬৫ শতাংশ রেখে ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে; মজুরি ঘোষণা হওয়ার প্রথম বছর থেকেই প্রতি বছর মোট বেতনের ১০ শতাংশ হারে মজুরি বাড়াতে হবে; সাতটি গ্রেডের বদলে পাঁচটি গ্রেড নির্ধারণ করতে হবে, আনুপাতিক হারে সব গ্রেডে সমান হারে মজুরি বাড়াতে হবে এবং পিস রেট/সোয়েটার শ্রমিকদের বেসিক ৩ নম্বর গ্রেডে নির্ধারণ করতে হবে; এ বছরের নভেম্বরের মধ্যে নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণা করে ডিসেম্বর মাস থেকে সব পোশাক কারখানায় বাস্তবায়ন করতে হবে; এবং কারখানাভিত্তিক রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
সারাবাংলা/রমু/ইএইচটি/ইউজে/টিআর