‘খুনিদের সঙ্গে’ সংলাপ নাকচ করলেন প্রধানমন্ত্রী
৩১ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:১৮
ঢাকা: বিএনপিকে সন্ত্রাসী ও খুনিদের দল আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা পুলিশ খুন করেছে, বাসে আগুন দিয়েছে তাদের সঙ্গে কীসের আলাপ, কীসের বৈঠক? বিএনপির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি জনগণও চায় না।’
মঙ্গলবার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা আমাদের দেশ, রক্ত দিয়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। এখানে তো খুনিদের ডায়ালগ করার প্রশ্নই আসে না।’
সাংবাদিকদের প্রতি বিএনপি-জামায়াতের হামলার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘২৮ তারিখে ৪০/৪৫ জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করা হলো। রিপোর্টারস উইথআউট বর্ডার, এদের কাছ থেকে আপনারা কী কোনো সিমপ্যাথি পেয়েছেন? তাদের কাছ থেকে কোনো সহায়তা পেয়েছেন। আজকে মানবাধিকার সংস্থাগুলো চুপ কেন? তাদের কাছ থেকে প্রতিবাদ শুনি না কেন, তাদের কাছ থেকে কথা শুনি না কেন? আপনারা সেটি জিজ্ঞাসা করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিএনপি পুলিশ মারল। বাসে আগুন দিলো। যারা মানবাধিকারের কথা বলেন, আজকে তাদের সেই ভাণ্ডার বন্ধ কেন? তারা চুপ কেন?’
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েনের আমন্ত্রণে গত ২৪ অক্টোবর ব্রাসেলসে যান শেখ হাসিনা। সফরকালে সাইডলাইনে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। সফর শেষে ২৭ অক্টোবর ঢাকায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।
গত ২৫ অক্টোবর সকালে তিনি ইসির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। পরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ইউরোপীয় কমিশন ও ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর একটি অনুদান চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইসির মধ্যে একটি ১২ মিলিয়ন ইউরোর অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এ ছাড়া এই সফরে বাংলাদেশ সরকার এবং ইসি বাংলাদেশের সামাজিক খাতে ৭০ মিলিয়ন ইউরোর পাঁচটি ভিন্ন অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
শেখ হাসিনা একই দিন ২৫ অক্টোবর গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন এবং বক্তৃতা করেন। বিকালে ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ার্নার হোয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ইউরোপীয় কমিশনের কমিশনার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট জেনেজ লেনারসিক ও কমিশনার ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ জুটা উরপিলাইনেনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সম্মানে উরসুলা ভন ডার লেয়েনের দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেন।
২৬ অক্টোবর সকালে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রুর সঙ্গে ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গে দুটি পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি। একই দিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের সমাপনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেন। শেখ হাসিনা পরে বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনায় যোগ দেন।
সারাবাংলা/একে