খুব জরুরি না হলে বলপ্রয়োগ নয়— পুলিশকে জাতিসংঘ
১ নভেম্বর ২০২৩ ০০:৫৫
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে গত কয়েকদিনের সহিংসতায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় ওএইচসিএইচআর। এসব কর্মসূচির জের ধরে সংঘাতের সময় পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দফতরটি বলছে, খুব জরুরি না হলে যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এভাবে বলপ্রয়োগ না করে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ওএইচসিএইচআরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে। বিবৃতিতে সরকারকে সংযত হওয়ার পাশাপাশি সহিংসতা উসকে দেওয়ার মতো যেকোনো কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে চলমান বিক্ষোভ কর্মসূচির মধ্যে ধারাবাহিক সহিংসতার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। সামনেই দেশটিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন রয়েছে। এ অবস্থায় সব রাজনৈতিক পক্ষকে আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই— এ ধরনের সহিংসতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সহিংসতা উসকে দেওয়ার মতো বক্তব্য-বিবৃতি ও তৎপরতা থেকেও সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিরকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপির গত শনিবারের (২৮ অক্টোবর) সমাবেশের পর থেকে এখন পর্যন্ত দুজন পুলিশ সদস্য ও বিরোধী দলের ছয় নেতাকর্মীসহ সারাদেশে ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছে ওএইচসিএইচআর। সংস্থাটি বলছে, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ২৮ অক্টোবর প্রধান বিচারপতিসহ অন্যান্য বিচারকদের বাসভবনে হামলার অভিযোগ রয়েছে। সেদিন প্রায় ৩০ জন সাংবাদিকের ওপর হামলা করা হয়। এসব হামলায় বিক্ষোভকারীরা ছাড়াও মোটরসাইকেলে আসা মুখোশ পরা একদল ব্যক্তি জড়িদ ছিলেন, যারা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওএইচসিএইচআর বলছে, রড, লাঠি, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করেছে বলে খবর রয়েছে। দেশজুড়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি এবং পরিবারের সদস্যসহ তাদের শত শত নেতাকর্মীকে তারা গ্রেপ্তার করেছে। আমরা পুলিশ বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাই— কেবল জরুরি প্রয়োজন হলেই যেন বলপ্রয়োগ করা হয়। আর বল প্রয়োগ করা হলেও সেটি হতে হবে আইন অনুযায়ী এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার এবং দলটির জ্যেষ্ঠ অনেক নেতার আত্মগোপনে চলে যাওয়ার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন দফতরের এই বিবৃতিতে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দফতরটি বলছে, আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, সংকটময় এই সময়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমন করতে তারা যেন সর্বোচ্চ সংযত থাকে। পাশাপাশি নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের সময় ও নির্বাচন পরবর্তী সময়ে সারাদেশে সবার জন্য মানবাধিকার পরিপূর্ণভাবে সমুন্নত রাখা নিশ্চিত করতে তারা যেন পদক্ষেপ নেয়।
সারাবাংলা/টিআর