Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শ্রমিকদের মজুরি সাড়ে ১০ হাজারের বেশি দিতে চান মালিকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৩৪

ঢাকা: পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডে ন্যূনতম ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দেয় মালিক পক্ষের প্রতিনিধি। সেই অবস্থান থেকে সরে শ্রমিকদের মজুরি আরও বাড়াতে চান তারা। তবে কত বাড়াতে চান তা স্পষ্ট করেননি। ফলে শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে বোর্ডের পঞ্চম বৈঠকেও নূন্যতম মজুরির নির্ধারণের বিষয়টি সুরাহা হয়নি।

বুধবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর তোপখানা রোডে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সভাকক্ষে বোর্ডের পঞ্চম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে বোর্ড প্রতিনিধিরা এসব তথ্য জানান।

বোর্ড চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, ‘মজুরি বোর্ডে শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে শ্রমিক পক্ষের দাবি ছিল ৭টি গ্রেড থেকে কমিয়ে ৫টি গ্রেড নির্ধারণ করার। সেখানে মালিকপক্ষ সম্মত হয়েছে। সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ৭টি গ্রেডের স্থলে ৫টি গ্রেড করব। আরেকটি বিষয় হলো- শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে মালিক পক্ষ। তাদের প্রতিনিধি আগামী সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব লিখিতভাবে জামা দেবেন। প্রস্তাবনা দেখে শ্রমিক পক্ষ তখন সিদ্ধান্ত নেবেন।’

তিনি বলেন, ‘এখন শ্রমিক আন্দোলন হচ্ছে। সে বিষয়টি মাথায় রেখে চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে (আগামী সপ্তাহ) আরও একটি সভা আহ্বান করব। এজন্য শ্রমিক ভাই-বোনদের বলব, তারা যাতে কারও উসকানিতে কান দিয়ে কলকারখানায় ফিরে যায় এবং কাজ করেন। কারণ শিল্পটা রক্ষাও তাদের দায়িত্ব। আপনাদের (শ্রমিকদের) রুজি-রুটি এখান থেকে হয়। তাই বিভ্রান্ত না হয়ে শান্তভাবে কাজ করার অনুরোধ করছি।’

বোর্ড চেয়ারম্যান জানান, নভেম্বরের মধ্যেই মজুরি চূড়ান্ত হবে। আর আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে কার্যকর হবে। জানুয়ারি মাস থেকে শ্রমিকরা নতুন কাঠামোতে বেতন-ভাতা হাতে পাবেন।

মালিকপক্ষের প্রতিনিধি বিজিএমএইর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে প্রস্তাব দিয়েছিলাম মজুরি তার চেয়ে বাড়ানো হবে। আমি বলেছি, হ্যাঁ আমরা অবশ্যই বাড়াব। সে বিষয়ে আমরা রাজি হয়েছি। কতটুকু বাড়াব, সেটা আগামী সভায় লিখিত প্রস্তাবনা আকারে জমা দেব। তখন তারা সেটি জানতে পারবে। এতটুকু বলতে পারি আগের প্রস্তাব থেকে অনেকদূর বাড়াবে। এরপরেও সরকার রয়েছে। আমরা যাই প্রস্তাব করি, বোর্ডের সবাই এক হয়েও যদি কোনো প্রস্তাব দেই, সেখানেও সরকার চাইলে বাড়াতে বা কমাতে পারে। সেই সুযোগ সরকারের কাছে আছে।’

শ্রমিক পক্ষে বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘আমাদের ৫টি গ্রেড প্রস্তাব ছিল, মালিকপক্ষ তাতে সম্মত হয়েছে। আমরা আমাদের দেওয়া প্রস্তাব ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার ৩৯৩ টাকায় এখনো অনড় আছি। তবে মালিকপক্ষ প্রায় সাড়ে ১০ হাজার টাকার যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তা থেকে সরে আরও বাড়ানোর পক্ষে অবস্থান জানিয়েছেন।’

শ্রমিকপক্ষ ২০ হাজার টাকার দাবি করেছে বা অন্যান্য শ্রমিক সংগঠন ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকার দাবি করছে— এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট উত্তর দেননি। শ্রমিকরা তাদের দেওয়া প্রস্তাব থেকে সরে আসবে কি না তাও স্পষ্ট করেননি সিরাজুল ইসলাম রনি।

তবে শ্রমিকদের উদ্দেশে সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘শ্রমিকদের ন্যায্যতা নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে যদি আমরা নৈরাজ্যের দিকে চলে যাই, তাহলে এই দরকষাকষি খারাপের দিকে চলে যাবে। প্রতিটি জাগায় আমরা সমস্যার দিকে যাচ্ছি। আমাদের শ্রমিক ভাই বোনরা আক্রান্ত হচ্ছেন এবং একটি গোষ্ঠী উস্কানি দিচ্ছে, শ্রমিকদের বিভ্রান্ত করছেন। তাই শ্রমিকদের বলব, আপনারা কাজ ফিরে যান। আগামী সভায় শ্রমিকদের জন্য একটি ভালো মজুরি আসবে। শ্রমিকদের মজুরি আরও বাড়বে।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/এনএস

পোশাক শ্রমিক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর