চবিতে নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত ২ জনের শাস্তির সুপারিশ
১ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকার ঘটনায় দুই কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শাস্তির সুপারিশ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদ সিন্ডিকেট। প্রভাষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় এই নিয়োগ বাণিজ্যের কথা জানা যায়।
এ ঘটনায় শাস্তির জন্য সুপারিশপ্রাপ্তরা হলেন- উপাচার্যের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) খালেদ মিসবাহুল মোকর রবীন ও হিসাব শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেন। এ ছাড়া ভিন্ন অপরাধে উপাচার্যের কার্যালয় থেকে বদলির আদেশ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে সহকারী রেজিস্ট্রার মো. সাহাবুদ্দিনকে।
সোম ও মঙ্গলবার (৩০ ও ৩১ অক্টোবর) দু’দিন ধরে চলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪৫তম সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।
সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘সিন্ডিকেট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে রবীনকে উপাচার্যের দফতর থেকে বদলি করে তার বিদ্যমান গ্রেড থেকে নিচের গ্রেডে পদাবনতির সুপারিশ করেছে। আহমদ হোসেনকে চাকরিচ্যুতির সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে একটি মামলা দায়েরের সুপারিশ করা হয়েছে।’
অন্যদিকে উপাচার্য দফতরের শিক্ষক নিয়োগসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ফাইল হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনসহ তৎকালীন কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায় খুঁজে পেয়েছে এ সংক্রান্ত তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফাইল হারানোর দায়ে মোহাম্মদ সাহাবউদ্দিনসহ উপাচার্য দফতরে কর্মরত তৎকালীন অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনোভাবে দায় এড়াতে পারেন না। এছাড়া এ সংক্রান্ত সব তথ্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন তদন্ত কমিটির কাছে পুরোপুরি গোপন করেছেন। যা অবাধ্যতা ও অসহযোগিতা।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি সুপারিশ না করলেও সিন্ডিকেট থেকে সর্বসম্মতিক্রমে মো. সাহাবুদ্দিনকে সতর্ক করাসহ উপাচার্য দফতর থেকে বলদির সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সিন্ডিকেট সদস্য মোহাম্মদ আলী।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে প্রভাষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত পাঁচটি ফোনালাপ ফাঁস হয়। ফাঁস হওয়া এ পাঁচটি ফোনালাপ ছিল উপাচার্য ড. শিরীণ আখতারের ব্যক্তিগত সাবেক সহকারী খালেদ মিছবাহুল মুকাররবীন ও হিসাব নিয়ামক দফতরের কর্মচারী আহমদ হোসেনের সঙ্গে দুজন নিয়োগপ্রার্থীর। এর মধ্যে একটি ফোনালাপে প্রভাষক পদের এক প্রার্থীর সঙ্গে উপাচার্যের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারীকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলতে শোনা যায়।
অপর একটি ফোনালাপে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর শীর্ষ ব্যক্তিদের ‘ম্যানেজ’ করতেই উপাচার্যের টাকার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন কর্মচারী আহমদ হোসেন। এ ঘটনা একইবছর হাটহাজারী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া সিন্ডিকেট সভায় এই নিয়োগ বোর্ডের সুপারিশ বাতিল ও জড়িতদের শনাক্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে পিএস রবীন ও আহমেদ হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
সারাবাংলা/এমএ/পিটিএম