আরও অবরোধ আসছে!
২ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৩৫
ঢাকা: দেশব্যাপী চলমান রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বিএনপি। শুক্রবার ও শনিবার বাদ দিয়ে আগামী রোববার থেকে টানা অবরোধের কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
বিএনপি ডাকা টানা তিন দিনের অবরোধ শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায়। এরপর দলের পক্ষ থেকে রুহুল কবির রিজভী পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারেন।
দলীয় সূত্রমতে, চলমান অবরোধ কর্মসূচিতে জনগণের ব্যাপক সাড়া দেখছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। তাদের মতে, জনগণের সমর্থনে নজিরবিহীন অবরোধ হচ্ছে সারাদেশে। সরকারের শত প্রচেষ্টা সত্ত্বেও সড়কপথে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলছে না। ঢাকার ভেতরেও সাধারণ মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হচ্ছে না। এ বিষয়টিই অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনুপ্রাণিত করছে তাদের। তাই আগামী সপ্তাহজুড়ে ফের দেশব্যাপী অবরোধের কর্মসূচি পালন করবে তারা। পরিস্থিতি বুঝে পরের সপ্তাহেও অবরোধ চলতে পারে।
আরও পড়ুন- লাগাতার কর্মসূচি আসছে
এদিকে দ্বিতীয় ধাপের অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। এবারের কর্মসূচিতে কারও গা ছাড়া ভাব দেখা গেলেই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশের ধরপাকড় এড়াতে ‘সেফ জোনে’ থেকে কর্মসূচি পালনের করতে হবে। শোডাউন ও ফটোসেশন বাদ দিয়ে কর্মসূচি পালনে সবাইকে সিরিয়াস হতে বলা হয়েছে।
দলীয় সূত্রমতে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এবং যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন ও সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতারের পর দলের হাইকমান্ড সরাসরি আন্দোলনের সার্বিক বিষয় মনিটরিং করছে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ নেতারা গ্রেফতার হলেও চলমান আন্দোলনে কোনো ছন্দপতন হবে না। আপাতত ‘সেফ জোনে’ থেকে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করে যাবেন রুহুল কবির রিজভী।
আরও পড়ুন- ৪ দিনে নিহত ৮, আহত ৩৩৫০ নেতা-কর্মী: বিএনপি
দলীয় সূত্র আরও বলছে, গ্রেফতার আতঙ্কে থাকা দলের শীর্ষ নেতারা প্রকাশ্যে আসতে না পারলেও ভেতরে ভেতরে তৎপর রয়েছেন। কূটনৈতিক তৎপরতাও অব্যাহত রেখেছেন তারা। বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার ঘটনায় সরকার ও পুলিশকে দায়ী করে সোমবার (৩০ অক্টোবর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ঢাকাস্থ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে চিঠি দিয়েছেন তারা। প্রতি মুহূর্তের আপডেট দূতাবাস, হাইকমিশন, বিদেশি মিশন ও সংস্থার ঢাকাস্থ অফিসগুলোতে সরবরা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা যেসব প্রতিক্রিয়া দিয়েছে, সেগুলোকে আন্দোলনের পথে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বিএনপি।
পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি এখন গুরুতর অসুস্থ। কথা বলার মতো অবস্থা নেই।’
আরও পড়ুন- সাড়ে ৮ বছর পর অবরোধ ডেকে আত্মগোপনে বিএনপি
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহম্মদ শাহজাহান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে ফোন বন্ধ রয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য নজরুল ইসলাম খানের ফোন খোলা থাকলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। তবে গুলশান কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলমান অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে বিএনপি। শুক্র ও শনিবার বিরতি দিয়ে রোববার থেকে বৃহস্পতিবার অবরোধ চালিয়ে যাবে দলটি।
জানতে চাইলে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা সমমনা ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির মহাসচিব শাহদাত হোসেন সেলিম সরাবাংলাকে বলেন, ‘অবরোধ কন্টিনিউ করার সম্ভাবনা শতভাগ।’
সারাবাংলা/এজেড/টিআর
অবরোধ কর্মসূচি বিএনপি বিএনপির অবরোধ লাগাতার কর্মসূচি সর্বাত্মক অবরোধ