Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:০৭

ঢাকা: বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দায়িত্বপালনকালে সাংবাদিকদের যারা হামলা করেছে; যারা পুলিশের ওপর আক্রমণ করে তাদের হত্যা করেছে; তাদেরকে শাস্তি পেতেই হবে।

বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম আমরাও করেছি। কিন্তু বাংলাদেশে আন্দোলনের নামে যেরকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হয় এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। সেই ২৮ অক্টোবর তারা বিএনপি সমাবেশ করতে চেয়েছে। আরও অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দল। আমরা কিন্তু বাধা দেইনি। তারা কথা দিয়েছিল শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবে। কিন্তু দেখা গেল শান্তিপূর্ণ না। তারা সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করে। সাংবাদিকদের মাটিতে ফেলে পেটায়। আমার মনে হয় বাংলাদেশে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা আর দেখা যায়নি। এটা কেন করা হল? এই প্রশ্ন তো বিএনপিকে দিতেই হবে।

তিনি বলেন, তারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে। এর আগেও আমরা দেখেছি পুলিশকে মাটিতে ফেলে শুধু পেটানো না বেহুশ হয়ে গেছে তারপরও তাকে মারা হচ্ছে এবং তাকে কোপানো হচ্ছে। ঢিল মারা হচ্ছে।

এসময় প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলে বলেন, তারা আসছে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে, এতো ইট, পাথর কোথায় পেল? আর এই যে কোপাল, এসব কোথায় পেল? তার মানে তাদের উদ্দেশ্যটাই ছিল আগাগোড়া খুবই খারাপ। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করবে, জ্বালাও-পোড়াও করবে এটাই তাদের চরিত্র।

সাংবাদিকদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে এই রকম অগ্নিসন্ত্রাস তারা করেছিল নির্বাচন ঠেকানোর জন্য। কিন্তু সেই নির্বাচন ঠেকাতে পারেনি। নিজেরা অংশগ্রহণ করেনি কিন্তু তারা হত্যা, গুম, খুন করেছিল। আসলে এগুলো তারা খুব ভাল পারে।

রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে হামলার ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে সরকার প্রধান বলেন, এতো অমানবিক আচরণ এটা একটা রাজনৈতিক দলের হয় না। তবে তাদের অভ্যাসটাই এমন। আপনাদের তো মনে থাকা উচিত প্রেস ক্লাবের মধ্যে পুলিশ ঢুকিয়ে পিটিয়েছিল। বিএনপি আমলের সেই কথা আমার মনে হয় আপনারা ভুলে যাননি। আসলে এটাই ওদের চরিত্র। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই ওদের চরিত্র।

শেখ হাসিনা বলেন, সাংবাদিক ও পুলিশের ওপরে তারা যেভাবে আক্রমণ করেছে আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। আমাদের কোনো কোনো পত্রিকা দেখলাম এটাকে আবার একটু কভার দেওয়ারও চেষ্টা করেছে। তাদেরকে আমি ধিক্কার জানাই।

ঢাকা দক্ষিণ যুবদলের একজন নেতা ‘প্রেস’ লেখা ভেস্ট পরে হামলায় জড়িত থাকার প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তার মানে কি তারা ক্যামোফ্লেস করে এই আক্রমণটা চালিয়ে ভাবছে ওখান থেকে রেহাই পাবে। কিন্তু এখন সেটা সম্ভব না। কারণ এখন ডিজিটাল যুগ। চেহারা পর্যন্ত দেখা যায়। যারা এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা ধরা পড়ে গেছে। কাজেই যারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে, পুলিশকে হত্যা করেছে তাদের শাস্তি পেতেই হবে।

তিনি বলেন, আমার মনে হয় ফিলিস্তিনের হাসপাতালে ইসরাইল ভয়াবহ বোমা হামলা চালিয়ে যেভাবে নারী শিশু হত্যা করেছে। এরা ঠিক সেইভাবে আমাদের এখানে হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। জানি না শিক্ষাটা কি ইসরাইলের কাজ থেকে পেয়েছে কিনা? সেটাও আমাদের জানা দরকার।

বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও তাদের দোসররা যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডগুলো করেছে তাদের আসল চেহারা বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরা উচিত।

সুশীল সমাজের কড়া সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু কিছু সুশিল আছে সামান্য কিছু ঘটলেই বড় বড় বিবৃতি দেয়। তারা কোথায় এখন? তাদের তো এখন আমরা দেখি না। তাদের তো কথা শুনি না। তারা হঠাৎ এরকম কোথায় চলে গেল? এই যে ৩০ জন সাংবাদিক আজকে আহত; হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে বা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে কই তাদের কারও কাছ থেকেতো কোনো কথা শুনি না। আমাদের দেশের সেই সুশিল বাবুরা কোথায়? যারা একটু কিছু হলেই চিৎকার করে ওঠে।

এসময় তিনি আরও বলেন, ওইসব সুশিলরা শুধু আওয়ামী লীগের দোষ খুঁজে বেড়ায়। আওয়ামী লীগের কেউ কিছু করলে সেটাকেই বড় করে দেখানো তাদের কাজ। আর যত অপরাধী, খুনি, চোর, ডাকাত, লুটপাটকারী. গ্রেনেড হামলাকারী, অস্ত্র, চোরাকারবারী ; এদের কোনো অপরাধ নাই। মানবাধিকার লংঘনকারী তাদের কোন অপরাধ নাই। আমাদের সুশীলবাবুরা সব এখন চুপচাপ। তাদের কাছ থেকে বিবৃতিও দেখি না, কিছুই দেখি না।

সেই সাথে মানবাধিকার সংগঠন। তারা নাকি একেবারে মানবাধিকারের জন্য; সেই সব সংগঠন এখন সোচ্চার হয় না কেন? তারা এখন কেন চুপ হয়ে আছে? তারা কেমন মানবাধিকার কর্মী আমরা জানি? একসময় রাজনৈতিক দল করতো; সেসময় মানুষ খুন, থানা লুট এসব সব করে হঠাৎ মানবাধিকার কর্মী হয়ে গেছে। এরকমও তো কয়েকজনকে চিনি। তারা মানবাধিকার কর্মী! এরা চুপ কেন এদের কি বিবেক বলে কিছু নেই।

বিএনপি সমাবেশে আহত সাংবাদিকদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি তো সবসময় আছি; যতটুকু সহযোগিতা করার আমরা তা করব। এইটুকু আশ্বাস আমি দিতে পারি। কাজেই ওদের চিকিৎসাটা হোক ভাল হয়ে উঠুক সেটাই আমরা চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা দেশের মানুষের শান্তি চাই। ২০০৯ থেকে ২০২৩ বাংলাদেশে আজকে ধারাবাহিক গণতন্ত্র আছে বলে এবং সরকারের ধারাবাহিকতা আছে বলেই আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বিশ্ব একসময় বাংলাদেশকে হেয় চোখে দেখত এখন তো আর দেখে না। সম্মানের চোখেই দেখে। সেটুকু আমরা করতে পেরেছি। আমরা চাই আমাদের দেশটা এগিয়ে যাবে। আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি; সেই উন্নয়নশীল দেশ হিসাবেই আমরা প্রতিষ্ঠিত হবো।

বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সম্মেলন পরিচালনা করেন সংগঠনের মহাসচিব দীপ আজাদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

সারাবাংলা/এনআর/এনইউ

জাতীয় প্রেসক্লাব টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর