Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অবরোধে গাড়ি ভাড়া বাড়তির অজুহাতে বাজারে ‘আগুন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:১৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিএনপি-জামায়াতের টানা তিনদিনের অবরোধে প্রভাব পড়েছে কাঁচাবাজারে। অবরোধে গাড়িভাড়া বেশি নেওয়ার অজুহাত দেখিয়ে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে সবজির বাজার কমতির দিকে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে নগরীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতায় ভরপুর কাঁচাবাজার। সবজির দোকানে ক্রেতাদের ভিড়। অনেকে দাম জিজ্ঞেস করে ফেরত যাচ্ছেন, আবার অনেকে দর কষাকষি করছেন। মাছের বাজারে আগুন হলেও ভিড়ের চাপে হাঁটা যেন মুশকিল হয়ে পড়েছে। মুরগির কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। একেক বাজারে সবজির কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত ব্যবধান দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

নগরীর কর্ণফুলী মার্কেটে প্রতিকেজি নদীর শোল মাছ ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, কৈ ১ হাজার টাকা, শিং ১ হাজার ২০০ টাকা ও পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়।

এছাড়া প্রতি কেজি রুই ৩৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, কাতলা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চাষের শিং ৪৫০ টাকা, মাগুর ৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, চাষের পাঙাস ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ১ কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।


মামুনুর রশিদ নামে এক ক্রেতা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সপ্তাহে একদিন ভালো-মন্দ বাজার করি। জানি তারা দাম একটু বেশি রাখছে মাছের। কি করবো, খেতে তো হবে। দেশটাকে যে যার ইচ্ছেমতো চালাচ্ছে। কোনো মনিটরিং নেই। কিছু অভিযান হয়, তবে সেটা লোক দেখানো। এখন সব কিছুর দাম বাড়তি। কোনটা রেখে কোনটা কিনবো সেটা নিয়ে মাঝেমধ্যে চিন্তায় পড়ে যাই।’

বিজ্ঞাপন

কর্ণফুলী মার্কেটে মাছ বিক্রেতা আব্দুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সামুদ্রিক মাছের দাম একটু বাড়তি। আরও কিছু মাছ ১০ থেকে ২০ টাকা দামে বেশি বিক্রি হচ্ছে। আমাদেরও তো পরিবার আছে। খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে হয়। সবকিছুর দাম এখন বাড়তি। আমাদেরও চাল, ডাল, তেল ও বিভিন্ন কিছু কিনতে হয়। না পোষালে কম দামে কিভাবে বিক্রি করি। তাছাড়া গত তিনদিন ধরে অবরোধ চলছে। এতে পর্যাপ্ত মাছ আসতে পারছে না। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।’

এছাড়া কর্ণফুলী কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি বরবটি ৬০, শিম ১১০, পটল ৫০, মুলা ৬০, মিষ্টি কুমড়া ৫০, ফুলকপি ৮০, ঢেঁড়শ ৭০ ও তিত করলা ৬০, লতি ৫০, চিচিঙ্গা ৫০, ঝিঙ্গা ৮০, টমোটো ১০০, আলু ৫৫, পেঁয়াজ ১১০, রসুন ১৮০, আদা ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কর্ণফুলী কাঁচাবাজারে সবজির দাম নিয়ে রাশেদ হাসান নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘গতকাল যে দাম ছিল আজও (শুক্রবার) সে দামে সবজি কিনেছি। শুনেছি আলুর দাম কমতে পারে। তবে এখনও একই দাম। পেঁয়াজেরও একই অবস্থা। সব জায়গায় এ অবস্থা। ভ্যানে দাম বেশি রাখে। তাই ১৫ মিনিট হেঁটে এখানে এসে বাজার করি। কিন্তু এখানেও তারা দাম ছাড়ে না।’

এছাড়া নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও যেটা বিক্রি হয়েছে ১৬৫-১৭০ টাকায়। লেয়ার মুরগী বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩০০ ও সোনালী মুরগি ৩১০ টাকায়। গরু ও মহিষের মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০-৯৫০ টাকায়।

কর্ণফুলী কাঁচাবাজারের চেয়ে এখানে প্রতিটি সবজির কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১৫ টাকা কম দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মুরগি বিক্রেতা মো. খোকন সারাবাংলাকে বলেন, ‘মুরগির খাবারের দাম বেশি। তাছাড়া বাচ্চা সরবরাহ নেই। তাই মুরগির দাম বেড়েছে। আর বাংলাদেশে যেটার দাম বাড়ে সেটা যে কমবে তার আশা করা যায় না। আগামী এক মাসেও মুরগির দাম কমার সম্ভাবনা আমি দেখছি না।’

রেয়াজউদ্দিন বাজার আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি রশিদ আহম্মদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘অবরোধে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সবজি সরবরাহ মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল। তবে গাড়ি ভাড়া আমাদের বেশি গুণতে হয়েছে। মুন্সিগঞ্জ থেকে চট্টগ্রামের রেগুলার ভাড়া যেখানে ১২ হাজার টাকা সেখানে আমাদের ২০ হাজার টাকা গুণতে হয়েছে। এজন্য দুই একটি সবজির দাম বেশি হলেও অনেক সবজির দাম কমেছে। শীতকালীন সবজি এলে সামনে আরও কমবে। আলুর দামও দুই দিনের মধ্যে কমতে পারে। পেঁয়াজের দাম কমতে একটু সময় লাগবে।’

সারাবাংলা/আইসি/এমও

অবরোধ গাড়ি ভাড়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর