কেউ নির্বাচন বানচাল করতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী
৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৯:৪২
ঢাকা: আগামী জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার চক্রান্তের পেছনে অনেকেরই হাত আছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি ও ওই সমস্ত দুষ্কৃতিকারী কয়েকজনের লাফালাফিতে এদেশে কখনও নির্বাচন বানচাল হবে না। এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে সুষ্ঠু নির্বাচন করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার শপথ নিতে হবে। যেন এই দেশের অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে না পারে।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দলীয় সভাপতি বলেন, ‘ওদের চক্রান্ত হচ্ছে নির্বাচনটা বানচাল করা। আর এই নির্বাচন বানচাল করার চক্রান্তের পেছনে অনেকেরই হাত আছে। কিন্তু আমাদের শক্তি জনগণ, বাংলাদেশের মানুষ। ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করে অনেক অত্যাচার নির্যাতন জেল-জুলুম বারবার মৃত্যুর মুখে গেছি। সবকিছু অতিক্রম করেই আজকে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি। আজকে ভাতের অধিকার নিশ্চিত করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এগিয়ে যেতে পারে। আমাদের যে নেতাদের হারিয়েছি তাদের কাছে আমাদের এটিই ওয়াদা আপনাদের জীবন নিয়ে গেছে সত্যি কিন্তু যে বাংলাদেশ জাতির পিতা রেখে গেছেন। এটুকু বলব, জাতীয় চার নেতার আদর্শ নিয়েই বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। ওই সমস্ত দুষ্কৃতকারী কয়েকজনের লাফালাফিতে এদেশে কখনও নির্বাচন বানচাল হবে না। এই দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আমার অনুরোধ থাকবে, সামনে নির্বাচন; এই নির্বাচনে নানাভাবে গোলমাল করার চেষ্টা করবে। আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আদায় করেছি। সেই অধিকার যেন নিশ্চিত থাকে। মানুষ যেন তার ভোট শান্তিপূর্ণভাবে দিতে পারে সেই পরিবেশ রাখতে হবে।’
বিএনপি ওরা আসলে সিট পাবে না দেখে নির্বাচন করবে কি না সন্দেহ? আর নির্বাচনে এলেও তারা মনোনয়ন বাণিজ্য করার জন্য আসবে বলেও দাবি করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নমিনেশন সেটি তো আমরা দেব। আমি বসে থাকি না প্রতি ছয়মাস পর আমার একটি হিসাব থাকে। কেউ যদি আবার মনে করে এখন তো ওরা নাই আমরা দাঁড়ালে তো জিতেই যাব। এ চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। কারণ এই চিন্তাই সর্বনাশ ডেকে আনবে। কাজেই যে সিদ্ধান্ত দেব, সেই সিদ্ধান্ত মানতে হবে।’
‘আর এখন অগ্নিসন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রত্যেক এলাকায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। প্রত্যেক এলাকায়, শুধু এই ঢাকা শহর বলে না। যেখানে যেখানে তারা এই ধরনের অগ্নিসন্ত্রাস করবে সেই এলাকায় কত বিএনপি আছে খুঁজে বের করতে হবে বা জামায়াত খুঁজে বের করতে হবে। ওই গুলোকে ধরিয়ে দিতে হবে। আর মানুষের জানমালের যেন ক্ষতি করতে না পারে তাদের সুরক্ষা দিতে হবে। এটাই আওয়ামী লীগের দায়িত্ব। কারণ আমাদের আর কিছু নেই। আমাদের কোনো মুরব্বি নেই। আমাদের আছে বাংলাদেশের জনগণ। সেই জনগণ নিয়ে আমাদের চলতে হবে।’
জেল হত্যা দিবসে জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে আজকে আমরা দেশের মানুষের উন্নতি করতে পেরেছি। এই উন্নতিটা আমাদের ধরে রাখা দরকার।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, জাতীয় নেতা শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদের মেয়ে সিমিন হোসেন রিমি এমপি এবং জাতীয় নেতা শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের কন্যা সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এমপি। আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন।
সারাবাংলা/এনআর/একে