Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তরুণ ব্যবসায়ী হত্যা, এক সপ্তাহেও খুনিরা অধরা


১৯ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৮:৩৬

উজ্জল জিসান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

রাজধানীর বাড্ডার আফতাব নগরে নিজ ফ্লাটে তরুণ ব্যবসায়ী মনজিল হককে গলা কেটে হত্যা করার এক সপ্তাহ হলেও পুলিশ এখনো কাউকে ধরতে পারেনি। এমনকি কাউকে শনাক্তই করতে পারেনি বাড্ডা থানা পুলিশ। দিনে-দুপুরে চারজন যুবক এসে খুন করলেও পুলিশ বলছে কোনো কূল-কিনারা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী বলেন, মনজিল হত্যার পরপরই শারমিন আক্তার নিশি নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যমতে, ওই বাসায় সকাল ১১টার দিকে চার যুবক প্রবেশ করেন। এরপরই মনজিলকে হত্যা করা হয়। নিশিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সে ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজের মাস্টার্সের ছাত্রী।

বাড্ডা থানা পুলিশ এ ব্যাপারে কিছু না বললেও ছায়া তদন্ত করা একটি গোয়েন্দা সংস্থার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, মনজিল হত্যায় তার সৎ ভাই ইয়াসীনের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে। তার সৎ ভাই ইয়াসীন সম্পত্তির লোভে তাকে খুন করে থাকতে পারে। গোয়েন্দা সংস্থার ওই কর্মকর্তা বলেন, মনজিল হত্যা হয়েছে বেলা ১১টার দিকে। বেলা সোয়া ১টার দিকে ইয়াসীনের কলরেকর্ড পাওয়া যায় আশেপাশেই। বেশ কয়েকদিন ওই ফোন নম্বরটি একই জায়গায় চালু ছিল। এরপর বন্ধ হয়ে যায়।

গোয়েন্দাদের ধারণা, ফোনটি কোথাও ফেলে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই নম্বরে কোনো কল আসা যাওয়া করেনি। এমনকি পরিবারের কারো সঙ্গেও যোগাযোগ হয়নি। গোয়েন্দারা আশেপাশের প্রায় সবগুলি হাসপাতাল খুঁজে শেষ করেছে। কোথাও তাকে খুঁজে পাওনা যায়নি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, হত্যাকাণ্ডে যে চার যুবক অংশ নিয়েছিল তাদের একজন ইয়াসীন বলে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের সময় ইয়াসীনও মারাত্বক আহত হতে পারে। মনজিল নিজেও ইয়াসীনকে ছুরিকাঘাত করতে পারে। আর তাই সে কোনো হাসপাতাল কিংবা কোনো বাসাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকতে। অথবা কোনো সংস্থার লোকজন তাকে ধরে থাকতে পারে। তবে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এ মামলাটি কাজ শুরু করেছে। শিগগির খুনীরা ধরা পড়বে বলে আশা করছেন।

এদিকে পুলিশের আরেক সূত্র সারাবাংলাকে বলেন, শারমিন আক্তার নিশি একই সঙ্গে মনজিল ও ইয়াসীনের সাথে সম্পর্ক চালাত। এমনকি ইয়াসীন নিজেই নিশিকে মনজিলের পেছনে লাগিয়ে দিয়ে থাকতে পারে। তবে ইয়াসীনের সঙ্গে যে নিশির যোগাযোগ রয়েছে তা জানত না মনজিল।

অন্যদিকে মনজিলের সৎ মা লায়লা ইয়াসমীনকে সোমবার বিকেলে সারাবাংলার পক্ষ থেকে ফোন করে জানতে চাওয়া হয়, আপনার ছেলে খুন হয়েছে? এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পেরেছে? জানতে চাইলে তিনি স্বাভাবিকভাবে বলেন, পুলিশ এখনো এরকম কোনো খবর দেননি। আমরাও খোঁজ নেইনি। আরেক ছেলে ইয়াসীনের ব্যাপারে জানতে চাইলে লিপি বেগম বলেন, ইয়াসীন কোথায় আছে তাও জানি না। তার সঙ্গে এখনো যোগাযোগ হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডার আফতাব নগরে নিজের ফ্ল্যাটে খুন হন তরুণ ব্যবসায়ী মনজিল হক (৩০)। মনজিল হক বাড্ডায় গাড়ি মেরামতের একটি ওয়ার্কশপের মালিক ছিলেন। দুর্বৃত্তরা রশি দিয়ে পা বেঁধে গলা কেটে তাকে হত্যা করে। তার দুই হাতেও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। পুলিশ ওই বাসা থেকে রক্তমাখা দুটি ছুরি উদ্ধার করেছে।

পুলিশ ও প্রতিবেশীরা জানান, ফ্ল্যাটটিতে মনজিল একাই থাকতেন। মাঝে-মধ্যে সেখানে তার বন্ধুরা আড্ডা দিতেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার হোমনায়।

মনজিলের চাচা ফারুক মিয়া জানান, ছয় মাস আগে মনজিলের বাবা মাইনুল হক মারা যান। তার বাবার দুই বিয়ে। মনজিল ছিল প্রথম স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। দ্বিতীয় স্ত্রীর এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। মনজিলের বাবা মারা যাওয়ার আগে দুটি ফ্ল্যাট কিনে একটিতে মনজিলকে থাকতে দেন।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

 


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

এখনো সালমানকে মিস করেন মৌসুমী
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৩

সম্পর্কিত খবর