Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘গ্রেফতার এড়াতে বিএনপি নেতারা বনে-বাদারে আশ্রয় নিচ্ছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ নভেম্বর ২০২৩ ২১:১৫

ঢাকা: গ্রেফতার এড়াতে ফসলের মাঠ, বনে-বাদারসহ নানা অবাসযোগ্য জায়গায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের আশ্রয় নিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শনিবার (০৪ নভেম্বর) বিকেলে অজ্ঞাত স্থান থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন জনগণ নাকি তার সঙ্গে আছে, জনগণ নাকি তার মূল শক্তি। তাহলে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিচ্ছেন না কেন? জনগণ সঙ্গে থাকলে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে ভয় পাচ্ছেন কেন? কেন আপনি নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে শীর্ষ নেতাদের কারান্তরিণ করেছেন? কেন আপনি দেশব্যাপী ব্যাপক ধরপাকড় করছেন? নেতা-কর্মীদের বাসায় না পেয়ে তার বাবা-ভাইকে আটক করছেন?’

‘আপনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় ক্যাডাররা রক্তাক্ত আক্রমণ চালিয়ে নেতা-কর্মীদের হত্যা ও বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীকে জখম করছে? আপনি এতটাই বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন যে দেশব্যাপী ধরপাকড় করে ভীতির পরিবেশ তৈরি করেছেন’— বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন ৭১ এর ভয়াল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ৭১ এর হানাদার বাহিনীর হিংস্রতা আর দুঃশাসনের হুবহু নকল করছে আওয়ামী সরকার। তাদের শান্তি কমিটির মতো এখন আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করছে। হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের না পেলে তাদের পরিবারের লোকদের ধরে নিয়ে যেত। আওয়ামী পুলিশও সেই কৌশল অবলম্বন করছে।’

রিজভী, ‘উদ্ভট গায়েবি মামলার নতুন নতুন মডেল আমরা দেখতে পাচ্ছি। ঢাকাতে গ্রেফতার যুবদল নেতা মামুনের বিরুদ্ধে বরিশালে ককটেল নিক্ষেপের মামলা করা হয়েছে। জেলে থেকে নাকি ট্রাকে পেট্রোল নিক্ষেপ করেছে বিএনপি নেতা কাকন। এ সমস্ত হাস্যকর, তামাশার মামলা দিয়ে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জুলুম আর হয়রানির ভয়ংকর আবর্তের মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। ফলে, গ্রেফতার এড়াতে ফসলের মাঠ, বনে-বাদারসহ নানা অবাসযোগ্য জায়গায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের আশ্রয় নিতে হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিষাক্ত নখরে আচড়ে গণতন্ত্রকামী মানুষকে ছিন্নভিন্ন করতে চাচ্ছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অবরোধ অগ্নি-সন্ত্রাস যারা করবে তাদের কেউ যেন পার না পায়। যদি কেউ ধরা পড়ে তাকে ধরে ওই আগুনে ফেলতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভয়ানক অগ্নি কুণ্ডলীতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের নিক্ষেপের হুমকি ভয়ংকর সর্বনাশা হুমকি। এটি সারা জাতির জন্য মহাবিপদ সংকেত।’

রিজভী বলেন, ‘সরকারের সমগ্র চক্রান্তের পরিসীমা নেই। যারা মিথ্যা মামলায় অভিযুক্ত করে কারাগারে বন্দি নেতাকে বোমা ছুড়ে মারার মামলা দিতে পারে তারা শান্তিপূর্ণ অবরোধকারী নিরীহ নেতা-কর্মীকে অগ্নি সন্ত্রাসী বানিয়ে পুডিয়ে মেরে ফেলতে পারে। প্রধানমন্ত্রীর এই বিপদজনক হুমকিতে গোটা জাতি স্তম্ভিত। এটি জাতির জন্য মহাবিপদ সংকেত।’

তিনি বলেন, ‘জাতীয় সহিষ্ণুতাকে ভেঙে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামী সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য সহিংসতা ও সংঘাতময় পরিস্থিতিকে উসকে দিচ্ছে। জাতিসংঘ, গণতান্ত্রিক দেশগুলো ও মানবাধিকার সংস্থা বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেও আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রীরা সেগুলোকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করছে । ২৮ শে অক্টোবর এর ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে যেগুলো প্রকাশ পেয়েছে তার প্রতিটাতেই দেখা যায় পুলিশের পাশে লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা হাঁটছে।’

রিজভী বলেন, ‘অতীতের নজির ঘেঁটে প্রমাণ যে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশটাকে তাদের বাপ-দাদার সম্পত্তি মনে করে। এ কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় ক্যাডার বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলে বিরোধী পক্ষের উপর লেলিয়ে দেয়। ২৮ অক্টোবর থেকে ঢাক-ঢোল পিটিয়েই লগি-বৈঠা দিয়ে বা অন্যান্যভাবে বিএনপির কর্মসূচিকে নির্মূল করার ঘোষণা তারা দিয়েছে এবং বাস্তবায়ন করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের জীবন নিয়ে। বিএনপিকে বল প্রয়োগে উৎখাতের পরিকল্পনা নিয়েছেন শেখ হাসিনা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘একজন জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী নিজেদের ক্যাডারদের বলেছেন ১০০ দিনের জন্য রাষ্ট্র পাহারা দিতে। এগুলো কীসের আলামত? শেখ হাসিনা দেশকে কোন পথে নিতে চাচ্ছে? সন্ত্রাসী মনোভাবাপন্ন ক্যাডারদের দিয়ে রাষ্ট্র পাহারা দেবেন? রাষ্ট্র কি শুধু আওয়ামী লীগারদের? আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা বাহিনী ও জনগণসহ সবাই কি দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক?’

রিজভী বলেন, ‘ভয়ঙ্কর কর্তৃত্ববাদের চরম শৃঙ্খলে দেশকে বন্দি করছেন শেখ হাসিনা। তিনি একক ও অদ্বিতীয় হয়ে উঠেছেন। হত্যা করা, পুড়িয়ে ফেলা— এসব কী শুনছে দেশবাসী? বাংলাদেশিরা এখন এক সর্বগ্রাসী গুন্ডা-পান্ডাদের রাজত্বে বসবাস করছে। তবে হুমকি আর হুঁশিয়ারি দিয়ে জনগণের চলমান এক দফার আন্দোলনকে সীমাবদ্ধ করা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা কারাগারে। জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এর সঙ্গে প্রচণ্ড রকম অসদাচরণ করা হচ্ছে। তাকে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রাখা হচ্ছে। উচ্চমাত্রার ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা জটিল রোগে তিনি আক্রান্ত। গ্রেফতারের পর তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, সেখানে তাকে কোনো ঔষধ পর্যন্ত দেওয়া হয় নাই। এক মনুষ্যত্বহীন অবিচারে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে।’

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

টপ নিউজ বিএনপি রিজভী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

পাকিস্তানে শাকিব খানের ছবি
২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪৮

সালমান খানের আফসোস
২০ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:৪৩

সম্পর্কিত খবর