।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: দেশে প্রাপ্ত বয়স্ক মোট জনসংখ্যার শতকরা ১৮ ভাগ মানুষ উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত। তাদের মধ্যে অর্ধেকের বেশি মানুষ জানেন না তারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। বৃহস্পতিবার (১৭ মে) আইসিডিডিআর,বিতে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। একইসঙ্গে তারা মত দেন, বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
আইসিডিডিআর,বি এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প ‘হাইপারটেনশন! দ্য সাইলেন্ট কিলার! রিচিং দ্য আনরিচ’ শীর্ষক এই বৈজ্ঞানিক সেমিনারে অংশ নেন বক্তারা।
তারা বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত করা গেলে ওষুধ ছাড়াই শুধুমাত্র জীবনযাপন পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অধিকাংশ মানুষ জানে না, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং প্রতিরোধযোগ্য।
পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত তিন জনের মধ্যে দুই জনের অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপে ভুগছেন- যা ঝুঁকিপূর্ণ রোগের কারণ। হৃদরোগ, এটি অসংক্রামক ব্যাধিজনিত মৃত্যুর শতকরা ৫০ ভাগ জন্য দায়ী। তিন জনের মধ্যে দুই জন উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগী নিয়মিত ওষুধ সেবন করেন না। ফলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
এসব তথ্য ‘সিওবিআরএ-বিপিএস ট্রায়াল (রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং ঝুঁকি হ্রাস- বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকা’ নামে গবেষণায় পাওয়া গেছে।
এই মাল্টি কান্ট্রি ট্রায়াল-এর বাংলাদেশ অংশের প্রধান ডা. আলিয়া নাহিদ জানান, “প্রাপ্ত বয়স্কদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে এবং রক্তচাপ হ্রাস করতে স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের মাধ্যমে একটি সহজ পদ্ধতিকে পরীক্ষা করা হয়েছে, যা জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সহজেই সংযুক্ত করা সম্ভব।”
এই গবেষণার প্রধান গবেষক অধ্যাপক তাজিন এইচ. জাফর সেমিনারে ভিডিও বার্তায় বলেন, “প্রথাগতভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সর্বদাই সংক্রামক ব্যাধির ওপর জোর দিয়ে এসেছে এবং অসংক্রামক ব্যাধিকে অবহেলা করেছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ব্রি. জেনারেল (অব.) আব্দুল মালিক বলেন, পুরো বিশ্বে এখন উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কার্ডিও ভাসকুলার, কিডনি ফেইলিয়র, স্ট্রোকের অন্যতম কারণ উচ্চ রক্তচাপ।
কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ যদি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায় তাহলে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এমনকি ওষুধ ছাড়াও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। লবন না খাওয়া, কায়িক পরিশ্রম করা, ধূমপান না করার অভ্যাস করতে হবে। কারণ, উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ একবার খেলে সারাজীবন খেয়ে যেতে হবে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট) অধ্যাপক এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ডা. নূর মোহাম্মদ, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আফজালুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/জেএ/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook