Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাদক মামলার আসামিকে কোরআন পড়তে বললেন বিচারক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:২৪

ঢাকা: রাজধানীর শাহবাগ থানার মাদক মামলার আসামি মো. ইয়াকুব আজাদকে (৩৫) পবিত্র আল কোরআনের সূরা বাকারা, মায়েদা এবং নিছা ভালো করে পড়তে বলেছেন আদালত। সেইসঙ্গে ৫০টি গাছ লাগাতে ও মাদরাসায় ভালোমানের কিছু ধর্মীয় বই উপহার দিতেও বললেন আদালত।

রোববার (৫ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম মামলাটিতে দেওয়া রায় স্থগিত করে এ আদেশ দেন। ওই আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর বিপুল চন্দ্র দেবনাথ ব্যতিক্রমধর্মী এ রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

২০১০ সালের ৩ নভেম্বর শাহবাগ থানাধীন হোটেল আপ্যায়নের পূর্বপাশ থেকে মো. ইয়াকুব আজাদকে পাঁচপিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তার বিরুদ্ধে ওইদিনই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিচালক কাজী হাবিবুর রহমান এ মামলাটি দায়ের করেন।

ওই বছরের ৯ ডিসেম্বর মামলাটি তদন্তের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ইন্সপেক্টর এসএম এলতাস উদ্দিন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ১২ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ তিন জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এর পর ২০১৫ সালের ৫ জুলাই রায় ঘোষণা করেন ঢাকার মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাশেদ তালুকদার।

এর আগে, ২০১১ সালের ১ জুন এ মামলায় আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে তদন্ত কর্মকর্তা। চার্জগঠন থেকে মামলার বিচারকার্যক্রম আসামি পলাতক থাকা অবস্থায় হয়। রায়ের পর আসামি পরোয়ানা মূলে ২০২০ সালের ২৬ অক্টোবর গ্রেফতার হয় এবং ২ নভেম্বর তিনি জামিন পেয়ে মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল দায়ের করেন।

আজ আপিল শুনানির জন্য আদালতে দিন ধার্য্য ছিল। এদিন আইনজীবী জায়েদুর রহমানের মাধ্যমে আসামি প্রবেশন আইন অনুযায়ী দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

শুনানিকালে কাঠগড়ায় থাকা আসামির কাছে বিচারক জানতে চান, ‘আপনার (আসামি) ছেলে-মেয়ে আছে?’ জবাবে আসামি জানান, এক ছেলে মাদরাসায় হাফেজি পড়ে, আর মেয়ে ছোট। তখন বিচারক জিজ্ঞাসা করেন, ‘ঘর পবিত্র করার জন্য ছেলেকে হাফেজি পড়াচ্ছেন, সে অপনার জন্য দোয়া করবে, মরে গেলে জানাজা পড়াবে, আপনি কি না ইয়াবা মামলার আসামি।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘আপনি কি পড়া লেখা করেছেন?’ তখন আসামি বলেন, ‘আমি মাদরাসা থেকে ফাজিল পাস করেছি।’

এরপর বিচারক বলেন, ‘ছেলে মাদরাসায় হাফেজি পড়ে, আপনি ফাজিল পাস। আপনি কেন ইয়াবার মামলার আসামি হলেন?’ তখন আসামি বলেন, ‘স্যার আমাকে ইয়াবা দিয়ে মামলা দিয়েছে।’ এরপর বিচারক বলেন, ‘পবিত্র কোরআনের কোন সুরায় মাদক সম্পর্কে বলা আছে জানেন? সুরা বাকারা, মায়েদা ও নেছা ভালো করে পড়বেন। এর মধ্যে মাদক সম্পর্কে কথা বলা আছে।’

এরপর বিচারক আসামির উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার সাজা স্থগিত করা হলো। আর প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে আপনি ৫০টি গাছ লাগাবেন, পবিত্র আল কোরআনের সুরা বাকারা, মায়েদা এবং নিসা ভালো করে পড়বেন। এ ছাড়া আপনার ছেলে যে মাদরাসায় পড়ে সেই মাদরাসায় ভালোমানের কিছু বই উপহার দেবেন। আবার এমন বই দিয়েন না যাতে সেখানকার ছাত্ররা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে।’

সারাবাংলা/এআই/পিটিএম

আসামি ইয়াবার মামলা কোরআন টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর