আন্দোলন বাদ দিয়ে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর
৭ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:১৫
ঢাকা: দেশের পোশাক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ৪ হাজার টাকা বেড়েছে। মূল মজুরি বেড়েছে ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। ডিসেম্বরে কার্যকর হওয়া বর্ধিত মজুরি শ্রমিকরা পাবেন আগামী জানুয়ারিতে। এমন পরিস্থিতি আন্দোলন বাদ দিয়ে পোশাক শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। সেইসঙ্গে মালিকদের সহনশীল হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে শ্রমিক-মালিকদের প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি। এর আগে, রাজধানীর তোপখানা রোডে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ৬ষ্ঠ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই এ মজুরি নির্ধারণ করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, ‘শ্রমিকদের বলব, কাজে যোগ দিতে। মালিকদের বলছি, কারখানা খুলে দিতে। মালিকদের বলব, শ্রমিকদের ক্ষমা করে দিতে, সুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে।’ শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কাজে যোগ দিয়ে শিল্পে শান্তি আনুন। কারও উসকানিমূলক কথায় কান দেবেন না। মালিকরাও সহনশীল হবেন।’
তিনি বলেন, ‘পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৮ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করা হয়েছে। শ্রমিকদের পক্ষে রেশনের দাবি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটা ফ্যামিলি কার্ড দেওয়ার কথা বলেছেন। পরবর্তী সময়ে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন মজুরি বোর্ডকে। সে অনুযায়ী বোর্ড প্রস্তাব করেছে। শ্রমিকরা দীর্ঘ দিন ধরে মজুরি বাড়াতে আন্দোলন করে আসছেন। মালিকপক্ষ মজুরি বোর্ডের সঙ্গে আলাপ করে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। শিল্প বাঁচলে শ্রমিক বাঁচবে।’
মালিকপক্ষের প্রতিনিধি বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘মালিকরা সবসময় সহনশীল। কারণ, যখন শ্রমিকেরা আন্দোলন করে ভাঙচুর করেন তখন কিন্তু আমরা মামলা করি না। নতুন মজুরি কার্যকর হবে ডিসেম্বর থেকে। আর শ্রমিকরা নতুন কাঠামোতে বেতন পাবেন আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে।’
শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধি জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি বলেন, ‘আমাদের গ্রেড ছিল সাতটি। আমরা পাঁচটি গ্রেডের দাবি জানিয়েছিলাম। সেই দাবি নতুন কাঠামোতে কার্যকর হয়েছে। শ্রমিকদের বেসিক বেড়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের প্রত্যাশা থাকতে পারে। কিন্তু যা পেয়েছি তা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য। শ্রমিক সংগঠনগুলো বিভিন্ন ব্যাখায় বিভ্রান্ত হয়। মনে রাখতে হবে, সব কারখানা কিন্তু গ্রিন ফ্যাক্টরি নয়।’
মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা বলেন, ‘নিম্নতম মজুরি সাড়ে বারো বা তেরোর মধ্যেই তাদের আশা ছিল। আমরা সকলের সঙ্গে আলোচনা করে মাঝামাঝি পর্যায়ে বেতন নির্ধারণ করেছি। পাঁচ বছর পরে এই বেতন আবার রিভিও হবে।’
মজুরি বোর্ডের সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বোর্ডের নিরপেক্ষ সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, মালিকদের প্রতিনিধি বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের উপমহাসচিব মকসুদ বেলাল সিদ্দিকী, বোর্ডে শ্রমিকদের প্রতিনিধি জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহম্মদ।
সারাবাংলা/জেআর/ইএইচটি/পিটিএম