‘বিচারের প্রতিশোধ নিতেই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা’
৭ নভেম্বর ২০২৩ ২০:৫১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রতিশোধ নিতেই প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা ও সৈনিক হত্যা দিবসে নগর আওয়ামী লীগের উদ্যেগে আয়োজিত প্রতিবাদী সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি-জামায়াতের জন্ম আজন্মের পাপ মন্তব্য করে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। আপনাদের জন্ম আজন্মের পাপ। গণতন্ত্র আপনাদের মুখের কথা, অন্তরে কুটিলতা ও বিষবাষ্প। আপনারা দু-চারটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং পুলিশ হত্যা করে যে হিংসাত্মক অপরাজনীতি করছেন এর দায় অবশ্যই বহন করতে হবে।’
আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, ‘দেশের প্রধান বিচারপতি যিনি যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিলেন এবং তা কার্যকরও হয়েছে। তার প্রতিশোধ নিতেই বিএনপি-জামায়াত পরিকল্পিতভাবে অবরোধ ও সমাবেশের নামে তার বাসভবনে প্রকাশ্যে হামলা চালিয়েছে। এর জন্য তাদের কোনো অনুশোচনা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে পবিত্র ফিলিস্তিন ভূমিতে মার্কিনি মদদে ইসরাইল বাহিনী যে গণহত্যা চালাচ্ছে সে ব্যাপারে বিএনপি নিশ্চুপ ও নীরব ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এর কারণ তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য দাসখত দিয়েছে। ইসরাইলি হামলার নিন্দা করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অখুশি হবে এই জন্যই বিএনপির এই রহস্যময় নীরবতা।’
অযৌক্তিক অবরোধ ও হরতালের নামে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদহানি হলে জনগণকে নিয়ে তা প্রতিরোধ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ ১৯টি পয়েন্টে নগর আওয়ামী লীগ অবস্থান নেবে।’
জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত অভিযোগ করে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান অন্তর থেকে নয়, বাধ্য হয়েই মুক্তিযোদ্ধা হয়েছিলেন। সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাসে চট্টগ্রাম বন্দরের শ্রমিক জনতার যখন আত্মাহুতি দিচ্ছিলেন তখন হানাদার বাহিনীর পক্ষে সেই অস্ত্র খালাসে তিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন। মাঝপথে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের বাদামতলী মোড়ে বীর জনতার প্রতিরোধের মুখে তিনি ষোলশহরে ফেরত আসেন এবং সেখান থেকে কড়লডেঙ্গায় গিয়ে আশ্রয় নেন। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘৩ নভেম্বরের জেলহত্যার সময়ও তার প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল। ৭ নভেম্বর ভোরবেলায় মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা, সৈনিক হত্যার সময়ও তিনি নেপথ্যের প্রধান কুশীলব ছিলেন। এই জিয়াউর রহমান মনে-প্রাণে পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ করলেও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর অনুচর ছিলেন এবং তিনি অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে এম এ সবুর খান, ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিম, শাহ আজিজুর রহমান, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীসহ যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুর্নবাসিত করেছিলেন। তার পরবর্তী কার্যকলাপে প্রমাণিত হয় তিনি পাকিস্তানি ভাবধারায় বিশ্বাসী।’
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, জাতীয় পরিষদ সদস্য মো. ইউনুছ, জালালাবাদ ওয়ার্ডের শাহজাদা কাজী আবদুল মালেক, পূর্ব মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের সালাউদ্দিন ইবনে আহমেদ, পশ্চিম মাদারবাড়ী ওয়ার্ডের গোলাম মো. জোবায়ের, আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের ইকবাল হাসান চৌধুরী ও বাগমনিরাম ওয়ার্ডের সাইফুল আলম বাবু প্রমুখ।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম