ঢাকা: পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন আগের থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা করলেও একে প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল মনে করছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের)। বেতন আরও বাড়ানো সম্ভব না হলে নিত্যপণ্যের দাম কমাতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
জি এম কাদের বলেন, পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন নিয়ে তামাশা চলছে। বর্তমান বাজারব্যবস্থায় ন্যূনতম বেতন ১২ হাজার পাঁচ শ টাকা কিছুই না। দফায় দফায় নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে সাড়ে ১২ হাজার টাকায় একটি পরিবারের খাবার খরচ চালানোই অসম্ভব। এমন বাস্তবতায় তারা বাসা ভাড়া, চিকিৎসা, পোশাক ও শিশুদের লেখাপড়া চালাবে কীভাবে?
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। পোশাক শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর আন্দোলনে আবারও সমর্থন জানিয়ে তিনি বলেন, পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন দমনে মাত্রাতিরিক্তি বল প্রয়োগের অভিযোগ আছে। এতে অনেক হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলন দমন করতে শক্তি প্রয়োগ সভ্য সমাজে অগ্রহণযোগ্য। আন্দোলনরত শ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুনের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। আহত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতের দাবির পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর দাবিও মেনে নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন সাড়ে ১২ হাজার টাকা করা হলেও এটি না মেনে আবারও আন্দোলনে নেমেছে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা। রফতানি শিল্পের শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে নির্দয় আচরণ চলছে। যে শ্রমিকরা বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, তারাই সবচেয়ে বেশি মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দেশের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখা শ্রমিকদের সঙ্গে অমানবিক বৈষম্য চলছে। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শ্রমিকদের বেতন বাড়িয়ে দিন অথবা নিত্যপণ্যের দাম কমান।
বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের আরও বলেন, গবেষণা সংস্থা সিপিডির সর্বশেষ গবেষণায় উঠে এসেছে— বাংলাদেশে চার সদস্যের একটি পরিবারের শুধু মাসিক খাবার খরচ ২২ হাজার ৪২১ টাকা। এই গবেষণার পরও কয়েক দফা নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে!
পোশাক কারখানার মালিকদের কঠোর সমালোচনা করে জি এম কাদের বলেন, মালিকপক্ষ উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতার যে অজুহাত তুলে শ্রমিকদের স্বল্প বেতন দিতে চাচ্ছে তা সাধারণ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। উৎপাদন বাড়িয়ে হলেও শ্রমিকদের ন্যয্য মজুরি নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিক অভুক্ত রেখে ব্যবসা টিকিয়ে রাখার যৌক্তিকতা মধ্যযুগীয় দাস প্রথার বর্বরতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। এমন বাস্তবতায় তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আবারও মেনে নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।