Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারা আমাদের ব্যর্থতা: ফখরুল


১৮ মে ২০১৮ ১৪:০৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারাকে নিজেদের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা বার বার চেষ্টা করছি, আন্দোলন করছি, আমাদের শত শত, হাজার হাজার ছেলেরা জেলে গেছে। তারপরও আমরা দেশনেত্রীকে বাইরে নিয়ে আসতে পারিনি। এটা একদিকে যেমন আমাদের ব্যর্থতা। অন্যদিকে এই সরকারের যে ভয়ংকর রূপ, ভয়ংকর চেহারা— এর মধ্য দিয়ে সেটাই প্রকাশ হয়েছে।’

শুক্রবার (১৮ মে) নয়াপল্টনে ভাসানী মিলনায়তনে ‘কোটি জনতার মা, পর্ব-১’ গানের সিডির মোড়ক  উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যদি কারাগার থেকে মুক্ত করতে হয়, গণতন্ত্রকে যদি মুক্ত করতে হয়, তাহলে আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সেই আন্দোলন সেদিনই সম্ভব হবে, যেদিন আমরা একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে পারব। দেশনেত্রীও এই ঐক্যের জন্যই আহ্বান জানিয়েছিলেন। জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়েই জাতির ওপর চেপে বসা পাথর সরাতে হবে, দানব সরকারকে সরাতে হবে।’

 ‘দানবের চেয়েও খারাপ এই সরকার— এ কথা আমার না। প্রধান বিচারপতি, যাকে জোর করে বের করে দেওয়া হয়েছে, তিনি বলে গেছেন— বাংলাদেশে একটা দানবীয় শাসন চলছে। আজকে সেই দানবকে সরাতে হলে সমস্ত রাজনৈতিক দল, সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’— বলেন মির্জা ফখরুল।

গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠান সরকার ভেঙে দিয়েছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘অন্যায়-অত্যাচার, নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে যাওয়ার জন্য একমাত্র স্থান ছিল বিচার বিভাগ। দুর্ভাগ্য আমাদের, আজকে বিচার বিভাগককেও এই সরকার কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে। তারা গণতন্ত্রের সব প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে দিয়েছে। রাষ্ট্রের যে গণতান্ত্রিক পিলারগুলো ছিল, সে পিলারগুলোকে ভেঙে দিয়েছে ক্ষমতায় চিরকাল থাকার জন্য।’

বিজ্ঞাপন

ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব স্পষ্ট করে বলেছি, সরকার যে নির্বাচনের কথা বলে ঢাক-ঢোল পেটাচ্ছে সে নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না যদি বিরোধী দল তাতে অংশ না নেয়, নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, দেশনেত্রীকে মুক্তি দেওয়া না হয়। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না যদি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া না হয়, দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েন না করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এ কথা বারবার বলে আসছি, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একতরফা নির্বাচন করে নিয়ে যাবেন— এ দেশের মানুষ আর সেটা হতে দেবে না।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের জন্য দেশবাসী ঢাকা মহানগর বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমি অনুরোধ করব, ঢাকা মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীরা সংগঠিত হোন। যখনই প্রয়োজন হয়, তখনই যেন আপনারা বেরিয়ে আসতে পারেন।’

স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণকে আন্দোলনের অংশ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘খুলনার জনগণের সাথে কথা বলে এবং পত্রপত্রিকার খবর দেখে সবসময় মনে হয়েছে, নজরুল ইসলাম মঞ্জু (খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী) লাখো ভোটের ব্যবধানে জিতবেন। কিন্তু সরকার সুপরিকল্পিতভাবে পুলিশি নির্যাতন-গ্রেফতার ও দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে ত্রাসের রাজস্ব কায়েম করেছে। জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে না দিয়ে ভোট ডাকাতি করেছে।’

তিনি বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত বলেছেন, খুলনা নির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে তার তদন্ত হওয়া উচিত। কিন্তু এই নির্বাচন কমিশন তদন্ত করবে না। এই নির্বাচন কমিশন পুরোপুরিভাবে সরকারের বশংবদে পরিণত হয়েছে।’ গাজীপুর ও খুলনা নির্বাচন বিএনপি ও মির্জা ফখরুল নিজেও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বললেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

সিডির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিএনপির সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক আশারাফুদ্দিন উজ্জ্বল, সহ-সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মনির খান, ঢাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এজেড/টিআর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর