অবহেলা-অব্যবস্থাপনায় নোবিপ্রবির খেলার মাঠের বেহাল দশা
১০ নভেম্বর ২০২৩ ১০:৫৩
নোবিপ্রবি: দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠটি। একসময় এখানে সকাল-বিকেল ক্রিকেট ও ফুটবল খেলার অনুশীলন হতো। তবে দীর্ঘ দিনের অযত্ন, অবহেলা ও অব্যবস্থাপনায় খেলাধুলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে মাঠটি।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠের বিভিন্ন স্থানে প্রায় শতাধিক ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে গর্তগুলো ভরে গেলে দেখলে মনে হবে ছোট ডোবা। আবার পানি শুকালে মনে হবে কোনো ফসলের ক্ষেত। মাঠে খেলার সময় বাতাসে উড়ছে ধুলাবালি। বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে ইট-পাথরের কণা, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। চারপাশে ছড়িয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। পানি নিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যায়। ঘাস বড় হওয়ায় মাঠ হারিয়েছে তার গতি। হয়ে পড়েছে খেলার অনুপযোগী। মাঠের চারপাশ ঝোঁপঝাড়ে ভরে গেছে। দেখলে মনে হবে এই যেন ছোটখাটো একটি বন। মাঠের মধ্যে নেই খেলোয়াড়দের বিশ্রামের জায়গা, নেই খাবার নিরাপদ পানির সুবিধা। খেলার মাঠ রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সার্বক্ষণিক কোনো মাঠকর্মীও নেই। উল্টো খেলার মাঠের বিরাট এক অংশজুড়ে করা হয়েছে চাষাবাদ।
শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন অব্যবস্থাপনায় ফেলে রাখায় খেলাধুলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে মাঠটি। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী খেলতে গিয়ে আহত হয়েছেন এ মাঠে। কারও হাঁটুর লিগামেন্টের ইনজুরি হয়েছে, কারও বা পায়ের গোড়ালিমস্কে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও খেলোয়াড় ইয়াসিন আল রিয়াদ বলেন, নোবিপ্রবিতে একটি মাত্র খেলার মাঠ রয়েছে। বিকেল হলেই আমরা মাঠে ফুটবল, ক্রিকেট খেলতাম। আমরা এই মাঠে প্র্যাক্টিস করে বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপ্রেজেন্ট করতে যাই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু মাঠের এই বেহাল দশার কারণে আমরা প্রায়ই ইনজুরড হয়ে যাই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন টিমের দুইজন খেলোয়াড়ের লিগামেন্ট ইনজুরিও হয়েছে এই মাঠে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে এই মাঠ সংস্কারের দাবি জানাচ্ছি।
রবিউল আওয়াল পিয়াস নামে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, আমি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল এবং ক্রিকেট টিমের একজন নিয়মিত সদস্য। গতবছর এবং এইবছর সব খেলাতেই অংশগ্রহণ করেছি। এখন আসি আসল কথায়, অনেকে ফুটবল খেলায় হারলে প্রশ্ন করেন বা ক্রিকেটে হারলেও প্রশ্ন করেন। এখন আমার প্রশ্ন বলেন ‘ত’ বাংলাদেশের কোন ইউনিভার্সিটির মাঠে এইরকম ঘাস, মাঠের সব জায়গায় টুকটাক গর্ত আছে।
লোকমান হোসেন ইমন নামে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের অবস্থা একেবারে শোচনীয়। খেলার মাঠটি একদম সমান নয়। বৃষ্টি আসলে পানি জমে যায় মাঠের বিভিন্ন জায়গায়। এছাড়া খেলার মাঠের চারদিক দিয়ে যে বাউন্ডারি আছে সেটি সঠিকভাবে দেয়া নেই। পরিচ্ছন্নতার অভাবে বিভিন্ন ঝোঁপঝাড় জঙ্গলে ভরে গেছে মাঠের একাংশ। এছাড়া মাঠের পাশে বসে খেলা উপভোগ করার জন্য পর্যাপ্ত বসার জায়গার ব্যবস্থা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শিগগির মাঠটির সংস্কার চাই। মাঠের ঘাসগুলা কেটে ফেলে খেলার উপযোগী করা হোক এটাই আমাদের দাবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালক মো. রুবেল মিয়া বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মাঠ সংস্কারের জন্য কাজ শুরু করেছি, আশাকরি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মাঠ সংস্কারের কাজ শেষ হবে। আমরা আগামী ১৭ তারিখের পর আমরা আন্ত:ডিপার্টমেন্ট ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারব। এছাড়া আমরা শিক্ষার্থীদের নেট অনুশীলনের ব্যবস্থা করছি এবং এর কাজ শুরু হয়ে গেছে। শিগগির কাজ শেষ হবে।
সারাবাংলা/এনইউ