বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মজুরির দাবি কর্মজীবী নারীদের
১০ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:১২
ঢাকা: গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলনে গুলি করে শ্রমিক হত্যার বিচারের দাবি জানিয়েছে কর্মজীবী নারী নামে একটি সংগঠন। একইসঙ্গে বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মজুরি নির্ধারণের দাবি জানায় সংগঠনটির নেতারা।
শুক্রবার (১০ নভেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত সমাবেশে এ দাবি জানান তারা। এতে সভাপতিত্ব করেন কর্মজীবী নারী’র সহ-সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল এবং সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সমন্বয়ক রাজীব আহমেদ। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন- কর্মজীবী নারী’র সংগঠক নার্গিস আক্তার, শেখ শাহানাজ, রাবেয়া আক্তার, হুরমত আলী, বিভাস কুমার মন্ডল, ফারহানা আফরিন তিথি ও সমন্বয়ক হাছিনা আক্তার। এছাড়া গার্মেন্টস শ্রমিক জোনাকি ও রিয়া বক্তব্য দেন। সমাবেশ শেষে একটি শোক র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
উম্মে হাসান ঝলমল বলেন, ‘আমাদের দাবি শ্রমিক হত্যার বিচার, স্থিতিশীল বাজার ও বাঁচার মতো মজুরি। সরকার পক্ষ এবং সরকার সংশ্লিষ্ট সকল মহলকে এই দাবিকে সমর্থন করতে হবে, তবেই দাবি আদায় হবে।’
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গার্মেন্টস শ্রমিক আঞ্জুয়ারা ও রাসেল হত্যার বিচার চাই। শ্রমিক ভাই বোনেরা কারখানা ভাঙচুরে লিপ্ত ছিল না। একদল গুণ্ডা বাহিনী এই ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজ করেছে, আর গ্রেফতার হয়েছে ও গুলি খেয়েছে শ্রমিকরা। শ্রমিকদের উপর হামলা-মামলা ও গুম-গ্রেফতার বন্ধ করার দাবি জানান তারা।
সংগঠনটির নেতারা আরও বলেন, সরকার গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য যে রেশনিংয়ের ব্যবস্থা করবে তার যেন সুষম বন্টন হয়। এদিকে সরকারের নজরদারির জোর দাবি জানান তারা। এছাড়া মজুরি ঘোষণার পরপরই বাড়িভাড়া বৃদ্ধি রুখতে প্রতি স্কয়ার ফিট অনুযায়ী বাড়িভাড়া নির্ধারণ করতে হবে এবং সরকারকে একটি বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ কমিটি ও নীতিমালা গঠনের আহ্বান জানান তারা।
বক্তারা শ্রম আইন নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, শ্রম আইন ২০২৩ সংশোধনীতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে তা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট কি না? আইন মালিক-শ্রমিক উভয়ের স্বার্থ রক্ষার জন্য করা হয়, তবে কেন এই আইন নিরপেক্ষ থেকে করা হয় না? যে মজুরি বোর্ড শ্রমিকের পক্ষে কাজ করে না, মালিক পক্ষের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী তৈরি হয়, সেই মজুরি বোর্ড আমরা চাই না।
বক্তারা উল্লেখ করেন, এই মুহূর্তে স্থিতিশীল বাজার ও বাঁচার মতো মজুরি প্রণয়ন করা অত্যন্ত প্রয়োজন, নয়তো পুরো অর্থনীতি স্ট্রাকচারাল কিলিংয়ের দিকে এগিয়ে যাবে।
গার্মেন্টস শ্রমিকরা বলেন, বেতন বাড়ায় আমরা খুশি। কিন্তু বাড়ি ফিরে দেখি বাড়িভাড়া বেড়ে গেছে। তাই সরকারকে দ্রব্যমূল্যের দাম স্থিতিশীল রাখার দাবি জানাই। আমরা আন্দোলন করলে পুলিশ আমাদের গুলি করে, হামলা ও গ্রেফতার করে। গার্মেন্টস শ্রমিক বলে কি আমরা মানুষ না, আমাদের কি কথা বলার অধিকার নেই?
সারাবাংলা/এনএস