অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৩০ পোশাক কারখানা বন্ধ
১২ নভেম্বর ২০২৩ ১৬:০০
ঢাকা: চলমান শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে নিরাপত্তার স্বার্থে এখন পর্যন্ত দেশের ১৩০ টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার (১২ নভেম্বর) বিজিএমইএ অফিসে ‘পোশাক শিল্পে নূন্যতম মজুরি ও বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান এ তথ্য জানান।
তৈরি পোশাক মালিক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘মজুরি বৃদ্ধির পরও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় কারখানা ভাঙচুর করা হচ্ছে। মজুরি ঘোষণার পর থেকে বেশকিছু কারখানায় অজ্ঞাতনামা কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তাদের মারধর করেছে। কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতে আশুলিয়া, কাশিমপুর, মিরপুর ও কোনাবাড়ি এলাকার প্রায় ১৩০টি পোশাক কারখানা কারখানা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব কারখানার মালিকরা মূলত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং কারখানার সম্পত্তি রক্ষার স্বার্থে কারখানার সব বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেসব কারখানায় শ্রমিকরা কাজ করতে আগ্রহী সেগুলোতে কাজ চলমান থাকবে।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান জানান, করোনা মহামারির কারণে দেশের মধ্যে ২০২০-২১ সালে বন্ধ হওয়া কারখানার সংখ্যা ৩১৭টি। আর করোনা পরবর্তী সময়ে অন্যান্য কারণে প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে না পারার কারণে ২৬০টি কারখানা বন্ধ হয়েছে।
শিল্পের উত্থানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বন্ধ কারখানার সংখ্যাও বাড়ছে। কারখানা বন্ধও হয়েছে নানা সংকটে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬৮৮৫টি পোশাক কারখানা বিজিএমইএ এর সদস্যপদ গ্রহণ করলেও ৩৯৬৪টি সদস্য কারখানা বিভিন্ন কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র করোনা মহামারির কারণে ২০২০-২১ সালে বন্ধ হওয়া কারখানার সংখ্যা ৩১৭টি এবং পরবর্তীতে অন্যান্য কারণে প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখতে না পারায় ২৬০টি কারখানা বন্ধ হয়েছে।
ফারুক হাসান বলেন, ‘শিল্পের অভ্যন্তরের গভীরতম সংকটের বিষয়টি গণমাধ্যমে সেভাবে উঠে আসছে না। কতখানি সংকটের মধ্যে থেকে, কতখানি অনিশ্চয়তা নিয়ে কারখানাগুলো চলছে তা পরিসংখ্যানই বলে দেয়। কোনো উদ্যোক্তাই চান না, তার অক্লান্ত কষ্টে তিলে তিলে গড়া উঠা শিল্প-কারখানা বন্ধ হয়ে যাক। কিন্তু বাহ্যিক নিয়ন্ত্রণ-বহির্ভূত কিছু বিষয় আছে, যার প্রভাব থেকে শিল্প চাইলেও বের হতে পারে না, শিল্পকে তা গ্রহণ করতেই হয়। এটিই এ শিল্পের কঠিন বাস্তবতা।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক যে আমরা যখন ‘বৈশ্বিক ও আর্থিক’ এই দ্বিমুখী চাপের মধ্যে থেকেই টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত রয়েছি, ঠিক তখন শিল্পকে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা অপতৎপরতা। বিশেষ করে আমাদের শান্ত শ্রমিক গোষ্ঠীকে উসকানি দিয়ে অশান্ত করা হচ্ছে।”
‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, মজুরি বৃদ্ধির পরও আন্দোলনের নামে বিভিন্ন জায়গায় কারখানা ভাঙচুর করা হচ্ছে। মজুরি ঘোষণার পর থেকে বেশকিছু কারখানায় অজ্ঞাতনামা কিছু উচ্ছৃঙ্খল শ্রমিক অযৌক্তিক দাবিতে বেআইনিভাবে কর্মবিরতি পালন করে কর্মকর্তাদের মারধর করেছে, কারখানার ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানাগুলো এ ব্যাপারে আমাদেরকে ভিডিও ফুটেজ দিয়েছে, মামলার কপিও আমাদেরকে দিয়েছে-’ বলেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে