দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধাতে চান প্রধানমন্ত্রী: রিজভী
১৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:২৮
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধাতে চান বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘আগুনে নিক্ষেপ করতে প্রধানমন্ত্রীর সহিংস হুংকারে দেশের গণতন্ত্রকামী প্রতিটি মানুষ আতঙ্কিত। তিনি দেশে গৃহযুদ্ধ বাঁধাতে চান। তার বক্তব্য শুনে বোঝা যাচ্ছে তিনি নিজেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর পুরো আস্থা রাখতে পারছেন না। এ কারণে শর্টগান, হাতুড়ি-চাপাতি-লগি-বৈঠাধারী আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্দেশ দিচ্ছেন আন্দোলনর নেতা-কর্মীদের আগুনে নিক্ষেপ করে হত্যা করতে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা অতীতেও একটার বদলে দশটি লাশ ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে নদীতে ফেলে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় এখন বিরোধী নেতা-কর্মীদের জেলে পুরে স্বস্তি পাচ্ছেন না। যারা রাজপথে আছে তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দিচ্ছেন।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রতিহিংসা এবং জিঘাংসা চরিতার্থ করার হীন মনোবৃত্তি ফুটে উঠেছে তার কর্কষ কণ্ঠে, ‘আরে ব্যাটা তোর যদি সাহস থাকে তাহলে বাংলাদেশে ফিরে আয়, আমরা একটু দেখি’ হুংকারে। এতে জনগণের সামনে স্পষ্ট যে, তারেক রহমানকে তিনি হত্যা করতে চান। এজন্য একটির পর একটি মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায়ে সাজা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একতরফা নির্বাচন আয়োজনে উন্মত্ত এখন। তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মহলের চাপে দিশেহারা হয়ে গেছে। প্রধান বিচারপতির বাড়ির ফটকে হামলা, পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যা, পুলিশ হাসপাতালে গাড়িতে আগুনের এই সব ঘটনা নিজেদের এজেন্ট দিয়ে পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘অবরোধ চলাকালে ফেনীর লালপুলে মহাসড়কে চিনিভর্তি ট্রাকে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সদর উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি নুর উদ্দিন টিপুকে গ্রেফতারে প্রমাণ হয় অতীতের মতো আওয়ামী লীগ আগুন সন্ত্রাস নাশকতা করে বিএনপির ওপর দায় চাপাচ্ছে। নিজেরাই ধ্বংসযজ্ঞ, হত্যা-ভাঙচুর, সহিংসতা করে পুরানো কায়দায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করছে। দুঃশাসনে পিষ্ট প্রতিবাদী মানুষকে নিশ্চিহ্ন করতে দলীয় ও রাষ্ট্রশক্তিকে বেপরোয়াভাবে ব্যবহার করছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এত ক্ষমতা, সাহস আত্মম্ভরিতা কিন্তু সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা শুনলে তিনি আঁতকে ওঠেন। যদি সাহস থাকে সন্ত্রাসীদের মতো খিস্তি-খেউড় আর হুংকার বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। ভোটাররাই ফায়সালা করবে।’
রিজভী বলেন, ‘ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আবারও উদ্ভট, বানোয়াট, আজগুবি মামলার প্লাবন বইয়ে দিচ্ছে সরকার। সরকারের মতো পুলিশও এখন গায়েবি তথ্য উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। কবরে শায়িত লাশের নামে, ওমরাহ পালনকালে সেই ব্যক্তির নামে, হাসপাতালে শায়িত পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তির নামে, প্রবাসীর নামে, কারাবন্দি নেতাদেরও বিভিন্ন আসামি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রকে কব্জায় নিয়ে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের মাধ্যমে সরকার টিকে থাকার শেষ চেষ্টা করছে। আইন-আদালত, প্রশাসন, পুলিশ— সবকিছুই শেখ হাসিনার হুকুমের দাসে পরিণত হয়েছে। বিএনপির সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ৩ বছর আগে। ১ বছর আগে মারা গেছেন রামপুরা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির রহমান। অথচ ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে ফেরার পথে তারা নাকি মৌচাকে পুলিশের ওপর ককটেল ছুড়েছেন!’
রামপুরা থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুর জলিল বাদী হয়ে এ মামলাটি করেন। মামলায় ২৪১ জন আসামির মধ্যে অ্যাভোকেট সানাউল্লাহ মিয়াকে ২২৬ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আর মরহুম মো. নাসির রহমানকে ৮৮ নম্বর আসামি দেখনো হয়েছে। মিথ্যা মামলা করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে শেখ হাসিনার দলদাস মামলাবাজ পুলিশ।
সারাবাংলা/এজেড/একে