Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন মঙ্গলবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ নভেম্বর ২০২৩ ২২:১৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রাম নগরীর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ ১৫ প্রকল্পের উদ্বোধন হচ্ছে আগামীকাল মঙ্গলবার। যানজট এড়িয়ে মূল শহর থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা-যাওয়ার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পতেঙ্গায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। এ জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পতেঙ্গা প্রান্তের প্রবেশমুখে প্রায় এক হাজার মানুষের সুধী সমাবেশের আয়োজন করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।

এছাড়া চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আরেকটি অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বাকি ১৪ প্রকল্পের উদ্বোধনের পাশাপাশি একটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন। চট্টগ্রাম জেলায় ৯ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়িত ১৫ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। মাঠ পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো সুবিধাজনক স্থান থেকে এ কনফারেন্সে যুক্ত হবে।’

যেসব প্রকল্পের উদ্বোধন হবে

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়ন করা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, বাকলিয়া এক্সেস রোড ও ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ সড়ক পর্যন্ত লিংক রোড, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের ১০টি বেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও মাদরাসার উন্নয়ন, গণপূর্ত অধিদফতরের করা সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের জন্য বহুতল ভবন ও পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমেটরি ভবন নির্মাণ, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের করা চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭টি অবকাঠামো স্থাপন ও কমিউনিটি ক্লিনিক।

এছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৮০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ, সমাজসেবা অধিদফতরের জেলা সমাজসেবা কমপ্লেক্স নির্মাণ, গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের মহেশখালী জিরো পয়েন্ট (কালাদিয়ার চর) থেকে সিটিএমএস (ধলঘাট পাড়া) গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ, মহেশখালী-আনোয়ারা গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাই নির্মাণ, আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাস সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ ও চট্টগ্রাম-ফেনী-বাখরাবাদ গ্যাস সঞ্চালন সমান্তরাল পাইপলাইন নির্মাণ এবং কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের করা মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ ও কেজিডিসিএল গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্ক আপগ্রেডেশন প্রকল্প।

এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যেগে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে মুরালী খালের ওপর ১২১ মিটার দীর্ঘ ভেলালাপাড়া সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সিডিএর তিন প্রকল্প

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ‘মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরী সিডিএ ফ্লাইওভার’, বাকলিয়া এক্সেস রোড ‘জানে আলম দোভাষ সড়ক’ এবং ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ সড়ক পর্যন্ত লিংক রোড ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব সড়ক’ হিসেবে নামকরণ করেছে সিডিএ।

জানা গেছে, নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গার টানেলের মুখ পর্যন্ত সাড়ে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করছে সিডিএ। চার লেনের এই ফ্লাইওভারটির নামকরণ করা হয়েছে ‘মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরী সিডিএ ফ্লাইওভার’। তবে লালখানবাজার পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটারের কাজ অসমাপ্ত রেখে আপাতত টাইগারপাস পর্যন্ত কাজ শেষ করেই উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিডিএ। আবার উদ্বোধন হলেও এখনই গাড়ি চলাচলের জন্য পুরোপুরি খুলছে না এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, গাড়ি চলতে দেওয়া হবে সীমিত পরিমাণে।

বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার থেকে নেমে মুরাদপুর–লালখান বাজারের বিদ্যমান আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের সাথে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের পাশে নির্মাণাধীন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যুক্ত করা হচ্ছে। ফলে মুরাদপুর থেকে ফ্লাইওভারে ওঠা কোনো গাড়ি সরাসরি পতেঙ্গা সৈকত বা টানেলের মুখ পর্যন্ত পৌঁছে যাবে। পতেঙ্গা থেকে শহরে আসা গাড়িগুলো টাইগারপাস হয়ে লালখান বাজারে ম্যাজিস্ট্রেট কলোনির সামনে নিচে নামবে এবং যাদের মুরাদপুর বা বহদ্দারহাট কিংবা ওই রোড ধরে অন্য কোথাও যাওয়া দরকার তারা লালখান বাজার থেকে আবার ফ্লাইওভারে চড়তে পারবে। টাইগারপাসে পাহাড় না কাটার জন্য এক্সপ্রেসওয়ের চার লেনের মধ্যে দুই লাইন নিচে নামিয়ে দিয়ে ডিজাইন করা হয়। মূল ফ্লাইওভার থেকে পরে বিভিন্ন পয়েন্টে ১৪টি লুপ এবং র‌্যাম্প নামানো হবে।

চট্টগ্রামের যানজট নিরসন করে নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে ‘চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প’টি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পায় ২০১৭ সালের ১১ জুলাই।

২০১৮ সালের নভেম্বরে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রথমে তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা প্রকল্প ব্যয় নির্ধারণ হয়েছিল। পরে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকায়। এ ছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়।

১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ৫৪ ফুট প্রশস্ত চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে আছে ২৪টি লুপ র‍্যাম্প এবং ৩৯০টি পিলার। নগরীর যানজট নিরসন ও বিমানবন্দর থেকে মূল শহরের যোগাযোগ সহজ করতে এ প্রকল্প ভূমিকা রাখবে বলে দাবি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের।

এদিকে সাবেক সংসদ সদস্য জানে আলম দোভাষের নামে করা বাকলিয়া এক্সেস রোড ইতোমধ্যে সড়কটি নগরীর যান চলাচলে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে। ১ দশমিক ৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা ব্যবহার করে শহরের সিরাজউদ্দৌলা রোড থেকে মাত্র ৫ মিনিটে শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। শহরের যান চলাচলের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা ৪ লেনের সড়কটি নির্মাণে ২১৭ কোটি ৫১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ সড়ক পর্যন্ত লিংক রোডে ইতোমধ্যে পুরোদমে যান চলাচল শুরু হয়েছে। লালখান বাজার থেকে ফ্লাইওভারে বায়েজিদ বোস্তামি সড়কে নামার পর ওই সড়ক ধরে ঢাকা–চট্টগ্রাম রোডে যাতায়াতে গতি এসেছে। সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩১৯ কোটি ৬১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা।

সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস সারাবাংলাকে বলেন, ‘বাকলিয়া এক্সেস রোড ও ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ সড়ক পর্যন্ত লিংক রোডে গাড়ি চলাচল করছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন হলেও কিছু কাজ বাকি থাকায় যান চলাচল সীমিত রাখা হবে। যানজট নিরসন ও বিমানবন্দর থেকে মূল শহরের যোগাযোগ সহজ করতে এ প্রকল্প ভূমিকা রাখবে।’

সারাবাংলা/আইসি/একে

উদ্বোধন টপ নিউজ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর