Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আইপিও যাচাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা উচিত’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:৩১

ঢাকা: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেছেন, আইপিওর যাচাই-বাছাইয়ে স্টক এক্সচেঞ্জের আরও ভূমিকা থাকা উচিত। আগে এক্সচেঞ্জের ভালো ভূমিকা ছিল, এখন অনেকটাই কম।

বর্তমানে আইপিওসহ সব ধরনের পাবলিক অফারের অনুমোদন দেয় বিএসইসি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আলাদা আইন রয়েছে। কোথাও স্টক এক্সচেঞ্জ অনুমোদন দেয় আবার কোথাও রেগুলেটর অনুমোদন দেয়। আমাদের দেশে আগে থেকেই রেগুলেটর আইপিও অনুমোদন দিয়ে আসছে।

মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত সিএমজেএফ টক অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

রাজধানীর পুরানা পল্টনে সিএমজেএফের নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি জিয়াউর রহমান। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবু আলী এটি সঞ্চালনা করেন।

অনুষ্ঠানে অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেন, পুঁজিবাজারের আস্থার উন্নয়নে ফ্লোর প্রাইস কোনও স্থায়ী সমাধান নয়।

তিনি বলেন, এটা শেয়ার প্রাইস নির্ধারণে সরাসরি হস্তক্ষেপের রেগুলেটর বা স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ফিক্সড করা ঠিক না। এটা বিশ্বের কোথাও নেই। স্টক এক্সচেঞ্জ প্রাইস ডিসকভারের জায়গা।

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সাবেক নির্বাহী পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। অনুষ্ঠানে তিনি ডিএসইর বর্তমান অবস্থার নানা দিক এবং এর উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

প্রশ্ন-উত্তর পর্বে পুঁজিবাজারের ম্যানুপুলেশন বন্ধ, ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেন, কৌশলগত বিনিয়োগ ও টেকনিক্যাল সহায়তা, ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আনা, বিনিয়োগকারীর সুরক্ষা ও তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয় উঠে আসে।

অনুষ্ঠানে ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জে ব্যবস্থাপনা থেকে মালিকানা পৃথককরণে ডিমিউচ্যুয়ালইজেশন করা হয়। এই আইনে স্বতন্ত্র পরিচালকদের প্রাধ্যান্য দেওয়া হয়েছে। ট্রেকহোল্ডারদের প্রতিনিধিও রয়েছে। তবে কাজ করতে গিয়ে মনে হচ্ছে, কিছু বিষয় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন, সেটা নিয়ে রেগুলেটরের সঙ্গে আলোচনা করবো আমরা।

ডি-মিউচ্যুয়ালাইজেশনের পর স্টক এক্সচেঞ্জে বেশ কিছু সুফলও এসেছে। মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা আলাদা হয়েছে। সরাসরি কোনো হস্তক্ষেপে নেই। অপারেশনে বোর্ডের কোনো ইনফ্লুয়েশন নেই। তবে আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, সাংহাই ও শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রস্তাবে টেকনিক্যাল কিছু প্রস্তাব ছিল। সেই প্রস্তাবের কিছু কাজ ইতোমধ্যে হয়েছে। আরও কিছু বাকি রয়েছে। করোনার কারণে বাস্তবায়নের বিলম্ব হয়েছে। আশা করি, অবশিষ্ট কাজও হবে।

বিনিয়োগকারীর সুরক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, বাজারে লাভ-লোকসান থাকবেই। কারো লোকসান হবে না-এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। তবে কেউ যাতে প্রতারণার শিকার না হয়, বিনিয়োগকারীর টাকা যাতে কেউ আত্মসাৎ করতে না পারে- সে ব্যাপারে আমরা তৎপর আছি।

৩৬ বছর ধরে ডিএসইর একই অডিটর দিয়ে নিরীক্ষা করানোর বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টিতে আমি অবাক হয়েছি। তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে অডিটর রোটেশনে জোর দেওয়া হয়। কারণ রোটেশন না করলে অডিটর নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে না। দীর্ঘ দিন ধরে একসাথে কাজ করতে গিয়ে পরস্পরের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক তৈরী হয়। এতে অডিটর প্রভাবিত হতে পারেন। কারণ অডিটিং হচ্ছে সুশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

তিনি বলেন, কেন স্টক এক্সচেঞ্জে অডিটর রোটেশন করলো না, বিষয়টা জানি না। তারা অডিটিং- এর প্রিন্সিপল লঙ্ঘন করেছে। তবে ভাল দিক হচ্ছে, ডিএসইর পর্ষদ সভায় বিষয়টি উত্থাপন করা হলে সবাই অডিটর পরিবর্তন করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

পুঁজিবাজারে ম্যানুপুলেশন বন্ধে ডিএসই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে শেয়ার কারসাজি নিয়ে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, অনেক তদন্তই ডিএসই করার পর নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে পাঠিয়েছে। কারসাজি নিয়ন্ত্রণের ডিএসইর সার্ভিলেন্স টিম কাজ করছে।

সারাবাংলা/জিএস/এনইউ

আইপিও ডিএসই সিএমজেএফ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর