সেবা বাদ দিয়ে অনেক হাসপাতাল ব্যবসা খুলে বসেছে: হাইকোর্ট
১৪ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০০
ঢাকা: সেবা বাদ দিয়ে অনেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীদের নিয়ে ব্যবসা খুলে বসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
সিলেটের হবিগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) চার আসামির আগাম জামিন শুনানিতে আদালত এমন মন্তব্য করেন।
শুনানিতে আদালত বলেন, দায়িত্বে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় ইদানিং রোগীর মৃত্যুর ঘটনা বাড়ছে। এ ধরনের অপরাধ করে কারও পার পাওয়ার সুযোগ নেই। চিকিৎসা সেবার নামে অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে। সেবার পরিবর্তে তারা অর্থের পেছনে ছুটছে।
শুনানি শেষে আদালত আসামিদের আগাম জামিন আবেদন খারিজ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর জন্য পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন।
চার আসামির করা আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম মাসুদ রুমি।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর রহিমা আক্তার নামে এক নারী পেটে টিউমার নিয়ে চিকিৎসার জন্য সিলেটের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে আসেন। এ সময় রহিমার সঙ্গে আসা আত্মীয়-স্বজনকে ভুল বুঝিয়ে স্বল্প খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সেখান থেকে তাকে নিয়ে হবিগঞ্জের ‘দি জাপান বাংলাদেশ’ হাসপাতালে ভর্তি করেন আসামিরা। পরে ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ ৯ সেপ্টেম্বর রোগীর অপারেশন করেন। তিন দিন পর তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়িতে যাওয়ার পর রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।
এক পর্যায়ে রহিমার শারীরিক অবস্থা গুরুতর হওয়ায় গত ২ অক্টোবর হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ওসমানী মেডিকেলের চিকিৎসকরা জানান, জাপান-বাংলাদেশ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ টিউমার অপারেশনের সময় রহিমার খাদ্যনালী, জরায়ু এবং বাঁ-পাশের কিডনিও কেটে ফেলেছেন। এমনকি টিউমার যথাযথভাবে অপারেশন করা হয়নি। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ অক্টোবর মারা যান তিনি। এ ঘটনায় চারজনকে আসামি করে রহিমার পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়।
আজ এ মামলায় হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন চান চিকিৎসক ডা. এস কে ঘোষ, দি জাপান বাংলাদেশ হাসপাতালের পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম ও আমীর আবেদীন এবং ম্যানেজার জনি আহমেদ। হাইকোর্ট জামিন না দিয়ে তাদের পুলিশের হাতে সোপর্দ করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা তাদের আদালত থেকে নিজেদের হেফাজতে নেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম