জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে ১৭ ও ১৮ নভেম্বর সমাবেশ
১৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:১৬
ঢাকা: আগামী ১৭-১৮ নভেম্বর জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে সমাবেশ করবে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে কর্মরত কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন। দুবাইয়ে আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৮) সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের কাছে জলবায়ু ন্যায্যতা ও অধিকারগুলো জোরালোভাবে উপস্থাপন করতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৩ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে ‘ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশে’র সমন্বয়ক শরীফ জামিল এসব তথ্য জানান।
দু’দিনব্যাপী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। আয়োজনে দেশি ও বিদেশি অংশীজনদের পাশাপাশি জীবাশ্ম জ্বালানিজনিত জলবায়ু সংকটের হুমকিতে থাকা উপকূলীয় ও অন্য এলাকা থেকে প্রায় ৭০০ জন এই আয়োজনে সরাসরি অংশ নেবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশের জীবাশ্ম জ্বালানি উৎপাদনের কেন্দ্রগুলোর সংলগ্ন জনপদ ও জলবায়ু সংকটাপন্ন এলাকাগুলো থেকে স্থানীয় জনগণ বিভিন্ন দাবিতে জড়ো হয়ে সম্মিলিতভাবে তাদের দাবিগুলো তুলে ধরতে ও সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জলবায়ু সংবেদনশীল এলাকায় কয়লা ও গ্যাসভিত্তিক বিভিন্ন প্রকল্পের ফলে স্থানীয়দের ক্ষতির পরিমাণ ও ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। এ কারণে স্থানীয় বহু জেলে, কৃষক এবং আদিবাসী পরিবার বাস্তহারা হয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের দায় আমাদের না থাকলেও, উন্নত দেশসমূহের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পাশাপাশি নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধির লাগামহীন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের মত ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহ ঐতিহাসিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিরূপ প্রভাবের শিকার। তাই উন্নত দেশগুলোর প্রতি জোরালো চাপ সৃষ্টি ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সংহতি জানাতে এ সমাবেশ আয়োজন করা হয়েছে।
শরীফ জামিল বলেন, ‘২৭ বছর ধরে জলবায়ু সম্মেলনগুলোতে শুধু আলোচনাই হয়েছে, সমস্যা নিরসনে কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ভূমিকা খুবই নগন্য। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় সামনের সারিতে। জলবায়ু হুমকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর কথা আমরা সমাবেশে তুলে ধরতে চাই।‘
ব্রতী’র নির্বাহী পরিচালক শারমীন মুরশীদ বলেন, ‘পরিবেশ জলবায়ু মানবাধিকারের জায়গা ধ্বংস করে দিয়েছে। বর্তমানে যে পরিবর্তন ঘটছে, তাতে মানুষের ন্যূনতম জায়গাটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’
জলবায়ু ন্যায্যতা সমাবেশ-২০২৩ এর আহ্বায়ক সুলতানা কামাল বলেন, ‘জলবায়ু ন্যাযতার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা সমাবেশে কথা বলবেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা ঘোষণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। জলবায়ু ন্যাযতার জন্য মানবাধিকারের জন্য আমরা দীর্ঘ দিন কাজ করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেইঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল ভদ্র, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিব দ্রংসহ অনেকে।
সমাবেশের আয়োজন করছে, ব্ৰতী সমাজ কল্যাণ সংস্থা, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট, কোস্ট ফাউন্ডেশন, গ্লোবাল ল থিংকার্স সোসাইটি, ইন্ডিজিনাস পিপলস ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস, লোকাল এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড এগ্রিকালচার সোসাইটি, ন্যাশনাল রিভার আলাইন্স, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন, ইয়ুথ নেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ।
এছাড়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বেশ কিছু সংস্থা এই সমাবেশে সহ-আয়োজক হিসেবে যুক্ত রয়েছে।
সারাবাংলা/আরএফ/এমও