Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৯৭ বিদ্যালয়ে যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করলেন মুক্তিযোদ্ধারা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৫ নভেম্বর ২০২৩ ১৮:১৭

ঢাকা: ১৯৭১ সালের ১৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জন্য ঐতিহাসিক একটি দিন। এই দিনে পাক হানাদারমুক্ত হয়েছিল সিংগাইর। তাই এই দিনটিকে ‘সিংগাইর হানাদারমুক্ত দিবস’ উদযাপনের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে উপজেলা প্রশাসন।

ঐতিহাসিক দিনটি উদযাপনের লক্ষ্যে উপজেলার ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠে রণাঙ্গনের স্মৃতিকথা’ শীর্ষক বিশেষ অনুষ্ঠান। এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন প্রায় ৭০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের পক্ষ থেকে প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধার নামের তালিকা প্রেরণ করে। সে আলোকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করার জন্য নির্ধারিত বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আমন্ত্রণ জানান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। পরে নির্ধারিত বিদ্যালয়ে পৌঁছালে মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন শিক্ষার্থীরা। এরপর সমবেত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রণাঙ্গনের স্মৃতিচারণ করেন তারা।

শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের সেই ভয়াবহ সময়গুলোর বর্ণনা শুনে যেন প্রত্যেকে ফিরে যায় সেই সময়ে। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল সিংগাইর উপজেলার সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাসার বলেন, ‘সিংগাইর উপজেলা হানাদারমুক্ত হওয়া উপলক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণের আয়োজন এই প্রথম। উপজেলা প্রশাসনের এই আয়োজনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। স্বাধীনতা পরবর্তী প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানো গেলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে গড়ে তোলা যাবে।’

উপজেলার সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা বসির উদ্দিন সিংগাইর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে প্রশিক্ষণকালের বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক কষ্ট করেছি। তবে আজকে ছোট্ট শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে পেরে খুবই আনন্দিত।’

শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও উপজেলা প্রশাসনের চমৎকার এই আয়োজনের জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সৈয়দা নার্গিস আকতার বলেন, উপজেলা প্রশাসন নির্দেশনা অনুসারে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিকাশে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠে রণাঙ্গনের কথা’ প্রতিটি বিদ্যালয়ে আয়োজন করতে পেরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিপন দেবনাথ বলেন, ‘আমরা প্রায়ই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রয়াণের কথা শুনি আর ব্যথিত হই। আমাদের অধিকাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা এখন বৃদ্ধ এবং রোগাক্রান্ত। একটা সময় আসবে যখন আমরা প্রকৃত ইতিহাস জানার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পাব না। তাই সিংগাইর উপজেলা হানাদারমুক্ত হওয়ার দিবস উপলক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য এই অনুষ্ঠান আয়োজন করার উদ্যোগ গ্রহণ করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সঞ্চারিত করার প্রক্রিয়া প্রাথমিক জীবনে শুরু করতে হবে। আমি সব বীর মুক্তিযোদ্ধার দীর্ঘায়ু কামনা করি। ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৭০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে অংশগ্রহণ করেন।

সারাবাংলা/জেআর/এনএস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর