নমিনেশন যাকে দেব এক হয়ে কাজ করবেন— নেতাদের প্রতি শেখ হাসিনা
১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০৬
ঢাকা: যথাসময়ে সুষ্ঠভাবে নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জনগণের ভোট আমরা পাবো। এই বিশ্বাস-আশা আমার জনগণের উপর আছে। কাজেই জনগণের কাছে যেয়ে ভোট চাইতে হবে। আর যাকে আমরা নমিনেশন দেব, তার জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।‘
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচন পরিচালন কমিটি গঠন করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা সুনির্দিষ্টভাবেই কাজ করে যাচ্ছি এবং আমাদের পার্লামেন্টারি বোর্ড আছে। বোর্ড বসে যাদের নমিনেশন দেবে, তারাই নির্বাচন করবে। জনগণের ভোট আমরা পাবো। এই বিশ্বাস-আশা আমার জনগণের উপর আছে। এরা (বিএনপি-জামায়াত) ওই আগুন দিয়েই পোড়াবে, ধ্বংস করবে। কাজেই যাতে পোড়াতে না পারে ধ্বংস করতে না পারে সেদিকেও জনগণকে সচেতন থাকতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটিকে আমরা ১৪টা টিমে ভাগ করে, আমাদের নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা হয় তার জন্য পদক্ষেপ নেব। সেইভাবে আমরা নির্বাচন এগিয়ে নেব। জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে। স্বাধীনভাবে জনগণ যেন ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশটাই সৃষ্টি করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা হয়েছে। সাধারণত শিডিউল ঘোষণার পর সাধারণ যে আইন, সেই আইনও আমরা করে দিয়েছি। নীতিমালা-বিধিমালা করে দিয়েছি।’
তফসিল ঘোষণার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা অন্তত জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়ে ভীত না হয়ে সময়মতো সাংবিধানিক নিয়ম মেনে নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করেছে। এখন নির্বাচন যাতে যথাসময়ে সুষ্ঠভাবে হয় সেজন্য জনগণের এবং দেশবাসীর সহযোগিতা চাই।’
দেশবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করার জন্য নিশ্চিত করার জন্য আপনাদের মনমতো সরকার গঠনের জন্যই এই নির্বাচন। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। এই স্লোগান দিয়েই আপনারা ভোট দেবেন।’
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যার যার অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত যারা হবে তারাই সরকার গঠন করবে সেটাই আমাদের লক্ষ্য। গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করতে হবে। পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার কোন সুযোগ নেই। যে আদর্শ নিয়ে বাংলাদেশ জাতির পিতা স্বাধীন করেছেন, দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোঁটানো, দারিদ্র্যের হাত থেকে মানুষকে মুক্ত রাখা এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া— সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করবো।’
বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে খাদ্য মন্দার কথা বিবেচনা করে দেশবাসীকে সবাইকে যার যার যেখানে যতটুকু জমি আছে সেখানে ফসল ফলানোর আহ্বানও জানান তিনি। এসময় ছাত্রলীগ, যুবলীগ স্বেচ্ছাসেবক লীগের স্বল্পমূল্যে সবজি বিতরণ কাজেরও প্রশংসা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ইশতেহার আরও কিছুদিন পরে ঘোষণার প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আর আমরা বলেও ফেলেছি স্মার্ট বাংলাদেশ আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ঘোষণা দেব। এবার আমরা আগেই ঘোষণা দেই। ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলাই এখন লক্ষ্য।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের কাছে যেতে হবে, ভোট চাইতে হবে। যে যেখানে থাকেন। আর যাকে আমরা নমিনেশন দেব, তার জন্য সবাই এক হয়ে কাজ করতে হবে। আর বিএনপি জানি না, ওরা দোদুল্যমান। ওদের নেতাকর্মীরা ইলেকশন করতে চায় কিন্তু যারা নিজেরা করতে পারবে না তারাই তাদের ঠেকায় রাখে। এইটাই হচ্ছে বাস্তব কথা।’
এর আগে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে চেয়ারম্যান এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে সদস্য সচিব করে দলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেদিন আরও ১৪টি উপ-কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়। আজ প্রথম সভায় জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান মনোনীত করা হয় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহকে।
সারাবাংলা/এনআর/এমও