শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি
১৭ নভেম্বর ২০২৩ ২২:৩৫
ঢাকা: শ্রমিক নেতা বাবুল হোসেনের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটির উদ্যোগে ওই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয় ওই সমাবেশ থেকে।
সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভা প্রধান তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপ্রধান অঞ্জন দাস, সহসাংঠনিক সম্পাদক ও আশুলিয়া থানা সভাপ্রধান জিয়াদুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা হযরত বিল্লাল, কেন্দ্রীয় নেতা ও রানা প্লাজার শ্রমিক রুপালী আক্তার, মামুন হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভা সঞ্চালনা করেন সাংগঠনিক সম্পাদক প্রবীর সাহা।
সভায় তাসলিমা আখতার বলেন, ‘গত ১ বছর ধরে ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে আমরা আন্দোলন করে আসছি। কিন্তু আমরা দেখলাম সরকার ও মালিকপক্ষ সলা পরামার্শ করে ১২ হাজার ৫০০ টাকা মজুরি ঘোষণা করেছে। এ মজুরি শ্রমিকরা প্রত্যাখন করে রাজপথে নামলে শ্রমিকদের দাবি উপেক্ষা করে মামলা, হামলা, গ্রেফতার এবং এমননি শ্রমিক হত্যার মতো কাজ জারি রেখেছে তারা। আমরা গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি ও মজুরি বৃদ্ধিতে শ্রমিক আন্দোলনের পক্ষ থেকে যখন মজুরি প্রত্যাখ্যান করেছি তখন মালিক পক্ষ অস্থির হয়ে গেছে। শ্রমিকরা নাকি গাড়ি ভাঙচুর করে, শ্রমিকরা নাকি আগুন জ্বালায় ইত্যাদি মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে, আশুলিয়া, কোনাবাড়ি, গাজীপুর, ময়মনসিংসহ সমস্ত শ্রমিক অঞ্চলে দমন পীড়ন শুরু করেছে। এরই সর্বশেষ নজির আমরা দেখলাম গার্মেরন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদ বাবুল হোসনকে গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে। শ্রমিক অঞ্চলগুলোতে ভয় ছড়ানোর জন্য তারা এমন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আঞ্জুয়ারা, রাসেল, ইমরানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তাদের অপরাধ কী? আমাদের অপরাধ কী? আমরা শ্রমিকদের খেয়ে পরে বাঁচার স্বার্থে আন্দোলন করছি।’
তিনি মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তারা শ্রমিক আন্দোলনের মধ্যে ষড়যন্ত্র খোঁজে। রাজনীতি খোঁজে। রাজনীতির বাইরে কিছু নাই। খেয়ে পরে বাঁচার অধিকার শ্রমিকদের রাজনৈতিক অধিকার, বিক্ষোভ করা, দাবি আদায়ের লক্ষে সংগঠিত হওয়া শ্রমিকদের সংবিধানিক অধিকার। শিল্পের সমৃদ্ধির হিস্যা শ্রমিকদেরকে দিতে হবে।’
তাসলিমা আখতার বলেন, ‘মালিকরা আন্দোলন দমন করতে ভয় দেখাবে কিন্তু এ ভয়ের পাল্টা জবাব আমাদের দিতে হবে। বাবুল হোসেনকে গত ১৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় গ্রেফতার করে ২০ ঘণ্টা গুম করে রাখা হয়েছিল। এরপরে অজ্ঞাতনামা মামলায় ভাঙচুরের অভিযোগ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, রিমান্ড দেওয়া হয়েছে। শুধু বাবুল হোসেন নয় বহু শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি মজুরি পুনর্বিবেচনা করে ২৫ হাজার টাকা করার দাবি জানান এবং বাবুল হোসেনসহ সব শ্রমিক ও শ্রমিকনেতাদের মুক্তি ও সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একইসঙ্গে নিহত শ্রমিকদের এক জীবনের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে