‘বীর নিবাসে’র নির্মাণ কাজে ধীরগতি, অনিয়মের অভিযোগ
২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২৪
ঠাকুরগাঁও: পীরগঞ্জ উপজেলায় অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নির্মাণাধীন ‘বীর নিবাস’ নিয়ে অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলীর পরিবার। কাজের ধীরগতি, সময়মতো কাজ শেষ না করা, আবার কোথাও কোথাও মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের খাওয়া বাবদ অর্থ আদায়, নিম্নমানের কাজসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩৫টি ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের আগস্ট মাসে। প্রতিটি ৩৩ ফুট বাই ২২ ফুট ‘বীর নিবাস’ নির্মাণ কাজের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ টাকা। উপজেলায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ৭ জন ঠিকাদার ঘর নির্মাণ কাজের কার্যাদেশ পান। এরমধ্যে গোলাম রব্বানি নামের এক ঠিকাদার ৫টি বাড়ি নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলীর পরিবার জানায়, দরপত্র অনুয়ায়ী ২০২২ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু দেড় বছর পার হয়ে গেলেও নির্মাণ কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ইউএনও অফিস, পিআইও অফিস ও ঠিকাদারের কাছে বারবার ধর্ণা দিয়েও কোন সুরাহা মিলছে না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলীর ছেলে জুয়েল রানা ও তার ভাই বলেন, ‘গত দেড় বছর ধরে কাজ চলছে কিন্তু কাজ শেষ হচ্ছে না, মা মারা গেছেন। বাবা মারা গেলেন, গত অক্টোবর মাসের ১৯ তারিখে। বাবা-মায়ের আশা ছিল প্রধানমন্ত্রীর উপরহার ‘বীর নিবাসে’ থাকবেন কিন্তু ঠিকাদারের অবহেলায় এই নিবাসে থাকা হলো না মা-বাবার। কাজও ভালো হয়নি, এখনই ওয়াল ভেঙে যাচ্ছে, দেয়াল চুঁইয়ে পানি ভেতরে ঢুকছে।’
উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বলেন, ‘ঠিকাদার জানিয়েছেন গাড়ি ঢোকার মতো বড় রাস্তা নেই, মালামাল দূরে ফেলা হবে। যা বহন করে নিয়ে যেতে হবে। যাতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ। এরপর আজকে লেট্রেন, কালকে অমুক, পরশুদিন তমুক দিবে বলে ঘুরাতে থাকে। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রী (মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রী) দু’জনই মারা গেছেন।’
‘বীর নিবাস’ পাওয়া আরেক বীর মুক্তিযোদ্ধা দীপেন্দ্র নাথ বলেন, ‘যতদিন কাজ চলেছে ততদিন নির্মাণ শ্রমিদের খাওয়াতে হয়েছে। খাওয়া দিতে না পারলে টাকা দিতে হয়েছে।’
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক গোলাম রব্বানী এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহরিয়ার নজির বলেন, ‘বীর নিবাস নির্মাণের ক্ষেত্রে কিছু কিছু অভিযোগ একেবারেই নতুন। কাজের মান এবং অর্থ ব্যয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এমআইভি/এমও