মির্জা ফখরুলের জামিন শুনানি হয়নি, সময় চাইলেন রাষ্ট্রপক্ষ
২০ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫৬
ঢাকা: কারাগারে থাকা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুরের অভিযোগের মামলায় জামিন আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়নি। সোমবার (২০ নভেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে ঢাকার ১ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ফয়সল আতিক বিন কাদেরের আদালতে জামিন শুনানির শুরুতেই মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু অসুস্থ জানিয়ে শুনানির জন্য সময় চায় রাষ্ট্রপক্ষ। এরপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২২ নভেম্বর ধার্য করা হয়।
এ সময় মির্জা ফখরুলের পক্ষ অর্ধশতাধিক আইনজীবী এর প্রতিবাদ করেন। তারা বলেন, জামিন শুনানিতে পিপির কোনো প্রয়োজন নেই। আদালতে কোনো বিবিধ মামলার শুনানিতে পিপি উপস্থিতির প্রয়োজন পড়েনি। তারা আদালতের কাছে জামিন শুনানির জন্য প্রকাশ্যে তারিখ চান। আদালত পরে তারিখ জানাবেন বললে আদালত কক্ষে মৃদু হট্টগোল সৃষ্টি হয়। কবে পিপি শুনানি করতে পারবেন জানার জন্য ফোন করা হলে পিপির মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।
বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে আদালতে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়। বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা প্রকাশ্যে জামিন শুনানির তারিখ ঘোষণা ছাড়া এজলাস ছাড়তে অস্বীকৃতি জানান। এ মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দিনের অন্য মামলা শুনানি করতে বাধা দেন আইনজীবীরা। এ অবস্থায় ৩টা ১৪ মিনিটে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই ১০ মিনিট বিরতি দিয়ে বিচারক ফয়সল আতিক বিন কাদের এজলাস থেকে নেমে যান। এরপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ২২ নভেম্বর ধার্য করা হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে জামিন শুনানিতে ছিলেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মো. মোহসিন মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান, ওমর ফারুক ফারুকী, ইকবাল হোসেন, হযরত আলী, জয়নুল আবেদীন মেজবাহপ্রমুখ।
গত ২ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মির্জা ফখরুলের জামিনের আবেদন দাখিল করেন তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদদীন মোজবাহ। জামিন শুনানির জন্য সোমবার তারিখ ধার্য করেছিলেন আদালত।
এর আগে, ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে হত্যা ও গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর তাকে আদালতে হাজির করা হলে ঢাকার মেট্রোপলিটন মাজিস্ট্রেট আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, আহমেদ খান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী, সামসুজ্জামান দুদু, এয়ার ভাইস মার্শাল (অব) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, ভিপি জয়নাল, মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ফরহাদ হালিম ডুনার ও সদস্য সচিব আমিনুল হক।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি এর পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন এর শীর্ষ নেতা কর্মীরা হাতে লাঠিসোঁটা, লোহার রড, ইট পাটকেল ও ককটেলসহ বিভিন্ন অস্ত্রেসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনের সামনে বেআইনি সমাবেশ করে রাষ্ট্র বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দেয় ও মিছিল করতে থাকে। ওই সময় তরা বৈশাখী পরিবহনে বাসসহ একাধিক বাস, পিকআপ ভাঙচুর করে অনুমানিক ২০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করে। এসময় মিছিলকারীরা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হাতে লাঠিসোঁটা, লোহার রড, ইটপাটকেল এবং ককটেলসহ বেআইনি সমাবেশ করে রাষ্ট্র বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে রাস্তায় জনসাধারণের ও মানবাহনের চলাচলে প্রতিবন্ধকরা সৃষ্টি করে।
সারাবাংলা/এআই/ইআ