Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বেনাপোলে কমেছে লাগেজ পার্টির দৌরাত্ম্য, বেড়েছে যাত্রীসেবা

শেখ নাছির উদ্দীন, লোকাল করেসপন্ডেন্ট
২২ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৮

বেনাপোল: বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে লাগেজ বাণিজ্য শূন্যে নামিয়ে আনা, রাজস্ব আয় বৃদ্ধিসহ যাত্রী সেবার মানও বেড়েছে। বর্তমান কাস্টমস চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে দক্ষ কর্মকর্তারা দায়িত্ব থাকার ফলে বহিঃর্গমন ও আন্তঃগমন পাসপোর্ট যাত্রীদের সেবার মান দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত তিন মাসে ২৫২৪টি পণ্য জব্দ করে (ডিএম) মামলা দেওয়াসহ সাড়ে ১৯ লাখ টাকার স্পট ট্যাক্স আদায় হয়েছে। এছাড়া ব্যাগেজ রুল মানার কারণে সাধারণ যাত্রীরা দীর্ঘ লাইন এড়িয়ে দ্রুত নির্বিঘ্নে কাস্টমসের কাজ শেষ করে বের হতে পারছেন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, চোরাচালানি বন্ধসহ সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি ও পাসপোর্ট যাত্রীদের ব্যাগেজ রুল অনুযায়ী সেবা দিতে পাসপোর্ট যাত্রীদের স্ক্যানিংয়ে লাগেজ এবং যাত্রীদের হ্যান্ডমেটাল ডিটেক্টর দিয়ে শরীর তল্লাশি করা হচ্ছে। ভারত হতে আসা যাত্রীরা ব্যাগেজ রুল অনুযায়ী বেশি পণ্য আনলে তাদের পণ্য সরাসরি ডিএম করা হচ্ছে।

বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে কর্মরত রাজস্ব কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান ও হাবিবুর রহমান জানান, এভাবে যাত্রীদের তল্লাশির ফলে লাগেজ পার্টির দৌরাত্ম্য কমেছে এবং রাজস্ব আয় দ্বিগুণ হচ্ছে। গত ৮ নভেম্বর ইমিগ্রেশন থেকে ৬৯৫ গ্রাম সোনাসহ ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীও আটক করেছেন।

সরজমিনে বেনাপোল কাস্টমস ইমিগ্রেশন ঘুরে দেখা গেছে, ভারত হতে আসা যাত্রীদের ল্যাগেজ স্ক্যানিং করার পর সন্দেহভাজন পুরুষ যাত্রীদের তল্লাশি এবং নারী যাত্রীদের আলাদা রুমে নিয়ে তল্লাশি করা হচ্ছে। যাতে কেউ গোপনে কোনোভাবেই অবৈধ পণ্য নিয়ে ভারতে যাওয়া এবং ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনে বর্তমানে প্রথম শিফটে ডিউটি করছেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নাঈম উদ্দীন, দিদারুল আলম ফারুকী ও নূরে আলম এবং ২য় শিফটে ডিউটি করছেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা আবু ইউসুফ, সাবেরা শারমিন, সুমনা হক এ্যানি ও শহীদুল্লাহ। এসব কর্মকর্তারা পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানি কমাতে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ভারতফেরত খুলনার যাত্রী মারিয়া বেগম বলেন, ‘কাস্টম অফিসারদের ব্যবহারে খুবই মুগ্ধ হয়েছি। কোনো হয়রানি ছাড়ায় শুধুমাত্র ব্যাগেজ স্ক্যানিং করে কাস্টমসের কাজ শেষ করেছি।’

বিজ্ঞাপন

আরেক যাত্রী দুলাল চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের ২ জন এই প্রথম ভিসা নিয়ে ভারতে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। বেনাপোল কাস্টমস ইমিগ্রেশন দিয়ে সহজে পারাপার হওয়া যায় এজন্য সাতক্ষীরা ঘোজাডাংঙ্গা বর্ডার দিয়ে না গিয়ে বেনাপোল দিয়ে বের হয়েছি। দায়িত্বরত কাস্টমস অফিসাররা আমাদের সঙ্গে থাকা পরিবারের জন্য কেনা মালামাল স্ক্যানিং করে ছেড়ে দেন। কিন্তু সঙ্গে দুই কেজি দুধ ছিলো, তা রেখে দিয়েছেন। এছাড়া কোনরকম ঝামেলা ও হয়রানি ছাড়ায় অতি দ্রুত কাস্টমসের সেবা পেয়েছি।’

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেনাপোল ইমিগ্রেশনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পণ্যর রাজস্ব ফাঁকি দিতে বাংলাদেশ এবং ভারতের দুই পাশে বড় ‘লাগেজ সিন্ডিকেট’ রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে সকাল এবং বিকালের দুই সময়ে দু’জন ননটেকার অফিসার থাকার কারণে কোন সুযোগ নিতে পারছেন না লাগেজ ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, ‘বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন ভবনের নিরাপত্তা ও পাসপোর্ট যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে ২৭টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে এখানে অবৈধভাবে পণ্য পারাপার ও চোরাচালানের কোনো সুযোগ নাই। ব্যাগেজ রুল না মেনে ভারত থেকে বেশি পণ্য নিয়ে এলে, তাদের পণ্য ডিএম করে রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে।’

সারাবাংলা/এসএনইউ/এমও

বেনাপোল বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট যাত্রীসেবা লাগেজ পার্টি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর