গুজব ছড়াতে বিএনপি-জামায়াত নিয়মিত পয়সা দেয়: তথ্যমন্ত্রী
২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:০২
ঢাকা: গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত নিয়মিত পয়সা দেয় বলে অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে গুজব প্রতিরোধ সেল এবং ফ্যাক্টস চেকিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। এসময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিদেশে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে গুজব রটানো হয় সে বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন–এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বসে নানা ধরনের গুজব অনেকে ছড়ায়। যেমন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়েও অনেক গুজব ছড়ানো হয়েছে। এগুলো বিদেশ থেকে ছড়ানো হয়েছে। আমরা এসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল। তবে আপনারা দেখেছেন আগের তুলনায় এগুলো অনেকটা কমেছে।
তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে এই গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত তাদের নিয়মিত পয়সা দেয়। এগুলো তাদের এজেন্ট। আবার পয়সা না দেওয়া ও কম দেওয়ার প্রেক্ষাপটে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে, সেটার অডিও ভাইরাল হয়েছে। দেশের বিরুদ্ধে গুজব রটানোর জন্য যদি একটি রাজনৈতিক দল রটনাকারীদের পয়সা দেয়, এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।
গুজব রটনাকারীদের চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অনেক জায়গায় তাদের নোটিফাই করা হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে কয়েক জায়গায় মামলাও হয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দেশের আইন অনুযায়ী মামলা করতে আমাদের দলের নেতাদের বলা হয়েছে।
গুজব রটনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এ বিষয়ে আপনার দল বা সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গুজব রটনা করলে দুটি চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবিলা করি। দেশের মধ্যে থেকে যখন কেউ গুজব রটায় তখন তার বিরুদ্ধে মামলা হয় আইসিটি আইনে। তখন আবার বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ হয়, কেন মামলা হলো।
ড. হাছান বলেন, দেখেন গুজব তো অনলাইনে বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়। সেটা তো ডিজিটাল মাধ্যম, আর সেজন্য ডিজিটাল মাধ্যমে মামলা হবে। সেখানে মামলা হলে অনেকেই চেঁচামেচি করে যে কেন মামলা হলো এবং গ্রেপ্তার করলে তো আরও বেশি কথাবার্তা হয়। শেষে কি করেছে সেটি তখন ঢাকা পড়ে যায়। এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আরেকটি হলো আমাদের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। যেকোনো মামলা ৫/৭ বছরের আগে হয় না। দ্রুত বিচার আইনে মামলা করলেও এক-দুই বছর লাগে। এটা যে শুধু আমাদের দেশে তা নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই এমন। কারো কারো শাস্তি হয়নি তা নয়। তবে বিচার প্রক্রিয়া যেহেতু দীর্ঘ তাই একটু সময় লাগে।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাবো কেউ যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধ করে থাকে, সেটা যদি আমিও হই বা যে কেউ হোক সে যদি অপরাধ করে থাকে তার তো বিচার হওয়া প্রয়োজন, তা না হলে এই অপরাধ কোনোদিন বন্ধ বা কমানো যাবে না। আপনারা জানেন আইন সংশোধন করা হয়েছে অনেক সহজীকরণ করা হয়েছে।
যেসব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে সেসব স্বত্ত্বাধীকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আপনাদের কোনো আলাপ আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে সেটা একটা বড় প্রতিবন্ধকতা। ভারতে আইন করেছে সকল সার্ভিস প্রোভাইডারদের বা সাসাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে নিবন্ধিত হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউকে আইন করেছে সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। আমাদের দেশে আইনটা এখনও হয় নি। আমরা তাদের সাথে আলোচনা করছি। বার বার তাগাদা দিচ্ছি এবং এখানে অফিস খোলার কথা বলছি। পাশাপাশি বাংলাদেশি আইনে নিবন্ধিত হওয়ার কথা বলছি। কিন্তু আমাদের এখানে নিবন্ধিত হতে হবে সেই বাধ্যবাধকতা আরোপ আইনটি এখনও হয়নি। সেটি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সাথে কথা বলেছি, এখন তো আইন করার সময় নেই। আগামী সংসদে এ বিষয়ে আইন হবে বলে আমি আশা করছি।
সাধারণ মানুষ কীভাবে ফ্যাক্টস চ্যাকিং করতে পারবে- সে বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে পিআইডি কাজ করতে পারে। আসলে একটি গুজব যখন ছড়ায় তখন আমরা বুঝতে পেরেও কেউ কাউন্টার পোস্ট দেয় না। ফলে এটা ছড়াতে থাকে। গুজব তো দুই তিনজনে ছড়ায়, সবাই মিলে যদি কাউন্টার পোস্ট দেয়া হয়; তাহলে গুজব ছড়ায় না। সে বিষয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন।
সারাবাংলা/জেআর/এনইউ