কারাতে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুরের নিষেধাজ্ঞা বহাল
২১ নভেম্বর ২০২৩ ২২:০৪
ঢাকা: মানবপাচারের অভিযোগের ঘটনায় বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে অব্যাহতি এবং পাঁচ বছরের জন্য কারাতে ফেডারেশনের কার্যক্রমে নিষিদ্ধের বিষয়বস্তুর ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন চেম্বার জজ আদালত। এর ফলে মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সহসভাপতি হিসেবে কাজ করতে পারবে না এবং কারাতে ফেডারেশনও উক্ত পদে নতুন কাউকে বসাতে পারবে না।
মোস্তফিজুর রহমানকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে কারাতে ফেডারেশনের আপিলের (সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল) শুনানি নিয়ে গত ১৫ নভেম্বর চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ডিসেম্বর মাসে এ বিষয়ে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।
আদালতে বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম ও ব্যারিস্টার মাহিন এম. রহমান। আর মোস্তাফিজুর রহমানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার মাহিন এম. রহমান। তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড় সাজিয়ে মানব পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সহসভাপতির পদ থেকে মোস্তাফিজুর রহমানকে অব্যাহতি এবং পরবর্তী পাঁচ বছর কারাতে ফেডারেশনের সকল প্রকার কার্যক্রমে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর মোস্তাফিজুর রহমান কারাতে ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করলে গত ১৬ অক্টোবর কারাতে ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন হাইকোর্ট।’
পরবর্তীতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে কারাতে ফেডারেশন সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল করেন। কারাতে ফেডারেশনের আপিল শুনানি নিয়ে গত ১৫ নভেম্বর চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশের বিষয়বস্তুর ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন।
ব্যারিস্টার মাহিন এম. রহমান বলেন, ‘স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত মোস্তাফিজুর রহমান বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি হিসেবে কাজ করতে পারবে না। পাশাপাশি বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনও ওই পদে নতুন কাউকে বসাতে পারবে না।’
জানা গেছে, গত মার্চে ওপেন কাপ আন্তর্জাতিক কারাতে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য একটি দল দক্ষিণ ইউরোপের দেশ মালটায় যায়। নারায়ণগঞ্জের গলাচিপা এলাকার বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন ওই কন্টিনজেন্টের দলনেতা। বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশন ও মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনকে অবহিত না করেই এ দল পাঠানো হয়। যে কারণে মোস্তাফিজুর রহমানকে মার্শাল আর্ট কনফেডারেশন থেকে কারণ দর্শাতে বলা হয়। মালটায় যাওয়া কন্টিনজেন্টের সদস্যদের পাসপোর্টসহ কারাতে ফেডারেশনে হাজির করার কথা বলা হলেও তা করতে পারেননি মোস্তাফিজুর রহমান। মালটায় খেলোয়াড় সাজিয়ে মানবপাচারে মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনের কাগজপত্র জালিয়াতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
মোস্তাফিজুর রহমান মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। মানবপাচারের ঘটনা খতিয়ে দেখতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) থেকে মার্শাল আর্ট কনফেডারেশনকে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছিল।
এরপর মানবপাচারের অভিযোগের ঘটনায় বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সহ-সভাপতি পদ থেকে মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে অব্যাহতি এবং পাঁচ বছরের জন্য কারাতে ফেডারেশনের কার্যক্রমে তাকে নিষিদ্ধ করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে