Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৬ বিচারপতিই শুনতে পারবেন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৫৮

ঢাকা: বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন ছয় বিচারপতির বেঞ্চ শুনতে পারবেন বলে সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন আপিল বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপিল বিভাগে যখন যে বেঞ্চ থাকবে, সেটাই পূর্ণাঙ্গ আদালত।’

এর আগে, ১৬ নভেম্বর বহুল সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন ছয় জন বিচারপতির বেঞ্চ শুনতে পারবেন কি না, এ বিষয়ে আদেশের জন্য আজকের (২৩ নভেম্বর) দিন ধার্য করা হয়।

ওইদিন এ বিষয়ে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার জন্য সময় আবেদন করেন রিটকারী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

তিনি সময় আবেদনের সময় প্রশ্ন উপস্থাপন করে বলেন, আপিল বিভাগের সাতজন বিচারপতি ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন আপিল বিভাগে ছয় জন বিচারপতি রয়েছে।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের কাস্টমস অনুযায়ী কোন রায়ের রিভিউ সম সংখ্যক বিচারপতি বা বেশি বিচারপতির বেঞ্চে শুনে থাকেন। এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনি যে প্রশ্ন উপস্থাপন করেছেন আমরা এখনই এ বিষয়ে সিনিয়রদের আইনজীবীদের মতামত নিতে চাই। এরপর আপিল বিভাগে একে একে কয়েকজন সিনিয়র আইনজীবী মতামত তুলে ধরেন।

এর মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আজমালুল হোসেন কেসি, প্রবীর নিয়োগী, মুরাদ রেজা, তানজীবুল আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ তারা সবাই আদালতকে বলেন, এখন আপিল বিভাগে ৬ জন বিচারপতি রয়েছেন। ছয় জন বিচারপতি নিয়েই এখন আপিল বিভাগের ফুল বেঞ্চ। তাই ছয় জন বিচারপতির যোড়শ সংশোধনীর রিভিউ শুনতে বাধা নেই।

বিজ্ঞাপন

তবে এর বিপক্ষে মত দেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কামরুল হক সিদ্দিকী।

তিনি বলেন, সম সংখ্যক বিচারপতি বা তার বেশি বিচারপতির বেঞ্চে রিভিউটা শুনানি হওয়াই শ্রেয়। ৬ বিচারপতির বেঞ্চে এই রিভিউ শুনানি হলে নতুন প্রশ্নের সৃষ্টি হতে পারে।

মতামত নেওয়া শেষে আপিল বিভাগ এ বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) দিন ধার্য করেন।

একইসঙ্গে মতামতের সপক্ষে রেফারেন্স সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে আদালতে জমা দিতে বলেন।

এর আগে, এ বিষয়ে যে শুনানির জন্য গত ৯ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

তারও আগে গত ২ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ বিষয়ে শুনানির জন্য ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করেছিল রাষ্ট্রপক্ষ। সেই থেকে আলোচিত এ মামলাটি রিভিউ শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধানে উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ছিল জাতীয় সংসদের কাছে। ১৯৭৫ সালের ২৪ জানুয়ারি সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত করা হয়। ১৯৭৭ সালে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে ন্যস্ত করা হয়।

২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে এ অপসারণ ক্ষমতা আবার জাতীয় সংসদের হাতে ন্যস্ত হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

ষোড়শ সংশোধনী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর