পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনায় যা ছিল
২৪ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০৯
ঢাকা: তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি ও অন্যান্য নদীর পানি বণ্টনের পাশাপাশি ভিসা দ্রুতিকরণ, বাণিজ্য বাধা দূর করা এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাধাহীন সরবরাহের মতো বিষয়গুলো উঠে আসে বাংলাদেশ-ভারতের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে। জোর দেওয়া হয় বাংলাদেশ ও ভারত বৃহত্তর সমৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা আরও গভীর করার ওপর।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক নয়াদিল্লিতে ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত হয়। ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দুই দেশের পররাষ্ট্র সচিব। সেখানে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা ঢাকাকে দিল্লির বিশ্বস্ত প্রতিবেশী হিসেবে অভিহিত করেছেন। বৈঠকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপর জোর দেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। দুই দেশের মধ্যে চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। গ্লোবাল সাউথ এবং জি-২০ ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেওয়ায় ধন্যবাদ জানান তিনি। বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ভারতের নেতৃত্বের প্রতিশ্রুতির কথাও জানান কোয়াত্রা। বৈঠকে দুই দেশের অধিক সমৃদ্ধির জন্য সহায়তা গভীর করার ওপর জোর দেওয়া হয় বলে জানানো হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বৈঠকে তিস্তা নদীর পানি বণ্টন চুক্তি ও অন্যান্য নদীর পানি বণ্টনের বিষয়টি উত্থাপন করেন। এ ছাড়া বাণিজ্য বাধা দূর করা এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বাধাহীন সরবরাহের ওপর জোর দেন। বাংলাদেশে ভিসা দ্রুততার সঙ্গে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতের সহায়তা চান।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির অধীনে একমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার নেতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ‘জি- ২০ লিডারস সামিটে’ যোগদানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। উভয় পররাষ্ট্র সচিব বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালের অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন যে এই ধরনের সহযোগিতা শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাস্তব ফলাফল প্রতিফলিত করে।
দুই পররাষ্ট্র সচিব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযোগ, আঞ্চলিক পাওয়ার গ্রিড সংযোগ, নিরাপত্তা ও পানি সংক্রান্ত সমস্যা, কনস্যুলার ও সাংস্কৃতিক বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর জোর দেন। উভয়পক্ষ পুনর্ব্যক্ত করেছে যে দুটি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর একটি শান্তিপূর্ণ সীমান্তে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা উচিত।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর ও প্রসারিত করার অনুরোধ জানান। রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভারতের সহযোগিতাও চেয়েছেন তিনি।
পররাষ্ট্র সচিব শনিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকায় ফিরবেন।
সারাবাংলা/জেআর/একে