মানিকগঞ্জের ৩টি আসনে নৌকার দাবিদার ২৫ জন
২৬ নভেম্বর ২০২৩ ১২:৫৮
মানিকগঞ্জ: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী বছরের ৭ জানুয়ারি। সারাদেশের মতো মানিকগঞ্জ আওয়ামী লীগের মধ্যে বইছে ভোটের উৎসব। জেলার তিনটি আসনে নৌকার দাবি করছেন ২৫ জন দলীয় নেতারা। এদের মধ্যে রয়েছেন মন্ত্রী-এমপি, রাজনৈতিক নেতা ও উপজেলা পরিষদের ৪ জন চেয়ারম্যান। এরা সবাই দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন এবং জমাও দিয়েছেন।
২৫ জনের মনোনয়ন দৌড়ে বর্তমান সংসদ সদস্যরা এগিয়ে থাকলেও ১টি আসন নতুন মুখ আসতে পারে এমন গুঞ্জন চারিদিকে। দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে আনতে শেষ মুহূর্তে দলীয় হাইকমান্ডেও দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছেন তারা।
তবে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকেরই সারা বছর নির্বাচনী এলাকায় দেখা মেলে না।
মানিকগঞ্জের তিনটি আসনে নৌকার জন্য ২৫ জন লড়াই করলেও সবচেয়ে বেশি প্রার্থী মানিকগঞ্জ-২ আসন, অর্থাৎ মমতাজ বেগমের নির্বাচনী এলাকায়। এই আসনে ১২ জন নৌকা পেতে দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছেন। এখানে এমপি মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে স্লোগান তুলছেন মনোনয়ন প্রত্যাশী বাকি ১১ জন। যার ফলে নানা কারণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে তিনি।
এখানে মমতাজ বেগমসহ দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছেন জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ শিল্পপতি দেওয়ান জাহিদ আহমেদ টুলু, তারই আপন চাচাতো ভাই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাবেক ক্রীড়া ও যুব সম্পাদক দেওয়ান সফিউল আরেফিন টুটুল, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বর্তমান সিংগাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার সালাম চৌধুরী।
এছাড়া মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক তারিকুর রহমান চৌধুরী, মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগসহ সভাপতি ও বর্তমান হাটিপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মনির হোসেন, সাবেক এমপি সামসুদ্দিন আহম্মেদের ছেলে সাহাবুদ্দিন আহমেদ চঞ্চল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক উপ কমিটি সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী প্রজন্ম লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সারয়োয়ার আলম, কেন্দ্রীয় হকার্স লীগের আহ্বায়ক জাকারিয়া হানিফ ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সদস্য মো. তানভীর আহাম্মেদও মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।
এই আসনে দলীয় প্রার্থী সিলেকশনের উপর নির্ভর করছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে কি থাকবে না। তবে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও কেউ কেউ নির্বাচন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
মানিকগঞ্জ-১ আসনের দুইবারের সংসদ সদস্য জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, বিসিবির পরিচালক দু’বারের এমপি এএম নাঈমুর রহমান দুর্জয়সহ দলীয় মনোনয়ন কিনেছেন ৮ জন। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আনোয়ারুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মানিকগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, জেলা আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সালাউদ্দিন মাহমুদ জাহিদ, শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও শিবালয় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম রাজা, দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও জেলা পরিষদের সদস্য প্রভাষক মো. শফিকুল ইসলাম শফিক ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ- কমিটির সদস্য মো. শিহাব উদ্দিন।
তবে দলীয় মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হলে এই আটজনের যে কেউ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন চলছে।
তবে মানিকগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক রয়েছেন সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায়। তিনিসহ মোট পাঁচজন দলীয় মনোনয়ন কিনলেও নানা সমীকরণে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পাল্লা ভারি।
এই আসনে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিপরীতে মনোনয়ন পত্র কিনেছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভেকেট বাদরুল ইসলাম খান বাবলু, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার বিষয়ক সম্পাদক ও এফবিসিআইয়ের সদস্য তাবারাকুল তোসাদ্দেক হোসেন খান টিটু, আমেরিকার মিসৌরি স্টেট আওয়ামী লীগ সভাপতি ড. মো. রফিক খান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার খন্দকার তানভীর মান্নান।
সারাবাংলা/এমও