‘অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িতদের ফুলের মালায় বরণের সুযোগ নেই’
২৬ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:১১
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যারা অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত বা যারা হুকুমদাতা বা যারা অর্থদাতা তাদের কি আমরা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেবো? যদি তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা না নেই তাহলে তো জ্বালাও-পোড়াও চালাতেই থাকবে। কাজেই যারা এই মানুষকে পোড়াবে, মানুষের সম্পদ নষ্ট করবে, জাতীয় সম্পদ নষ্ট করবে তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর বন্ধ না করলে জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে যা ব্যবস্থা নেওয়ার সেটা আমাদের নিতেই হবে।’
রোববার (২৬ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী সরকারি বাসভবন গণভবনে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যেহেতু (সামনে) জাতীয় নির্বাচন। এটা সংবিধানের বাধ্যবাধকতা যে, আগামী জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তাই নির্বাচনের জন্য তফসিলও ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের একটা আকাঙ্খা ছিল, নভেম্বর মাসের মধ্যে স্কুলের পরীক্ষাগুলো শেষ হয়ে যাবে।’
‘কিন্তু দুভার্গ্যের বিষয় হল, আমরা কিন্তু কারও কোনও রাজনৈতিক অধিকারে কখনো হস্তক্ষেপ করিনি। এমনকি ২০১৩ সাল থেকে যারা অগ্নিসন্ত্রাস, মানুষ পোড়ানো… প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি মানুষকে পুড়িয়েছে, সেখানে কয়েক হাজার মানুষ মারাও গেছে… সেসময় যারা আসামি ছিল, যারা পলাতক ছিল; যখন এই বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করেছে; তারা বহাল তবিয়তে এসেছে। তারা শান্তিপূর্ণ সভা যখন করেছে তাদের বাধা দেওয়া হয়নি। কিন্তু যখনই তারা আবার জ্বালাও-পোড়াও শুরু করলো, বিশেষ করে ২৮ অক্টোবর থেকে তাদের যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সেখানে প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, সেখানে ভাঙচুর করা; বিচারপতিদের বাড়িতে হামলা; পুলিশকে পিটিয়ে পিটিয়ে মারা; একটা বীভৎস চিত্র, সেগুলি চোখে দেখা যায় না; বাসে-গাড়িতে আগুন; এমনকি রেললাইন কেটে রেখে দেওয়া হয়েছে… আমাদের স্থানীয় জনগণ সচেতন ছিল এবং তারা যথাযথ স্থানে অবহিত করেছে বলে দুর্ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া গেছে’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফলে ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে একটা ভীতির সৃষ্টি করেছে। অথচ তারা যখন সঠিকভাবে রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে ততক্ষণ তাদের কিন্তু তাদের কোনো অসুবিধা ছিল না এবং তাতে বিএনপি বা তাদের দলগুলির ভাবমূর্তিও আরও বৃদ্ধি পেয়েছিল। কিন্তু এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার পর এখন জনগণের কাছ থেকে তারা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই আমরা দেখি অনেকেই বলেন এদের কেন এ্যারেস্ট করা হল? কিন্তু তারা এটা বলে না এরা অগ্নিসন্ত্রাসী, পুলিশ হত্যা করেছে, মানুষ হত্যা করেছে। এখন তো ডিজিটাল যুগ। সাধারণ মানুষেই ভিডিও তোলে। সাথে সাথেই ছবি পাওয়া যায়।’
প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘যারা এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা আমাদের নিতে হবে মানুষের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে। জনগণের সুরক্ষা দিতে। জনগণের নিরাপত্তা দিতে এবং সেটাই আমাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী করে যাচ্ছে এবং করা হবে। কারণ যারা এই মানুষকে পোড়াবে মানুষের সম্পদ নষ্ট করবে, জাতীয় সম্পদ নষ্ট করবে তাদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে করি না। আমি আশা করি এদের অন্তত একটু সুবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা এগুলি বন্ধ করবে।’
প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ প্রকাশ করে বলেন, ‘শুধু দুঃখ লাগে যে, আমাদের ছেলেমেয়েগুলি তাদের ফাইনাল পরীক্ষা তারা সেটা দিতে পারল না। এর জন্য আমাদের একটা ব্যবস্থা চিন্তা করতে হবে। আমরা চাই আমাদের ছেলেমেয়েরা উন্নত জীবন পাক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের সৈনিক হিসাবে নিজেদের গড়ে তুলবে।’
সকালে গণভবনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলাফলের সারসংক্ষেপ হস্তান্তর করেন। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, সব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ফলাফল পৌঁছে দেন।
সারাবাংলা/এনআর/এমও