বসুন্ধরায় আইফোন জব্দের অভিযানে অবরুদ্ধ শুল্ক গোয়েন্দারা
১৯ মে ২০১৮ ১৪:২৭ | আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ১৭:৫৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা : ঢাকার পান্থপথে বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অবৈধ মোবাইল সেট জব্দ করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন শুল্ক গোয়েন্দারা। শনিবার (১৯ মে) দুপুরে এই অভিযান যাওয়ার পর শুল্ক গোয়েন্দাদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ( এডিজি) কাজী জিয়াউদ্দিনসহ কর্মকর্তারা ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভের মুখে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
শনিবার সকাল ১১টায় বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযানে নামেন গুল্ক গোয়েন্দারা। এ সময় ১০০টি আইফোন জব্দ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। জব্দ হওয়া ওই ফোনগুলোর বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা।
শপিং মল থেকে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা ১০০ টি আইফোন জব্দের পর শুল্ক গোয়েন্দাদের টিমটি ফিরে যাচ্ছিল। এ সময় বসুন্ধরা মার্কেট প্রাঙ্গণে বাধার মুখে পড়েন তারা।
দোকান কর্মচারীদের তোপের মুখে এডিজি জিয়া উদ্দিন গাড়ি ঘুরিয়ে কারওয়ানবাজার মোড়ের দিক যেতে চাইলে সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে বসে পড়েন দোকানের কর্মচারীরা।ব্যারিকেডের মুখে শুল্ক গোয়েন্দা জিয়া উদ্দিন ও তার টিম প্রায় দুই ঘণ্টা আটকা থাকেন। এ সময় দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
দুপুর ৩টায় এডিজির গাড়িসহ বহরে থাকা গাড়িগুলো রাস্তার পাশে সাইড করে রাখেন র্যাবের সদস্যরা। যান চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য র্যাব সদস্যরা রাস্তার ব্যারিকেড সরিয়ে দেন। ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়ার পর রাস্তায় যান চলাচল শুরু হলেও কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ীরা আবার রাস্তা আটকে দেন।
পরিস্থিতির সমাধানের জন্য বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিকেল ৪টায় আলোচনায় বসেছেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও র্যাব-পুলিশের সদস্যরা। ব্যবসায়ীদের দাবি জব্দ হওয়া আইফোনগুলো ফেরত দিলেই কেবল তারা অবরোধ তুলে নেবেন।
শনিবার সকালে বসুন্ধরা সিটির ১৪ টি দোকানে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দারা। এ সময় দুটি দোকান থেকে ১০০টি আইফোন জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য ৮০ লাখ টাকা।
এডিজি জিয়া উদ্দিন জানান, এটি শুল্ক গোয়েন্দার নিয়মিত অভিযানের অংশ। গোপন সংবাদ ছিল একটি চক্র শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আইফোন নিয়ে এসে বিক্রি করছে। এখানে অভিযান চালিয়ে ১০০টি আইফোন জব্দ করা হয়।
মোট ১৪ টি দোকানে অভিযান চালালেও আইফোন পাওয়া যায় মাত্র দুইটিতে। মোবাইল গেজেট জোনে মেলে ১০ টি আইফোন, অন্যটি ফোন এক্সচেঞ্জে মেলে ৯০টি আইফোন। বাকি দোকানগুলোতে আইফোন সেট পাওয়া যায়নি। সেখানে শুধু মোবাইল ফোনের মোড়ক পাওয়া গেছে। অভিযান টের পেয়ে ওই মোড়কে থাকা আইফোনগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে দাবি শুল্ক গোয়েন্দাদের।
শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকান কর্মচারী বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে এই আইফোনগুলো আমাদের কাছে আসে। যারা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনে তাদের না ধরে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। তারা যদি এগুলো বিক্রি না করে তাহলে তো আমরাও কিনতে পারতাম না। যারা ব্ল্যাকে মোবাইল ফোন বিক্রি করে তাদের ধরা উচিত।’
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দার এডিজি জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘যেখান থেকেই আইফোন কেনা হোক না কেন তার সঙ্গে বৈধ কাগজপত্র থাকতে হবে। জব্দ হওয়া ১০০টি মোবাইল ফোনের কোনো কাগজপত্র নেই। তাই এগুলো শুল্ক গোয়েন্দা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।’
‘অভিযান ঘিরে গুটিকয়েক যুবক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আমরা তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/ইউজে/একে