সন্তানকে সপ্তাহে ২ দিন দেখতে পারবেন আমেরিকান বাবা
২৮ নভেম্বর ২০২৩ ২১:০৩
ঢাকা: বাংলাদেশি মায়ের কাছে থাকা তিন বছরের সন্তানকে আমেরিকান বাবা সপ্তাহে দুদিন ৭ ঘণ্টা করে দেখতে যেতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দুই শিশু সন্তানকে দেখতে চেয়ে হাজিরের জন্য আমেরিকান বাবা গ্যারিসন লুটরেলের করা রিটের আবেদনে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) এমন আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে গ্যারিসনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ ও ব্যারিস্টার সজীব মাহমুদ আলম। শিশুদের মা ফারহানা করিমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
পরে রুহুল কুদ্দুস কাজল জানান, শনি ও মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত বাচ্চাকে দেখার জন্য বাবাকে অনুমতি দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে উত্তরা ক্লাবে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে।
মা তার বাচ্চা নিয়ে উত্তরা ক্লাবে আসবেন। বাবা সেখানে দেখা করবেন। শুধু বড় বাচ্চার ক্ষেত্রে। যার তিন বছর বয়স। ছোট বাচ্চার বয়স মাত্র এক মাস। তার কল্যাণের কথা চিন্তা করে আরেক জায়গায় এনে দেখা করার জন্য বলা হয়নি।
এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১৬ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আইনজীবী সজীব মাহমুদ জানান, গ্যারিসন রবার্ট লুটরেল আমেরিকার নাগরিক। ২০১৮ সালে বাংলাদেশি নাগরিক ফারহানা করিমকে বিয়ে করেন। তাদের আমেরিকাতে বাড়ি আছে। প্রথমে একটি বাচ্চা হয়। কিন্তু এ বছর জুন মাসে ওনার স্ত্রী বাংলাদেশে চলে আসেন। এসে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর উনি উদ্বিগ্ন হয়ে যান। এ ছাড়া পুরান ঢাকার একটি কাজী অফিস থেকে তালাকনামার নোটিশ আমেরিকার ঠিকানায় পাঠান তার স্ত্রী। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হন তার স্ত্রী। কিন্তু নোটিশ দেখে অক্টোবর মাসে গ্যারিসন বাংলাদেশে চলে আসেন। এসে চেষ্টা করেছেন ফারহানার সঙ্গে যোগাযোগ করতে। সেটি না পেরে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন গ্যারিসন।
আইনজীবী সজীব মাহমুদ বলেন, ‘তালাকের প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জ করে দেওয়ানি মামলা করেছি। দুই শিশুর হেফাজত নিয়েও পারিবারিক আদালতে মামলা করেছি। আর বাচ্চাকে দেখতে না পেরে হাইকোর্টে রিট করি।’
গত ২০ নভেম্বর প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট দুই শিশুকে নিয়ে হাজির হতে ফারহানাকে নির্দেশ দেন। সে অনুসারে তিনি হাজির হন।
তালাক নোটিশের বিষয়ে আইনজীবী ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ‘একটি তালাক নোটিশ দিয়েছেন, যদিও সেটা কার্যকরী হবে না। কারণ বিয়ে হয়েছে আমেরিকান আইনে। সেখানে রেজিস্ট্রি হয়েছে। তাই বাংলাদেশি কাজী মুসলিম পারিবারিক আইনে এটি নিবন্ধন করতে পারে না।’
আইনজীবী সজীব মাহমুদ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘গ্যারিসন জন্মগতভাবে খ্রিস্টান হলেও ফারহানার সঙ্গে বিয়ের পূর্বে ইসলাম ধর্ম পালন করা শুরু করেন। এখনও তিনি ইসলাম ধর্ম পালন করছেন। ওনার নাম এবং অন্যান্য কিছু বিষয় এখনও সম্পূর্ণভাবে পরিপূর্ণ করা সম্ভব হয়নি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, গ্যারিসন ধর্মান্তরিত হয়েছেন বলা চলে। কারণ ধর্ম হচ্ছে আসলে মনের ব্যাপার, বিশ্বাসের ব্যাপার। ওনি কালেমা শাহাদা’ গ্রহণ করেছেন। ওনি এক আল্লাহ তে বিশ্বাস করেন এবং হযরত মোহাম্মদ (স.) কে রাসূল ও শেষ নবী বিশ্বাস করেন। সুতরাং আমরা বলতে পারি ওনি একজন মুসলিম।’
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে