দেশ-জাতির শান্তি কামনায় মহা পিণ্ডদানের সমাপ্তি
২৮ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:২৩
বান্দরবান: বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মহা পিণ্ডদান উপলক্ষে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের শ্রদ্ধা জানিয়ে নগদ অর্থ, চাল, ফল, মিষ্টি, মোম ও আগরবাতিসহ নানা রকম উপকরণ দান করেছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। দেশ ও জাতির সুখ-শান্তি প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এই মহা পিণ্ডদান অনুষ্ঠান।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় বান্দরবান রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার থেকে তিন শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু একটি বর্ণাঢ্য র্যালি নিয়ে বান্দরবান শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পিণ্ড গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ডদান করেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।
এ সময় পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা, পার্বত্যমন্ত্রীর সহধর্মিনী মে হ্লা প্রু, পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ক্যসাপ্রু, লক্ষ্মীপদ দাশ, পৌর মেয়র শামসুল ইসলামসহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষরা উপস্থিত ছিলেন।
বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে কঠিন চীবর দানের পর ভিক্ষুদের সম্মানে পিণ্ডদান (রান্না করা খাবার) বিতরণ উৎসবের আয়োজন করা হয়। পূণ্য লাভের আশায় শত শত শিশু-কিশোরী ও নারী-পুরুষ সারিবদ্ধভাবে রাস্তায় দাঁড়িয়ে ভিক্ষুদের পিণ্ডদানের পাশাপাশি নানা ধরনের মিষ্টান্ন দান করেন। পিণ্ডদান উৎসব দেখতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি অন্য ধর্মের অনুসারীরাও ভিড় জমান বান্দরবান শহরে।
আষাঢ়ি পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ মন্দিরগুলোতে ভিক্ষুরা বর্ষাবাস পালন করেন। এরপর কঠিন চীবর দান উৎসব শেষে পিণ্ডদান উৎসবের আয়োজন করা হয়ে থাকে।
প্রচলিত আছে গৌতম বুদ্ধ খালি পায়ে হেঁটে হেঁটে বিভিন্ন বৌদ্ধ পল্লীতে ছোয়াং (খাবার) সংগ্রহ করতেন। তারই ধারাবিহিকতায় বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা যুগ যুগ ধরে এই উৎসব পালন করে আসছেন।
বৌদ্ধরা জানান, চরকা ঘুরিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে রাতের মধ্যে সেই সুতায় রঙ লাগিয়ে কাপড় বুনে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধানের জন্য তৈরি করা হয় চীবর (কাপড়)। পরদিন সেই চীবর (কাপড়) ভিক্ষুদের দান করার নামই হচ্ছে কঠিন চীবর দান।
সারাবাংলা/টিআর