স্বতন্ত্র প্রার্থীদের শৃঙ্খলা মানতে বললেন হাছান মাহমুদ
২৯ নভেম্বর ২০২৩ ২২:২৩
চট্টগ্রাম ব্যুরো: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানো আওয়ামী লীগের নেতাদের দলীয় শৃঙ্খলা মানতে বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে সবসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিল এবং থাকে। অনেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিতও হয়। তবে আমাদের দলের যারা পদধারী স্বতন্ত্র প্রার্থী, তাদের অবশ্যই দলীয় শৃঙ্খলা মাথায় রাখতে হবে।’
বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
যথাসময়ে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, দেশে নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। সারাদেশে এখন নির্বাচনি আমেজ বইছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের মনোনয়ন ঘোষণা করেছে এবং তাদের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এর বাইরেও অনিবন্ধিত অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ৭ জানুয়ারি যথাসময়ে দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা যেটা তৈরি হয়েছে, তাতে বিএনপি হতাশ হয়ে গেছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য প্রার্থিতা ঘোষণা, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, মনোনয়নপত্র জমা- এগুলোর মাধ্যমে আসলে পুরো দেশ আজ নির্বাচনি আমেজের মধ্যে আছে। এ ডামাঢোলের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন বর্জনের যে ডাক সেটা হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে। মানুষ এখন নির্বাচনমুখী হয়ে গেছে।’
বিএনপি গতকাল বলেছে কয়েকদিনের মধ্যে সরকারের পতন হবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি এখন দৈব-দূর্বিপাকের উপর নির্ভর করছে। দেশে তারা এ ধরণের ঘোষণা দিয়ে নিজেদের হাস্যকর করে তুলেছে। সরকারের পতন নিয়ে তো বহুদিন ধরে বিএনপি দিনক্ষণ ঘোষণা করে। বিএনপি বলে, অমুক দিন সরকারের পতন হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত বছর ৩০ ডিসেম্বর দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল। এ বছর ২৮ অক্টোবরও দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল। এভাবে ঘোষণাটাই একটি সন্ত্রাসী ঘোষণা। এমন যে তারা কোনো দৈব-দূর্বিপাকের উপর নির্ভর করে বলে, অমুকদিন কিছু একটা হবে। যেমনটা অমুকদিন বৃষ্টি হবে, অমুকদিন বজ্রপাত হবে, অমুক সময়ে সাইক্লোন হবে। বিএনপির ঘোষণাও ঠিক সেরকম।’
বিএনপির পক্ষ থেকে বিদেশি থাবার যে কথা বলা হচ্ছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়েও বিদেশি থাবা ছিল, আমাদের উন্নয়ন-অগ্রগতির সময়েও বিদেশি থাবা আছে। এখন যখন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তখনও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি চক্র নানা ষড়যন্ত্র করছে। তবে আমাদের সঙ্গে সবার সম্পর্ক চমৎকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকারের নীতি হচ্ছে, কারও সঙ্গেই বৈরিতা নয়, সবার সঙ্গে মিত্রতা। সে নীতি নিয়েই আমরা কাজ করি। আমাদের সঙ্গে সব দেশের ভালো সম্পর্ক। আমরা আমাদের সমস্ত উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা নিয়ে দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে চাই।’
এ সময় রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবুল কাশেম চিশতি, বোয়ালখালী উপজেলা চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রাজা, নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার, আবদুল মোনাফ সিকদার, এমরুল করিম রাশেদ, গিয়াস উদ্দিন খান স্বপন, মুজিবুল ইসলাম সরফি ও ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রীর গাড়ি আটকে আইনজীবীদের মিছিল
নির্বাচনী তফসিল বাতিল, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে ও বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবোরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ)। একই সময়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বের হওয়ায় মিছিলের সামনে পড়ে যায় তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের গাড়ি।
আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা পাল্টাপাল্টি স্লোগান ধরতে চাইলে হাছান মাহমুদ বারণ করেন। পরে মিছিলের পেছনে তার গাড়ি কয়েকমিনিটের মতো আটকে ছিল। এরপর মিছিলটি জেলা প্রশাসন চত্বর ঘুরে আদালতে ঢুকলে তথ্যমন্ত্রীর গাড়ি সেখান থেকে চলে যায়। এ সময় গাড়ির সামনে ৫০-৬০ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছিলেন।
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম