রংপুরে নৌকার মনোনয়ন না পেয়ে ৫ আ.লীগ নেতা স্বতন্ত্র
২৯ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:৫৮
রংপুর: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে রংপুরের কয়েকটি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলীয় চার নেতা। তাদের অনুসারীরা বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ বছর নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছিল তিন হাজার ৩৬২টি। এর মধ্যে দল থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ২৯৮ আসনের জন্য ২৯৮ জনকে। বাকি যারা মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে তাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগ নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। ব্যতিক্রম নয় রংপুরও। এখানকার চারটি আসনে পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
রংপুর-১ (গঙ্গাচড়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আসাদুজ্জামান বাবলু। তিনি গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। গঙ্গাচড়া সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
বাবলু ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হন। সে সময় তিনি উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। এ কারণে দল থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়। এবারেও তিনি দলীয় মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হয়েছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজু।
রংপুর-২ (বদরগঞ্জ-তারাগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দুই নেতা— কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার ওরফে বিটু এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সুমনা আক্তার ওরফে লিলি। এরই মধ্যে তারা দুজন স্থানীয় নির্বাচন কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম মো. আহসানুল হক চৌধুরী ওরফে ডিউক চৌধুরী।
বিশ্বনাথ সরকার বলেন, এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন উৎসবমুখর করতে দলীয় প্রধান দলের যে কারও প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। স্থানীয়ভাবে কার জনপ্রিয়তা বেশি, সেটি নেত্রীকে দেখানোর সুযোগ পেয়েছি।
সুমনা আক্তার বলেন, এলাকাকে সমৃদ্ধ ও স্মার্ট হিসেবে গড়তে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছি। নৌকার প্রার্থীকে দেখিয়ে দিতে চাই, কার জনপ্রিয়তা বেশি। এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য দলীয় প্রধানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ ছাড়া রংপুর-৫ (মিঠাপুকুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা কমিটির সদস্য জাকির হোসেন সরকার। নির্বাচনে অংশ নিতে মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদ থেকে গত সোমবার (২৭ নভেম্বর) পদত্যাগ করেছেন জাকির।
প্রায় চার দশক ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে থাকা জাকির হোসেন টানা দুবার দলীয় মনোয়নে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেন। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তবে এ আসনে এবার মনোনয়ন পেয়েছেন টানা পাঁচবারের এমপি ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমানের ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেক রহমান।
জাকির হোসেন সরকার বলেন, নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে অংশ নিতে পদত্যাগ করেছি। মিঠাপুকুরের আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতারা আমার সঙ্গে আছেন। মিঠাপুকুরের আপামর জনসাধারণের সমর্থন আছে আমার সঙ্গে।
অন্যদিকে রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। তার বিপক্ষে স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সিরাজুল ইসলাম সিরাজ।
সারাবাংলা/টিআর
আওয়ামী লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাবলু জাকির হোসেন সরকার টপ নিউজ ডিউক চৌধুরী বিশ্বনাথ সরকার সিরাজুল ইসলাম সিরাজ সুমনা আক্তার লিলি স্বতন্ত্র প্রার্থী