খালাস চান মির্জা আব্বাস, দুদক চায় ১৩ বছরের জেল
৩০ নভেম্বর ২০২৩ ০২:২৪
ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় রায় ঘোষণার জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করা আছে। এই মামলায় খালাস প্রত্যাশা করছেন মির্জা আব্বাস তথা তার পক্ষের আইনজীবীরা। অন্যদিকে মামলায় মির্জা আব্বাসের ১৩ বছরের কারাদণ্ড হবে বলে প্রত্যাশা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমামের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন। দুপুর নাগাদ রায় ঘোষণা হতে পারে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর সারাবাংলাকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৬(২) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি তিন বছরের কারাদণ্ড এবং ২৭(১) ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। আমরা মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুই ধারাতেই আনীত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, দুই ধারা মিলিয়ে তার সর্বোচ্চ ১৩ বছরের কারাদণ্ড সাজা হবে। পাশাপাশি সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত হবে।
এই মামলায় দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয় গত ২২ নভেম্বর। এর মাধ্যমে রায় ঘোষণা বাদে মামলার বিচারিক কার্যক্রমও শেষ হয়। ওই দিনই রায় ঘোষণার জন্য ৩০ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ করে দেন বিচারক।
যুক্তিতর্ক ও সাক্ষ্যপ্রমাণে দুদক মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণের দাবি করলেও ভিন্ন দাবি করছেন মির্জা আব্বাসের পক্ষের আইনজীবী মহি উদ্দিন চৌধুরী। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে আমরা আদালতকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি, মির্জা আব্বাস নির্দোষ। আশা করি, এই মামলা থেকে মির্জা আব্বাস খালাস পাবেন। মির্জা আব্বাস অবশ্যই ন্যায় বিচার পাবেন।
২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সাত কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম রাজধানীর রমনা থানায় মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।
২০০৮ সালের ২৪ মে মামলার তদন্ত শেষে দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তদন্তে মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে চার কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
২০০৮ সালের ১৬ জুন মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন।
এদিকে দুদকের এই মামলায় মির্জা আব্বাস জামিনে থাকলেও গত ৩১ অক্টোবর রাজধানীর শাহজাহানপুর থানার নাশকতার মামলায় গ্রেফতার হন মির্জা আব্বাস। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। ওই পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষ হলে ৫ নভেম্বর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর থেকেই কারাগারে আছেন মির্জা আব্বাস। এর মধ্যে আরও একাধিকবার জামিনের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তবে কাজ হয়নি। সবশেষ গতকাল বুধবারও (২৯ নভেম্বর) তার জামিন আবেদনটি নামঞ্জুর করে দেন আদালত।
সারাবাংলা/এআই/টিআর
জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ দুদকের মামলা দুর্নীতি দমন কমিশন মির্জা আব্বাস সম্পদের তথ্য গোপন সম্পাদের তথ্য গোপন