Wednesday 15 Jan 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চার ঘণ্টা পর ‘মুক্ত’ হলেন শুল্ক গোয়েন্দারা


১৯ মে ২০১৮ ১৭:৫৬

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা : রাজধানীর পান্থপথে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স থেকে জব্দ হওয়া আইফোনগুলো বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে ফেরত নিতে পারবেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। বৈঠকে এমন আশ্বাস দেওয়ার পর অবরুদ্ধ দশা থেকে মু্ক্ত হয়েছেন শুল্ক গোয়েন্দার অতিরিক্ত মহাপরিচালক কাজী জিয়াউদ্দিন ও তার টিম।

শনিবার (১৯ মে) তারা বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে অবৈধ মোবাইল ফোন জব্দ করতে অভিযানে যান। অভিযান শেষে ফেরার পথে দোকান কর্মচারীদের ব্যারিকেডে গাড়িসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন শুল্ক গোয়েন্দারা। তারা প্রায় দুই ঘণ্টা সড়কে আটকা ছিলেন। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যস্থতায় শুল্ক গোয়েন্দার কর্মকর্তা ও মোবাইল ফোনের ব্যবসায়ীরা আলোচনায় বসেন। বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সের আন্ডারগ্রাউন্ডে প্রায় আড়াইঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়।

বৈঠকে শুল্ক গোয়েন্দাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যে মোবাইলগুলো জব্দ করা হয়েছে সেগুলোর পক্ষে কাগজপত্র থাকতে হবে। শুল্ক গোয়েন্দা কার্যালয়ে কাগজপত্র দেখাতে পারলে তাদের আইফোনগুলো ফেরত দেওয়া হবে।

শুল্ক গোয়েন্দাদের শর্ত মেনে নেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা। এরপর দোকান কর্মচারীরা সড়কে তাদের ব্যারিকেড তুলে নেন।

শনিবার সকাল ১১টায় বসুন্ধরা সিটি শপিং মলে অভিযানে ১০০টি আইফোন জব্দ করেন শুল্ক গোয়েন্দারা। অভিযান চলাকালে জব্দ হওয়া মোবাইল ফোনগুলোর পক্ষে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। অভিযান শেষে ফেরার পথে তোপের মুখে পড়েন শুল্ক গোয়েন্দারা।

দোকান কর্মচারীদের তোপের মুখে এডিজি জিয়া উদ্দিন গাড়ি ঘুরিয়ে কারওয়ানবাজার মোড়ের দিক যেতে চাইলে সেখানে ব্যারিকেড দিয়ে বসে পড়েন দোকানের কর্মচারীরা।ব্যারিকেডের মুখে শুল্ক গোয়েন্দা জিয়া উদ্দিন ও তার টিম প্রায় দুই ঘণ্টা আটকা থাকেন। এ সময় দোকান কর্মচারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

দুপুর ৩টায় এডিজির গাড়িসহ বহরে থাকা গাড়িগুলো রাস্তার পাশে সাইড করে রাখেন র‌্যাবের সদস্যরা। যান চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য র‌্যাব সদস্যরা রাস্তার ব্যারিকেড সরিয়ে দেন। ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়ার পর রাস্তায় যান চলাচল শুরু হলেও কিছুক্ষণ পর ব্যবসায়ীরা আবার রাস্তা আটকে দেন।

পরিস্থিতির সমাধানের জন্য বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিকেল ৩টায় আলোচনায় বসেছেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও র‌্যাব-পুলিশের সদস্যরা।

শনিবার সকালে বসুন্ধরা সিটির ১৪ টি দোকানে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দারা। এ সময় দুটি দোকান থেকে ১০০টি আইফোন জব্দ করা হয়। যার বাজারমূল্য ৮০ লাখ টাকা।

এডিজি জিয়া উদ্দিন জানান, এটি শুল্ক গোয়েন্দার নিয়মিত অভিযানের অংশ। গোপন সংবাদ ছিল একটি চক্র শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আইফোন নিয়ে এসে বিক্রি করছে। এখানে অভিযান চালিয়ে ১০০টি আইফোন জব্দ করা হয়।

মোট ১৪ টি দোকানে অভিযান চালালেও আইফোন পাওয়া যায় মাত্র দুইটিতে। মোবাইল গেজেট জোনে মেলে ১০ টি আইফোন, অন্যটি ফোন এক্সচেঞ্জে মেলে ৯০টি আইফোন। বাকি দোকানগুলোতে আইফোন সেট পাওয়া যায়নি। সেখানে শুধু মোবাইল ফোনের মোড়ক পাওয়া গেছে। অভিযান টের পেয়ে ওই মোড়কে থাকা আইফোনগুলো সরিয়ে ফেলা হয় বলে দাবি শুল্ক গোয়েন্দাদের।

শুল্ক গোয়েন্দাদের অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকান কর্মচারী বলেন, ‘বিমানবন্দর থেকে এই আইফোনগুলো আমাদের কাছে আসে। যারা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনে তাদের না ধরে আমাদের হয়রানি করা হচ্ছে। তারা যদি এগুলো বিক্রি না করে তাহলে তো আমরাও কিনতে পারতাম না। যারা ব্ল্যাকে মোবাইল ফোন বিক্রি করে তাদের ধরা উচিত।’

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দার এডিজি জিয়া উদ্দিন বলেন, ‘যেখান থেকেই আইফোন কেনা হোক না কেন তার সঙ্গে বৈধ কাগজপত্র থাকতে হবে। জব্দ হওয়া ১০০টি মোবাইল ফোনের কোনো কাগজপত্র নেই। তাই এগুলো শুল্ক গোয়েন্দা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তারা যদি কাগজপত্র দেখাতে পারে তাহলে মোবাইলগুলো ফেরত দেওয়া হবে।’

বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে মোবাইল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. বাহাউদ্দিন বলেন, ‘শুল্ক গোয়েন্দাদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। উপযুক্ত প্রমাণ দেখিয়ে আমরা আমাদের মোবাইল ফোনগুলো ফেরত নিতে পারব।’

সারাবাংলা/ইউজে/একে

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর