দলের সিদ্ধান্তে সম্মান রেখে স্বতন্ত্র প্রার্থী হইনি: দুর্জয়
২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৯
মানিকগঞ্জ: টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচিত মানিকগঞ্জ-১ আসনের পরপর দুইবারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এ এম নাইমুর রহমান দুর্জয় কেন দলীয় মনোনয়নবঞ্চিত, তা তার কাছে অজানাই রয়ে গেছে। তার নির্বাচনি এলাকা ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে যা দৃশ্যমান। তার পরিবর্তে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামকে। দুর্জয় জানিয়েছেন, দলীয় সিদ্ধান্ত ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান রেখে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর যাতে ক্ষতি না হয়, এর জন্য তিনি স্বতন্ত্র থেকে এবার নির্বাচনে দাঁড়াননি।
সংসদ সদস্য নাইমুর রহমান দুর্জয় বলেন, ‘অবহেলিত ও উন্নয়নবঞ্চিত মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে দেশরত্ন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে পরপর দুইবার দলীয় মনোনয়ন দেন। দুইবারই আমি সরাসরি ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হই। পদ্মা যমুনার ভাঙনে বিধ্বস্ত শিবালয়, দৌলতপুর ও ঘিওর উপজেলায় এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে আমার দুই মেয়াদে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে টানা ১০ বছর মাঠে-ঘাটে কাজ করেছি। এমপি হয়ে কখনও ঢাকায় বসে থাকিনি। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন দিন এলাকায় গিয়ে মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে থাকার চেষ্টা করেছি।’
দুর্জয় বলেন, ‘নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে যেসব যোগ্যতার কথা বলা হয়েছিল আমার বিশ্বাস তার সবগুলোই আমার মধ্যে ছিল। প্রথম শর্ত ছিল এলাকার নেতাকর্মী ও জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক, দুই. করোনার সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো, তিন. দলীয় কর্মসূচি পালন ও বয়স বিবেচনা। আমি মনে করি এসবের কোনো কমতি আমার মধ্যে ছিল না। কারণ রাজনৈতিক জীবনে পদার্পণের আগে আমি একজন ক্রিকেটার ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘ক্রিকেট মাঠে যেমন ভক্তদের মন জয় করেছিলাম তেমনি রাজনৈতিক মাঠে এসেও দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছি। শেখ হাসিনা আমাকে খেলার মাঠ থেকে রাজনৈতিক মাঠে এনেছেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের পরপর দুটি নির্বাচনে আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছিলেন এবং জয়ী হয়ে তার হাতে আসনটি তুলে দিয়েছি।’
মাঠ পর্যায়ে তার কর্মকাণ্ডের সঠিক তথ্য হয়ত শেখ হাসিনার হাতে পৌঁছায়নি। তবে তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এর প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে তার বলে তিনি মনে করেন।
নাইমুর রহমান দুর্জয় বলেন, ‘দলের সভাপতি শেখ হাসিনা যেটি ভালো মনে করেছেন সেটাই করেছেন। অনেক বর্তমান এমপি দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আমাকেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে জেলার নেতাসহ তৃণমূল নেতাকর্মীরা চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু মনে করি, আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হলে দলীয় প্রার্থীর ক্ষতি হয়ে যাবে আর শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে অসম্মান করা হবে। সে কারণে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হইনি। তাছাড়া নৌকার বাইরে অন্য কোনো প্রতীকে প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার মানসিকতা আমার নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার দাদা ব্রিটিশ আমলে ইউনিয়ন পরিষদের দীর্ঘদিন প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এর পর বাবা আবু মো. সাইদুর রহমান জাতির পিতার সঙ্গে রাজনীতি করে ১৯৭৩ সালে এমপি নির্বাচিত হন এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এছাড়া আমার মা দীর্ঘদিন মানিকগঞ্জ জেলা মহিলা লীগের সভাপতি ছিলেন। পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মোট কথা পারিবারিকভাবে আমাদের রক্তে মিশে আছে আওয়ামী লীগ। কাজেই দলের কোনো ক্ষতি হয়, এমন কাজ আমার দ্বারা কখনোই হবে না।’
সারাবাংলা/ইআ