চবি ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে মরিয়া অছাত্র-বহিষ্কৃতরা
৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২:১৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: সংঘাত, সহিংসতা, সাংবাদিক মারধরসহ নানা কারণে প্রশ্নবিদ্ধ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগ। তার ওপর বলতে গেলে প্রায় দুই মাস ধরে নেতৃত্বশূন্য সংগঠনটি। চবি ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মীরই নেই ছাত্রত্ব, আবার অনেকে বহিষ্কৃতও হয়েছেন একাধিকবার। সম্প্রতি কমিটি বিলুপ্তের ঘটনায় অছাত্র ও বহিষ্কৃতরা নতুন কমিটিতে পদ পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
নেতৃত্বে আসতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছেন অনেকে। পদ পেতে স্থানীয় নেতাদের কাছে ধরণা দিচ্ছে নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রের নজরে আসতে ক্যাম্পাসে চালিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন কার্যক্রম। তবে বেশির ভাগ গ্রুপের কার্যক্রম ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের ৫ এর ‘গ’ উপধারা অনুযায়ী, যেকোনো নিয়মিত ছাত্র ছাত্রলীগের কর্মকর্তা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য হতে পারবেন। তবে নিয়মিত ছাত্র না হওয়া সত্ত্বেও চবি ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ পেতে মরিয়া সদ্য বিলুপ্ত কমিটির শীর্ষ নেতারা, যারা বিভিন্ন উপগ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন। আর এইটি সরাসরি ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী।
সম্প্রতি মূল কমিটি বিলুপ্ত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বরাবরই আতঙ্কের নাম ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপগ্রুপগুলো। যার সংখ্যা এখন ১০। চবি ক্যাম্পাসে গত পাঁচ বছরে ১৬২ বার সংঘর্ষ হয়েছে, যার মূলে রয়েছে এসব উপগ্রুপ।
২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। তবে চলতি বছর শাখা ছাত্রলীগের তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী-কর্মকর্তাকে মারধর এবং প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মোশারফ শাহকে মারধরের ঘটনায় বিরক্ত হয়ে কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এদিকে নতুন কমিটি গঠনের জন্য গত ১৪ অক্টোবর পদপ্রত্যাশাীদের জীবন বৃত্তান্ত আহ্বান করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
দুটি বলয়ে বিভক্ত
চবি ছাত্রলীগের উপগ্রুপগুলোর রাজনীতি মূলত দুই বলয়ে বিভক্ত। এদের মধ্যে একটি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। অপরটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুসারী। যদিও শিক্ষা উপমন্ত্রী নওফেল বরাবরই বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অনুসারী থাকার বিষয়টি নাকোচ করেছেন।
পরিসংখ্যান যা বলছে
অন্যান্য বছরের হিসেবে এবার ‘নাছির গ্রুপ’ থেকে সভাপতি ও ‘নওফেল গ্রুপ’ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত হতে পারেন। ইতোমধ্যেই কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে দুটি গ্রুপ থেকে ডজনখানেক নেতা দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন।
এদের মধ্যে সভাপতি পদে ‘নাছির গ্রুপ’ থেকে প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয়, সাইদুল ইসলাম সাঈদ, প্রার্থ প্রতীম বড়ুয়া, সাজিদ মোস্তফা আশফি, শিমুল বিশ্বাস, সাদেক হোসেন টিপু ও সাজ্জাদ আনাম পিনন রয়েছেন আলোচনায়।
সাধারণ সম্পাদক পদে ‘নওফেল গ্রুপ’ থেকে মো. ইলিয়াস, সাদাফ খান, আহসান হাবিব সোপান, নজরুল ইসলাম সবুজ, আরমানুল হক চৌধুরী হৃদয়, সৌমেন দত্ত, আবু বক্কর চৌধুরী ও সাখাওয়াত হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন নেতার আস্থাভাজন হয়ে শীর্ষে নেতৃত্বের দৌড়ে জোর তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় কয়েকজন। যদিও তারা সরব নগরের রাজনীতিতে। আছে বিশাল কর্মীবাহিনীও।
বেশিরভাগই বিতর্কিত
চবি শাখা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসার জন্য যারাই দৌড়ঝাঁপ করছেন তাদের অধিকাংশ নেতা-কর্মীরই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুসারে ছাত্রত্ব নেই। এমনকি নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। ছাত্রত্ব না থাকার পাশাপাশি হত্যা মামলার আসামি, মাদক ব্যবসা ও সেবন, সাইবার বুলিং, ইভটিজিং, টেন্ডারবাজি, ছাত্রদলে সম্পৃক্ততা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বহিষ্কার ও জরিমানা, বিভাগের সমিতির পদ নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, হলের ডাইনিং, ক্যান্টিন ও ক্যাফেটেরিয়ায় ফাও খাওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে এসব পদ প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে।
নতুন কমিটিতে ক্লিন ইমেজধারী, সৎ, যোগ্য ও নেতৃত্বদানে ক্ষমতাসম্পন্ন পদপ্রত্যাশীরা আসবেন, নাকি নেতৃত্বে চলে যাবে অছাত্র, হত্যা মামলার আসামি কিংবা চাঁদাবাজিতে জড়িতদের কাছে— সেসব নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। আবার শীর্ষ নেতৃত্বে অতীতের মতো চট্টগ্রাম অঞ্চলের বাইরে না যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন কর্মীরা। দুই গ্রুপই বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা হিসেবে আঞ্চলিকতাকে প্রাধান্য দিতে পারেন। তবে সবকিছু ছাপিয়ে নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন- সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
আসন্ন কমিটিতে সভাপতি পদপ্রত্যাশীদের অবস্থা
আসন্ন কমিটিতে সভাপতি পদপ্রত্যাশীরা সবাই আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এর মধ্যে আলোচনায় আছেন প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় । খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রদীপ চক্রবর্তী দুর্জয় আগের কমিটিতে সহ-সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। পড়াশোনায় এখনো স্নাতক শেষ করতে না পারলেও খুন, মারামারি, হল দখলের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আলোচিত তাপস হত্যা মামলার আসামিও তিনি। বগিভিত্তিক গ্রুপ ‘ভাসির্টি এক্সপ্রেস’র নেতৃত্ব দেন তিনি।
শীর্ষপদের এ নেতৃত্বের দৌঁড়ে রয়েছেন সাইদুল ইসলাম সাঈদ। তিনি বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। সে হিসেবে তার ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার কথা ২০১৭ সালে। কিন্তু এখনো তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র! বর্তমানে বগিভিত্তিক গ্রুপ ‘সিক্সটি নাইন’র নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০১৬ সালে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছিলেন।
এ ছাড়া আসন্ন কমিটিতে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ মোস্তফা আশফি। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক রাজনীতি তিনি সক্রিয় ছিলেন না, নেই কোনো বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। আশফি ১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। মাস্টার্স শেষ করেছেন ২০২২ সালে। তবে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের আপন ভাগিনা হওয়ায় নেতৃত্বে দৌড়ে তাকে এগিয়ে রাখছেন অনেকে।
সভাপতি পদ পেতে মরিয়া সাবেক সহ-সভাপতি সাদেক হোসেন টিপুও। ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। বর্তমানে তার ছাত্রত্ব নেই। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ঠিকাদারকে মারধরের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সাবেক নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক সাজ্জাদ আনাম পিননও আছেন শীর্ষ নেতৃত্বের দৌড়ে। সূর্যসেন হল ও এপিটাফ উপ-গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে গ্রুপিং ও মারামারির অভিযোগ রয়েছে।
সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের অবস্থা
আসন্ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের সবাই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এর মধ্যে সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াস সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে মরিয়া। তিনি ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। গত কমিটিতে নিজের কর্মীদের অনেককে পদবঞ্চিত করার অভিযোগে তাকে ‘মাদক কারবারি’ আখ্যা দিয়ে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিলেন বগিভিত্তিক গ্রুপ ‘বিজয়’র পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এরপর বিজয় গ্রুপ দুই অংশে বিভক্ত হলেও বর্তমানে আলাওল ও এফ রহমান হল দখলে রেখেছেন ইলিয়াস। তার বিরুদ্ধে হল দখল, মারামারি ও গ্রুপিংয়ের অভিযোগ রয়েছে।
নেতৃত্বের দৌড়ে আলোচনায় আছেন সাবেক সহ-সভাপতি সাদাফ খান। আইন বিভাগের ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। আমানত হলের সিএফসি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। ২০১৭ ও ২০২১ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে দুই দফা তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছিল।
সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে দৌড়ঝাঁপ করছেন সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম সবুজ। ক্যাম্পাসের স্থানীয় হিসেবে পরিচিত মুখ তিনি। ১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। রেজিস্ট্রার দফতরের এস্টেট শাখা, প্রকৌশল দফতর ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দফতরে গিয়ে সিনিয়র কর্মকর্তাদের হুমকি-ধামকি দেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। এমনকি গত ৫ এপ্রিল সবুজের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় স্টোরে সম্পদ বিনষ্টের উদ্দেশ্যে হামলা চালানোর অভিযোগ তোলে বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতি।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদের দৌড়ে আলোচনায় আছেন ইতিহাস বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবিব সোপান। আব্দুর রব হল তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সাবেক সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের আস্থাভাজন হিসেবে ক্যাম্পাসে তিনি পরিচিত। গ্রুপিং ও মারামারির একাধিক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে, ছাত্রলীগের কোনো পদে না থেকেও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে আছেন সাখাওয়াত হোসেন। নিজের অবস্থান জানান দিতে নিয়মিত দেখা করছেন নেতাদের সঙ্গে। বিজয়’র সোহরাওয়ার্দী হল নিয়ন্ত্রণ করেন তিনি। মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার বেশিরভাগ কর্মী এখন তার নিয়ন্ত্রণে। ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। চলতি বছর সেশনটি স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। সবচেয়ে জুনিয়র হিসেবে পদ পেতে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন সাখাওয়াত। হলের রুম দখল ও মারামারির অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া নেতৃত্বের দৌড়ে আছেন সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আরমানুল হক চৌধুরী হৃদয়। তিনি ১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে তেমন পরিচিত না হলেও নগরের রাজনীতিতে সক্রিয় তিনি। হৃদয়ের বাবা মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ছিলেন। ২০০১ সালে তার বাবা জামায়াত-বিএনপির হামলায় নিহত হন।
পদ প্রত্যাশীরা যা বলছেন
জানতে চাইলে প্রদীপ চক্রবর্তী দূর্জয় সারাবাংলাকে বলেন, ‘সংগঠনের নীতিমালা অনুযায়ী পদপ্রত্যাশী সবাই সিভি জমা দিয়েছেন। আমরা আশাবাদী ছিলাম যে, নভেম্বরের মধ্যে হয়তো কমিটি দিয়ে দেবে। কিন্তু কমিটি দিচ্ছে না। এর মূল কারণ হতে পারে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের কারণে কমিটি গঠন কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে হয়তো।’
তিনি বলেন, ‘এখানে গ্রুপিং রাজনীতির আধিপত্য থাকার কারণে নির্দোষ অনেকের নামেও মামলা দেওয়া হয়। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ যে কেউ দিতে পারে। আমার জানা মতে, এখানে আদালতে রায়ে এখনও কেউ সাজাপ্রাপ্ত হয়নি। আপনারা জানেন রাজনীতি করলে মামলা থাকেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে আমাদের নেতা আ জ ম নাছির উদ্দিন সবাই কিন্তু বিভিন্ন ষড়যন্ত্রমূলক মামলার আসামি হয়েছেন।’
নিজের ছাত্রত্ব নিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে অছাত্র বলে কোন শব্দ নেই। যারা কোনো পড়াশোনা করেনি তাদের বলা হয় অছাত্র। যাদের মাস্টার্স শেষ তারা কিন্তু বিভিন্নভাবে ভর্তি হয়ে ছাত্রত্ব টিকিয়ে রেখে অনিয়মিত ছাত্র হিসেবে থাকতে পারে। এখানে যারা কমিটিতে পদ প্রত্যাশী সবাই কিন্তু অনিয়মিত ছাত্র।’
কমিটি নিয়ে মির্জা খবির সাদাফ খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের কমিটি কবে দেবে সে বিষয়ে তো আমরা কিছু জানি না। এটা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগে যারা আছেন সাদ্দাম ভাই, ইনান ভাই তারা বলতে পারবেন। আমাদের সিভি জমা দিতে বলা হয়েছিল আমরা জমা দিয়েছি। যারা ক্লিন ইমেজধারী, ছাত্রদের পক্ষে কাজ করবে, দেশের জন্য কাজ করবে তাদেরকেই ছাত্রলীগের কমিটিতে নিয়ে আসা উচিত বলে আমি মনে করি।’
এদিকে, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী পদপ্রত্যাশী আরেক নেতা আহমেদ সোপান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালে মাস্টার্স শেষ করেছি। আমি এখন শারীরিক শিক্ষা বিভাগের অধীন বিপিএড কোর্সে ভর্তি আছি। তাই বলতে পারি আমার ছাত্রত্ব আছে।’
কেন্দ্র যা চায়
চবি ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে কথা বলতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রাখা ও শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতের দায়িত্ব ছাত্র রাজনীতির। সাম্প্রতিক চবিতে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত এবং আমাদের দলীয় শৃঙ্খলা ও আদর্শের পরিপন্থী। ইতিবাচক ছাত্র রাজনীতি আমাদের প্রত্যাশা। সেটার ব্যত্যয় হওয়ায় আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।’
নতুন নেতৃত্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জীবন বৃত্তান্ত চেয়েছি। আমরা এখন বিশ্লেষণ করব। দলের বিভিন্ন দুঃসময়ে যারা সংগঠনের জন্য কাজ করেছেন তাদেরকেই আমরা বেছে নেব। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। অভিযুক্ত কাউকেই কমিটিতে নেওয়া হবে না।’
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করতে আমরা শিগগিরই নতুন কমিটি দেব। স্মার্ট, মেধাবী, দক্ষ নেতৃত্ব দেখে গঠনতন্ত্রের আলোকে কমিটি করা হবে।’
সারাবাংলা/এমএ/পিটিএম