নেট শূন্য লক্ষ্য অর্জনে পরমাণু শক্তির ব্যবহার বাড়াতে চায় ২২ দেশ
৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ১০:৫২
২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে কমিয়ে আনার লক্ষ্য অর্জনে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার তিনগুণ বাড়াতে চায় ২২টি দেশ। জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৮ এ এমন একটি ঘোষণা দিয়েছে এসব দেশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ঘানাসহ ২২টি দেশের অনুমোদিত ঘোষণায় বলা হয়েছে, কার্বন নির্গমন শূন্যের কোঠায় কমিয়ে আনতে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে পারমাণবিক শক্তি মূল ভূমিকা পালন করবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে চলছে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৮। সম্মেলনের তৃতীয় দিন শনিবার (২ ডিসেম্বর) দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেয়।
জীবাশ্ম জ্বালানির পরিচ্ছন্ন বিকল্প হিসেবে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক আছে। বিশেষ করে ২০১১ সালে জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক সংকটের পর পরিবেশের নিরাপত্তা এবং পারমাণবিক বর্জ্য নিষ্পত্তির বিষয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। তবুও এসব দেশ মনে করে, কার্বন নিঃসরণ কমাতে পারমাণবিক শক্তির কোনো বিকল্প নেই।
দুবাইয়ে কপ ২৮ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক দূত জন কেরি বলেন, আমরা এই যুক্তি তৈরি করছি না যে পারমাণবিক শক্তি অন্য সব শক্তির উৎসের জন্য একেবারে সুস্পষ্ট বিকল্প। কিন্তু আমরা জানি, কারণ বিজ্ঞান এবং তথ্য ও প্রমাণের বাস্তবতা আমাদের বলে যে, আপনি পারমাণবিক ছাড়া ২০৫০ সালে নেট শূন্য কার্বন নিঃসরণ লক্ষ্যে পৌছাতে পারবেন না। এগুলো শুধু বৈজ্ঞানিক বাস্তবতা। এর সঙ্গে কোনো রাজনীতি জড়িত নয়, কোনো আদর্শ জড়িত নয়।
ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরকারী অন্যান্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, বুলগেরিয়া, কানাডা, চেক প্রজাতন্ত্র, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, মলদোভা, মঙ্গোলিয়া, মরক্কো, নেদারল্যান্ডস, পোল্যান্ড, রোমানিয়া, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, সুইডেন, ইউক্রেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ২০২০ সালকে ভিত্তি বছর ধরে ২০৫০ সালের মধ্যে পারমাণবিক শক্তির ব্যবহার তিনগুণ বাড়ানো হবে।
আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে বৈশ্বিক পারমাণবিক সক্ষমতা ছিল ৩৭৫ গিগাওয়াট। স্বাক্ষরকারী দেশগুলো বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক চুল্লির উন্নয়ন এবং নির্মাণে সহায়তা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে। তারা বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ছোট পারমাণবিক মডুলার এবং অন্যান্য উন্নত চুল্লিতে ব্যাপক হারে বিনিয়োগ করবে।
ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করা দেশগুলো বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক উন্নয়ন সংস্থা এবং ব্যাংকে জ্বালানি খাতের ঋণ নীতিতে পারমাণবিক শক্তি অন্তর্ভুক্ত করতে উৎসাহিত করবে।
ঘোষণাটিতে বিদ্যমান চুল্লিগুলোর জীবনকাল বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নতুন বেসামরিক পারমাণবিক শক্তির জন্য উদ্যোগ নেওয়া দায়িত্বশীল দেশগুলোকে সাহায্য ও সমর্থন করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
এই ঘোষণায় যোগ দেওয়ার জন্য অন্যান্য দেশকেও আহ্বান জানিয়েছে স্বাক্ষরকারী ২২ দেশ। অংশগ্রহণকারীরা বলেছে, তারা প্রতি বছর বৈঠকের মাধ্যমে এই চুক্তির অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে।
সারাবাংলা/আইই