Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পটুয়াখালীর ‘চিংগরিয়া খাল’ উদ্ধারে হাইকোর্টের রুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:১৫

ঢাকা: পটুয়াখালী কলাপাড়া পৌরসভার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত ‘চিংগরিয়া খালের’ বন্দোবস্ত বাতিলের বিষয়ে অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ছয় মাসের মধ্যে চিংগরিয়া খালের এসএ ৪৪১, ৪৪৩, ৫২৬ এবং ৮৪২ নং দাগে অবস্থিত ভূমির সব তথ্যসহ একটি পরিপূর্ণ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) জনস্বার্থে দায়ের করা রিটের (মামলা নং ১৪৭২৯/২০২৩) প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে এস. এ. ৪৪১, ৪৪৩, ৫২৬ এবং ৮৪২ নং দাগে অবস্থিত ‘চিংগরিয়া খাল’র ৫.৪৬ একর ভূমি উদ্ধারের এবং এই খালের জায়গা ব্যক্তি বিশেষের নামে দেওয়া বন্দোবস্ত বাতিলের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত এবং জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।

পাশাপাশি চিংগরিয়া খালের ৫.৪৬ একর খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডকৃত ভূমি উদ্ধারের এবং বেআইনিভাবে খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডকৃত ভূমির শ্রেণি নাল শ্রেণিতে রূপান্তরিত ভূমি রেকর্ড সংশোধনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

ভূমি সচিব, পরিবেশ সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি), ভূমি জরিপ ও রেকর্ড অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি), পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ভিসি), পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি), পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (ডিডি) এবং কলাপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে বেলার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ আলী এবং তাকে সহায়তা করেন করেন আইনজীবী এস. হাসানুল বান্না। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার অর্ন্তগত কলাপাড়া পৌরসভার ভেতর দিয়ে একটি খাল প্রবাহিত হয়েছে যা স্থানীয়ভাবে ‘চিংগরিয়া খাল’ নামে পরিচিত। খালটি কলাপাড়ার খেপুপাড়া মৌজায় আন্ধারমানিক নদী হতে উৎপন্ন হয়ে কলাপাড়া পৌরসভার ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অংশবিশেষের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রায় ৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম শেষে একই মৌজার চাকামইয়া-নিশানবাড়িয়া নদীর (দোন) সঙ্গে মিশেছে।

কলাপাড়া ভূমি অফিসের তথ্যানুযায়ী, খালটির মূল স্রোতধারা খেপুপাড়া মৌজার ৪৪৩, ৫২৬ ও ৮৪২ নং দাগের উপর দিয়ে প্রবাহিত। খালটি কলাপাড়া পৌরসভার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র খাল। ৫০০০ পৌরসভাবাসীর কাছে এ খালের গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষিকাজ, পানি নিষ্কাশন, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার্য পানির একমাত্র উৎস এ খালটি। কলাপাড়া পৌরসভাটি উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষাকালে ও জলোচ্ছ্বাসের সময় সমুদ্রের লোনা পানিতে এখানকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ডুবে যায়। লবণাক্ত সেই পানি এ খাল দিয়েই দ্রুত নিষ্কাশিত হয়ে থাকে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ খালটি কলাপাড়া উপজেলা ভূমি অফিস খাল হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি নাল হিসেবে পরিবর্তন করে। পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসক উল্লিখিত খালের অংশবিশেষ ব্যক্তিবিশেষের নিকট দীর্ঘমেয়াদে বন্দোবস্ত প্রদান করে। বন্দোবস্ত গ্রহিতাগণ খালের অংশে বাধঁ দিয়ে মাছ চাষ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় খাল ভরাট করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছে। ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ এ খাল সংকীর্ণ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষি নির্ভর জনগোষ্ঠী। জলাবদ্ধতায় ফসল ফলাতে পারছে না শত শত একর জমির মালিকরা। খালের ভূমি রেকর্ড সংশোধন ও শ্রেণি পরিবর্তন এবং বেআইনিভাবে প্রদানকৃত বন্দোবস্ত বাতিলসহ খালটি যথাযথ সংরক্ষণে বেলা এই রিট দায়ের করে।

মামলায় ভূমি সচিব, পরিবেশ সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), ভূমি জরিপ ও রেকর্ড অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি), পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক (ভিসি), পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি), পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক এবং কলাপাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিবাদী করা হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম

চিংগারিয়া খাল হাইকোর্ট


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর