Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফজলে হোসেন বাদশার আয় বেড়েছে ৭ গুণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৩১

রাজশাহী: রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। ১৪ দল থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত ওয়ার্কার্স পার্টির এই নেতা তিনবারের সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালে এই আসন থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন তিনি। ২০১৮ সালে বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। গত তিনবারের চেয়ে এবার আয় ও সম্পদ বেড়েছে বামপন্থী এই নেতার। নির্বাচন কমিশন অফিসে দাখিলকৃত হলফনামা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

২০০৮ সালে ফজলে হোসেন বাদশার বার্ষিক আয় ছিল ৩ লাখ ২৮ হাজার ৯১ টাকা। ২০১৮ সালে তা গিয়ে দাঁড়িয়েছিল ৭ লাখ ৫০০ টাকায়। ২০২৩ সালে এসে তার বার্ষিক আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭ লাখ ৬৭ হাজার ১৯৭ টাকা।

বিজ্ঞাপন

তিনি হলফনামায় আয়ের বিবরণও দিয়েছেন। তার ব্যবসা সোনালী সংবাদ থেকে আয় হয় দুই লাখ ৫ হাজার টাকা। একটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে আসে ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। রাজশাহী নগরীর হড়গ্রামে অবস্থিত বহুতল ভবন খন্দকার মার্কেট ও কমপ্লেক্স থেকে আসে ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৮২৩ টাকা। সংসদ সদস্য হিসেবে ভাতা পান ১৭ লাখ ৯৩ হাজার ৮৩ টাকা। সংসদ হিসেবে পরিতোষ ভাতা পান ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয় ও ব্যাংক আমানত আছে ১ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার ২৪৫ টাকা।

ফজলে হোসেন বাদশার ২০০৮ সালে তার নিজের কাছে নগদ টাকা ছিল ১৫ হাজার। আর ব্যাংকে জমানো ছিল ৮ লাখ ৩৩ হাজার ৪৬০ টাকা। ২০১৩ সালে নগদ টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ লাখ ২০ হাজার ৫৯১। এ ছাড়া ব্যাংকে জমা ছিল ২৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬০২ টাকা। ২০১৮ সালে নগদ ছিল ১৫ লাখ ১৮ হাজার ৬৮৬ টাকা। আর ব্যাংকে জমানো ছিল ২৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮০০ টাকা। এবার তা আরও বেড়েছে। তিনি হলফনামায় নগদ টাকা দেখিয়েছেন ২৬ লাখ ১৩ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা আছে ১ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়াও একটি জিপ গাড়ির মূল্য দেখিয়েছেন ৭০ লাখ টাকা। তার নামে ৫ ভরি সোনা ও স্ত্রীর নামে ১০ ভরি সোনা আছে। ইলেকট্রনিক্স পণ্য আছে আড়াই লাখ টাকার। আসবাবপত্র আছে দেড় লাখ টাকার।

বিজ্ঞাপন

২০১৮ সালে স্ত্রীর কাছে ৪০ হাজার টাকা দেখিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া স্ত্রী তাসলিমা খাতুনের নামে ৮ লাখ টাকার পোস্টাল সেভিংসও দেখিয়েছেন তিনি। তবে এইবার স্ত্রীর নামে সোনা বাদে আর কিছুই দেখাননি।

রাজধানীর উত্তরায় তৃতীয় প্রকল্পে ৩৭ লাখ ২৭ হাজার ৭৩৬ টাকা মূল্যের ৫ কাঠা অকৃষি জমি নিজের নামে দেখান বাদশা। নগরীর হড়গ্রাম বাজারের খন্দকার মার্কেট কমপ্লেক্সের অংশীদার হিসেবে ৬০ লাখ টাকার মালিকানা দেখিয়েছেন তিনি। তার নামে তিনটি মামলা ছিল, যার সবগুলো থেকে তিনি খালাস পেয়েছেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য ফজলে হোসেন বাদশার মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

রাজশাহী-২ থেকে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন মহানগর কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। এই আসন থেকে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতিও নিচ্ছেন তিনি। মহানগর আওয়ামী লীগের এই নেতার বছরে আয় ১২ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। নির্বাচন কমিশনের দাখিলকৃত হলফনামায় তিনি আয়ের উৎস দেখিয়েছেন।

হলফনামায় তিনি দেখান, কৃষিখাত থেকে আয় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বাড়ি ভাড়া পান ৩ লাখ টাকা। ব্যবসা থেকে আয় করেন ৩ লাখ ১৫ হাজার টাকা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও গৃহসম্পত্তি থেকে আয় করেন ২ লাখ ১০ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পদের বিবরণে তিনি উল্লেখ করেন, নগদ টাকা আছে ১৬ লাখ ৯ হাজার ৫০০ টাকা। স্ত্রীর কাছে আছে ১৩ লাখ ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ৬ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে আছে ৫ ভরি সোনা। ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্রের মূল্য দেখিয়েছেন ২০ হাজার টাকা।

এই প্রার্থীর কৃষি জমি আছে ২০ বিঘা। স্ত্রীর নামে আছে ১২ বিঘা । অকৃষি জমি আছে ৩ বিঘা, স্ত্রীর নামে ২ বিঘা। প্রার্থীর নিজের নামে আছে একটি চারতলা ভবন। যার মূল্য দেখিয়েছেন ৩০ লাখ ২ হাজার ৭০০ টাকা। এছাড়া স্ত্রীর নামে আছে দুটি বাড়ি। বাড়ি দুটির মূল্য উল্লেখ করেননি। এছাড়াও একটি ব্যাংকে ৫ লাখ টাকা ঋণ আছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

রাজশাহী-২ আসন থেকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের মনোনীত প্রার্থী আবদুল্লাহ আল মাসুদ শিবলী। পেশায় ব্যবসা এই প্রার্থীর বছরে আয় ৩ লাখ টাকা। নগদ টাকা আছে ৫০ হাজার আর স্ত্রীর কাছে আছে ২০ হাজার। স্ত্রীর নামে আছে ১৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও ১৫ ভরি সোনা। ইলেকট্রনিক্স পণ্য আছে ১ লাখ ৮৬ হাজার টাকার। আসবাবপত্র আছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকার। কৃষিজমি আছে প্রায় ১৮ শতক যার মূল্য ২০ লাখ টাকা। অকৃষি জমি আছে ৫ দশমিক ৭৮ শতক, যার মূল্য দেওয়া আছে ১৫ লাখ টাকা। ৩ শতকের উপরে একটি দালান, যার মূল্য দেখিয়েছেন ৩০ লাখ টাকা।

জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন পেশায় ব্যবসায়ী। স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন এই প্রার্থীর বছরে আয় ৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে অর্ধেক আসে কৃষি থেকে। নগদ আছে ৮০ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক্স পণ্য আছে লাখ টাকার। ২ লাখ ২০ হাজার টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল আছে তার। কৃষি জমি আছে সাড়ে ৪ বিঘা। অকৃষি জমি আছে ১ দশমিক ২ শতক।

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী ইয়াসির আলিফ বিন হাবিবের শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএ। পেশায় ব্যবসায়ী এই প্রার্থীর বছরে আয় ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। নগদ আছে ১৫ লাখ টাকা। আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য আছে সাড়ে ৩ লাখ টাকার। যৌথ মালিকানায় কৃষি জমি আছে ৬০ লাখ টাকার মূল্যের।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী কামরুল হাসান পেশায় ব্যবসায়ী। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রার্থীর বছরে আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। নগদ টাকা আছে ১ লাখ। একটি মোটরসাইকেল আছে, যার মূল্য দিয়েছেন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ২০ ভরি সোনা বিবাহসূত্রে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র আছে ৪ লাখ টাকার।

রাজশাহী-২ আসনের বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনোনীত প্রার্থী মারুফ শাহরিয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ পাস। পেশায় চাকরজীবী এই প্রার্থীর বছরের আয় আড়াই লাখ টাকা। নগদ টাকা আছে সাড়ে ৭ লাখ। ব্যাংকে আছে আড়াই লাখ টাকা। এছাড়াও বিয়েতে উপহার হিসেবে পেয়েছেন ৫ ভরি সোনা। আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স পণ্য আছে চার লাখ টাকার। তবে কোনো স্থাবর সম্পদ দেখাননি তিনি।

সারাবাংলা/পিটিএম

ওয়ার্কার্স পার্টি টপ নিউজ ফজলে হোসেন বাদশা রাজশাহী-২

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর